ছোটবেলাটা কেটেছে খুবই কষ্টে! মা-বাবাকে নিয়ে বলতে গিয়ে দিদি নাম্বার ওয়ানে (Didi No 1) হাউ হাউ করে কেঁদেই ফেললেন রচনা ব্যানার্জী (Rachna Banerjee)। এতদিন এই মঞ্চে বিভিন্ন প্রতিযোগীর জীবনের স্ট্রাগলের গল্প শুনেছেন সবাই। এবার রচনাও শেয়ার করলেন তার জীবনের অজানা কিছু গল্প। সেসব শুনে দর্শকদেরও চোখে এল জল।
সম্প্রতি একটি এপিসোডে নিজের জীবনযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে রচনার চোখ বেয়ে নামলো জল। সেই এপিসোডে প্রতিযোগী হিসেবে হাজির ছিলেন জোজো। জোজোর সঙ্গে রচনার অনেক দিনের বন্ধুত্ব। দিদি নাম্বার ওয়ানের মঞ্চে ঝুমঝুম ব্যানার্জী থেকে রচনা ব্যানার্জী হয়ে ওঠার গল্প শুনতে চেয়েছিলেন জোজো। তখন রচনা বলেন, “খুব ছোট্ট একটা ফ্ল্যাটে মানুষ করেছিল আমার বাবা-মা। বড় স্বপ্ন ছিল বাবা-মাকে একটা ভালো ঘর করে দেব। যখন ফ্ল্যাটটা কিনলাম বাবা মার মুখে যে হাসিটা দেখেছিলাম, মনে হয়েছিল কষ্টটা সার্থক।”
এই কথা বলতে বলতেই গলা ধরে আসে রচনার। তারপর কেঁদে ফেলেন তিনি। তাকে সামলানোর জন্য তাড়াতাড়ি ছুটে যান জোজো। রচনার বাবা রবীন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে মা এবং ছেলেকে নিয়ে রচনার ছোট্ট সংসার। তবে প্রতি মুহূর্তে বাবার অভাব টের পান তিনি। বাবা রচনা জীবনের সবটুকু অংশ জুড়েছিলেন। রচনার জীবনের প্রত্যেকটা পর্যায়ে তিনি তার বাবাকে পাশে পেয়েছিলেন।
রচনা ব্যানার্জীর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। সাউথ সিটি কলেজে পড়ার সময় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি জয়ী হন। তারপর বাংলা সিনেমার দরজা খুলে যায় তার জন্য। ততদিন পর্যন্ত তার নাম ছিল ঝুমঝুম ব্যানার্জী। রচনা যখন বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে আসেন তখন সুখেন দাস তার নতুন নাম রাখেন রচনা। ১৯৯৩ সালে ‘দান প্রতিদান’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রচনা। রচনা যখন অভিনয় করার জন্য ওড়িশা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পাড়ি দেন তখন তার বাবাও চাকরি ছেড়ে মেয়ের সঙ্গে চলে যান। এত বড় স্যাক্রিফাইস তিনি করেছিলেন শুধু মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করবেন বলে।
আরও পড়ুন : ৫০ এও ২০ এর জেল্লা! যৌবন ধরে রাখতে এই ‘বিউটি ড্রিঙ্কস’ পান করেন রচনা ব্যানার্জী
আরও পড়ুন : প্রথম বিয়ে টেকেনি, দ্বিতীয় বিয়ে রচনার! কী ঘটেছিল সেই দিন?
রচনা এরপর বাংলা ছবির পাশাপাশি হিন্দি, তেলেগু, তামিল, কন্নড় এবং ওড়িয়া ছবিতেও কাজ করেন। ক্রমে তিনি নায়িকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। তার ব্যক্তিগত জীবনে উত্থান পতন অব্যাহত ছিল। তিনি প্রথমে বিয়ে করেন সিদ্ধান্ত মোহান্তিকে। সেই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর তিনি বিয়ে করেন প্রবাল রায়কে। ছেলের জন্মের পর রচনা সিনেমা ছবির গান। সঞ্চালিকা হিসেবে পা রাখেন টিভি দুনিয়াতে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত জি বাংলার দিদি নাম্বার ওয়ানের মুখ তিনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সাংসদ হিসেবে জয়লাভ করার পর বর্তমানে রাজনীতিতেও সফলতার সঙ্গে এগোচ্ছেন রচনা।
View this post on Instagram