মুখ ফিরিয়েছে স্বামী, পেটের দায়ে সন্তানদের থেকে আলাদা থাকতে হয় বাস্তবের মিসেস চ্যাটার্জীকে

সদ্যই মুক্তি পেয়েছে রানী মুখার্জী (Rani Mukherjee) অভিনীত ছবি ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ (Mrs Chatterjee Vs Norway)। এই ছবিতে উঠে এসেছে বাস্তবের সাগরিকা চ্যাটার্জী (Sagarika Chatterjee) নামের একজন মায়ের জীবনের আসল ঘটনা যার দুই কোলের সন্তানকে ছিনিয়ে নিয়েছিল নরওয়ে প্রশাসন। ছবিতে রানীর অভিনয়ে চোখ ভিজেছে দর্শকদের। দীর্ঘ আইনি লড়াই লড়ে সাগরিকা কীভাবে তার ছেলেমেয়েদের ফিরে পেয়েছিলেন সেই খবর তো কম বেশি সকলেই জানেন এখন।

কিন্তু ছেলেমেয়েকে ফিরে পাওয়ার পরেও বাস্তবের মিসেস চ্যাটার্জীকে কী দুর্বিসহ দিন কাটাতে হচ্ছে তা জানলে চোখ ভিজে যাবে আবারও। অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্য, দুই সন্তানকে ফিরে পাওয়ার পর নরওয়ে থেকে দেশে ফিরে আসেন সাগরিকা। কিন্তু ততদিন স্বামী অনুরুপের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভেঙেছে। বর্তমানে একাই থাকেন সাগরিকা। তার ছেলেমেয়েরাও মায়ের সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ পান না।

MRS CHATTERJEE VS NORWAY

যে সন্তানদের ফিরে পাওয়ার জন্য একা একজন মা বিদেশের কঠোর আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, সেই সন্তানদের থেকে দেশের মাটিতে কেন আলাদা থাকতে হচ্ছে সাগরিকাকে? আসলে পেটের দায় সবথেকে বড় দায়। যা মায়ের থেকে সন্তানদের আলাদা করে দিয়েছে আবারও। সম্প্রতি এই সময় ডিজিটালের কাছে এই বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন সাগরিকা।

সাগরিকা বলেন ছেলেমেয়ে দুটোকে মানুষ করার জন্য তার স্বামী নাকি একটা টাকাও তাদের দেন না। তিনি নরওয়ে থেকে দেশে ফিরেও আসেননি। তবে সাগরিকা তার দুই সন্তানকে নিয়ে চলে এসেছিলেন এই দেশে। কিন্তু এখানে আসার পর নতুন করে তার জীবন সংগ্রাম শুরু হয়। সেটা আগের তুলনাতে ছিল আরও কঠিন।

MRS CHATTERJEE VS NORWAY

সাগরিকা বিয়ের আগে এমবিএ পাস করেছিলেন। দেশে ফিরে এসে তিনি তার বাবা-মায়ের কাছে ওঠেন। এরপর হঠাৎ করে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবার চিকিৎসার খরচ, ছেলেমেয়েদের স্কুলের খরচ, খাওয়া-পরার টাকা জোগাড় করতে তিনি চাকরি নেন। কিন্তু তাকে কাজের সূত্রে কলকাতার বাইরে থাকতে হয় এখন। তার ছেলেমেয়েরা রয়েছে কলকাতাতেই।

ANURUP AND SAGARIKA BHATTACHARYA

সাগরিকা জানিয়েছেন চার চারটে প্রাণ এখন তার মুখের দিকে তাকিয়ে। তাই তাকে শহরের বাইরে চাকরি নিতে বাধ্য হতে হয়। তিনি শুরুতে নয়ডার একটি অফিসে কাজ করছিলেন। আর এখন তার নতুন ঠিকানা হয়েছে পুনে। ঐশ্বর্য এবং অভিজ্ঞান দাদু দিদিমার কাছে বেড়ে উঠছে। সাগরিকা জানিয়েছেন দেশে ফিরে আসার পর তার জীবন সংগ্রামের দ্বিতীয় অধ্যায় নিয়ে তিনি আরেকটি বই লিখবেন।