‘অন্ধকার গলির ছেলে’ নাকি নায়ক! ছবি ছিঁড়ে ফেলে দেন পরিচালক, স্মৃতির আবেগে ভাসলেন মিঠুন

মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty), আজ এই নামটাই যথেষ্ট গোটা দেশকে তার পরিচয় দিতে। বাংলার এই অভিনেতা টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে যতটা হিট হয়েছিলেন, ঠিক ততখানি জনপ্রিয়তা তিনি বলিউড (Bollywood) থেকেও পেয়েছেন। তবে অভিনয়ের জীবন শুরু করার প্রথম দিনগুলো এতটা সহজ ছিল না মিঠুনের জন্য। আজ তিনি যে জায়গায় পৌঁছেছেন সেখানে পৌঁছতে তাকে অনেক কঠিন বাঁধা অতিক্রম করতে হয়েছে।

মিঠুন চক্রবর্তীকে অভিনয়ের সুযোগ প্রথম দিয়েছিলেন একজন বাঙালি পরিচালক। নাম তার মৃণাল সেন (Mrinal Sen)। আসলে মিঠুনের চেহারা ঠিক তৎকালীন সময়ের নায়কদের মত ছিল না। কেউ ভাবতেই পারতেন না মিঠুন নায়ক হবেন। শ্যামবর্ণের কারণে তাকে অনেক কটাক্ষ সহ্য করতে হয়েছিল বলিউডে গিয়েও। কিন্তু মৃণাল সেন গায়ের রং না দেখে মিঠুনের অভিনয় সত্ত্বা চিনে নিয়েছিলেন।

MITHUN CHAKRABORTY

টলিউডের নামজাদা পরিচালক মৃণাল সেন ‘মৃগয়া’ ছবির জন্য বেছে নিয়েছিলেন মিঠুনকে। সেদিন যদি তিনি তাকে ছবিতে সুযোগ না দিতেন তাহলে আজ হয়ত মিঠুন মহাগুরু হয়ে উঠতে পারতেন না। তাই মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকীতে নস্টালজিক হয়ে পড়লেন তিনি। সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ডুব দিলেন স্মৃতির সমুদ্রে।

মিঠুন বলেছেন, “অন্ধকার গলির একটা ছেলে পৃথিবী বিখ্যাত হতে পারে? হিরো হওয়ার একটা গুণ আমার ছিল না। মৃণালদা আমায় সামনে থেকে দেখেননি। পেছন থেকে দেখেছিলেন। আমার ভিলেন হওয়ার খুব শখ ছিল। গোঁফ লাগিয়ে ওকে ছবি পাঠিয়েছিলাম। ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন মৃগয়া করব, নায়ক খুঁজছি।”

MITHUN CHAKRABORTY

সেই থেকে শুরু, এরপর মিঠুন চক্রবর্তীকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কখনও। কলকাতাতে অভিনয় করতে করতে তিনি পাড়ি দেন মুম্বাইতে। অবশ্য সেখানে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই যে বলিউড তাকে দুহাত বাড়িয়ে সাদরে অভ্যর্থনা করেছিল এমন নয়। বরং অনেক অপমান তাকে সহ্য করতে হয়েছিল সুপারহিট তারকাদের থেকে। এদের মধ্যে ছিলেন রাজকুমার, জিতেন্দ্র।

আরও পড়ুন : টাকার লোভে ‘পরাগ’র মত চরিত্র করছেন! দিনরাত্রি গালিগালাজ শুনে মুখ খুললেন অভিনেতা

MITHUN CHAKRABORTY

আরও পড়ুন : ‘এটাই আমার কাল হল…’, প্রকাশ্যেই কপাল চাপড়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন রচনা

তবে মাটি আঁকড়ে পড়ে থেকে মিঠুন চক্রবর্তী দেখিয়ে দিয়েছিলেন বাঙালিরা কখনও হার মানতে পারে না। তার জেদ ছিল তিনি একদিন বলিউডে রাজত্ব করবেন। তার জেদের কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়েছিলেন বড় বড় পরিচালক এবং প্রযোজকরা। এখন গোটা দেশ মিঠুনকে এক ডাকে চেনে। কিন্তু তার পুরনো দিনগুলো ছিল অনেক কষ্টের এবং সংগ্রামের। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আজও অজান্তেই চোখে জল এসে যায় মহাগুরুর।