পশ্চিমবঙ্গে বাল্যবিবাহ আটকাতে এবং মেয়েদের স্কুলছুট রুখে দিয়ে উচ্চশিক্ষিত করে তুলতে বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠনের পর বেশ কিছু জনমুখী প্রকল্প নিয়েছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল কন্যাশ্রী প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় স্কুলে এবং কলেজে অবিবাহিত ছাত্রীরা পড়াশোনা করার জন্য সরকারি সহায়তা পাবেন। এবার সেই নিয়মে এক বিরাট পরিবর্তন এলো।
কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে বড় পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের
৮ই মার্চ ২০১৩, পশ্চিমবঙ্গে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছিল মমতা সরকার। মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক এবং কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীরা এতে সরাসরি সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছিলেন। ২০১৩ থেকে ১৪ সালে স্কুলে পড়ুয়ারা ৫০০ টাকা করে পেতেন যা বর্তমানে ১০০০ টাকা হয়েছে। এছাড়া এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় এই প্রকল্পের আওতায়। এতদিন আবেদন করলেই মেয়েরা কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন। কিন্তু এবার আর তা হবে না। বদলে গেল কন্যাশ্রী প্রকল্পের নিয়ম।
কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার?
এবার থেকে ছাত্রীরা আবেদন করলেই আর কন্যাশ্রীর টাকা পাবেন না। ওই ছাত্রী কন্যাশ্রীর টাকা পাওয়ার যোগ্য কিনা তা জানার জন্য তার ব্যাঙ্কের ডিটেলস যাচাই করে দেখা হবে। স্কুল থেকে আবেদন করলে তবেই তার মঞ্জুরের জন্য জেলা স্তরে পৌঁছাবে। আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক একাউন্টের নম্বর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে স্কুলের কাছে জানতে চাওয়া হবে এই অ্যাকাউন্ট নম্বর ওই ছাত্রীর কিনা।
কেন এমন কঠোর নিয়ম?
পশ্চিমবঙ্গের নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই এই মর্মে জেলাগুলিতে নোটিশ গিয়েছে। এও জানানো হয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদনে জালিয়াতি আটকাতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদনে বহু জালিয়াতি হয়েছে। সেসব আটকে প্রকৃত সহায়তা যাতে ছাত্রীরা পান তার জন্যই এমন ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন : ১০ ডিজিটেই লুকিয়ে আপনার সব তথ্য! প্যান কার্ডের ১০ টি সংখ্যার মানে কী?
আরও পড়ুন : ১লা মে থেকে বদলে যাবে জরুরী এই ৫ টি নিয়ম
কন্যাশ্রীর টাকা কারা পাবেন?
এই প্রকল্পের আওতায় ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী অবিবাহিত মেয়েদের পড়াশোনার জন্য হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে শর্ত এই যে অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করতেই হবে। ২০১৭ সালের পর স্নাতক স্তরের মেয়েদের, যাদের বয়স ১৮ বছর, তাদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয় এবং এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের সুবিধা তারাই পাবেন যাদের বার্ষিক আয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার বেশি নয়। তবে যাদের বাবা-মা নেই কিংবা যারা ৪০ শতাংশ বা তার বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী, তাদের জন্য বার্ষিক আয়ের বিষয়ে ছাড় রয়েছে।