বলিউডের সবথেকে ভয়ংকর ভিলেন বললেই সকলের চোখের সামনে একবার হলেও ভেসে ওঠে গব্বর সিং এর চেহারা। তবে জানেন কি শোলে সিনেমার সেই গব্বর সিংয়ের চরিত্রটি একেবারেই কাল্পনিক ছিল না? বাস্তবে এই গব্বর সিং নামের এক অতি দুর্ধর্ষ ডাকাত ছিল। যার দৌরাত্ম্যে নাকানিচোবানি খেতেন বড় বড় পুলিশ অফিসাররা। আজ আপনাদের শোনাব সেই আসল গব্বর সিং এর ঘটনা যা কোনও বলিউড সিনেমার টানটান স্ক্রিপ্টের থেকে কম নয়।
আসলে ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত শোলে সিনেমাতে গব্বর সিংয়ের যে চরিত্রটি রাখা হয়েছিল, সেটি একটি বাস্তব চরিত্রের অনুকরণ ছিল। এই সিনেমাতে গব্বরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন আমজাদ খান। সিনেমাটিতে ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন, হেমা মালিনী, সঞ্জীব কুমারদের মত বড় বড় তারকা থাকা সত্ত্বেও কেবল গব্বর চরিত্রের জন্য সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন আমজাদ। মধ্যপ্রদেশের কুখ্যাত ডাকাত গব্বর সিংয়ের অনুকরণেই আসলে এই চরিত্রটিকে রাখা হয়েছিল সিনেমায়।
বাস্তবের এই গব্বর ওরফে গবরার জন্ম হয় ১৯২৬ সালে, মধ্যপ্রদেশের ভিন্দ জেলার ডাং নামের একটি গ্রামে। ১৯৫০ সালে দুর্ধর্ষ ডাকাত হিসেবে তার নাম প্রথমবার প্রকাশ পায়। ডাকাত সর্দার কল্যান সিং গুজ্জারের দলের সদস্য হয়ে উঠেছিল সে। অত্যন্ত নৃশংস প্রকৃতির ছিল এই গব্বর সিং। তার বিরুদ্ধে সত্যি সত্যিই বহু পুলিশের নাক এবং কান কেটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি একটি ছবিতে পুলিশের হাত কাটতেও দেখা গিয়েছিল তাকে। বাস্তবের এই গব্বর সিং নাকি তার পরিবারে প্রতিষ্ঠিত দেবীর সামনে শপথ করে বলেছিল ১১৬ জনের নাক কেটে নৈবেদ্য হিসেবে মাকে সে দেবে। এমনই নানা রোমাঞ্চকর কাহিনী রয়েছে বাস্তবের গব্বর সিংকে কেন্দ্র করে।
আরও পড়ুন : আন্তর্জাতিক মঞ্চে উজ্জ্বল হল ভারতের মুখ! বিদেশের মাটিতেও সেরার সেরা এই বলিউড সিনেমা
আরও পড়ুন : বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের চাইল্ড আর্টিস্ট! বজরঙ্গি ভাইজান থেকে কত পারিশ্রমিক পেয়েছিল মুন্নি?
শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের পুলিশও গব্বর সিংয়ের ভয়ে কাঁপতো। ভিন্দ, গোয়ালিয়র, চম্বল, ইটাওয়া, ধোলপুরে দাপিয়ে বেড়াতে গব্বর। আসল গব্বর সিংকে ধরার জন্য পুলিশ তার উপর ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু গ্রামবাসীরা তার ভয়ে এতটাই ভীত ছিলেন যে গব্বরের সন্ধান পুলিশকে কেউ দিতে সাহস করতেন না। কিন্তু অবস্থা বদলালো ষাটের দশকে। ওই সময় ডেপুটি এসপি রাজেন্দ্র প্রসাদ মোদি গব্বরকে পাকড়াও করার দায়িত্ব নেন। এরপর এক গ্রামবাসী সাহস করে একদিন পুলিশকে গব্বরের খবর দেয়। ১৯৫৯ সালের একদিন কয়েকশো পুলিশ গব্বরকে ঘিরে ফেলে। কিন্তু না, এবারেও তাকে জীবন্ত অবস্থায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের টিম গুলি চালিয়ে গব্বরের এনকাউন্টার করে গোটা উত্তর ভারতকে তার ত্রাসমুক্ত করে।