সেলিব্রিটিদের শাড়ি পরিয়েই সেলিব্রেটি হয়েছেন কলকাতার গৃহবধূ ডলি জৈন। তিনি শাড়ি পরিয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী সোনাম কাপুর, দীপিকা পাড়ুকোন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া থেকে শুরু করে ইশা আম্বানি, নীতা আম্বানিকেও! এখন তার আয় শুনলে রীতিমতো অবাক হতে হয়। ডলি যেভাবে সাধারণ এক গৃহবধূ থেকে আজ ভারত সেরা শাড়ি ও দোপাট্টা ড্রেপার হয়ে উঠেছেন তা রীতিমত রূপকথার থেকে কম নয়।
অথচ বিয়ের আগে কিন্তু ডলির শাড়ির প্রতি এত ভক্তি ছিল না। কালক্রমে তার বিয়ে হলে এমন পরিবারে যেখানে শাড়ি ছাড়া আর কিছু পরা যায় না। প্রথমে ভেঙে পড়লেও ডলি এরপর শাড়ি নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নির পরীক্ষা শুরু করেন। নানাভাবে নতুন নতুন কায়দায় শাড়ি পরানো রপ্ত করতে থাকেন। একবার এক বিয়েবাড়িতে তিনি এত ভালোভাবে শাড়ি পরিয়ে দেন বাড়ির সব মহিলাকে যে তারা তাকে পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন। তখন আর খুশির ঠিকানা ছিল না ডলির।
ধীরে ধীরে ডলি ৩২৫ রকমের শাড়ি পরানোর কায়দা রপ্ত করে ফেলেন। মাত্র ১৮ সেকেন্ডেও তিনি শাড়ি পরাতে পারেন। এর জন্য লিমকা বুক অফ রেকর্ডে তার নাম উঠেছে। বলিউড সেলিব্রিটিদের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও তার কাছে শাড়ি পরার জন্য মুখিয়ে থাকেন। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জয়ললিতাও ডলির কাছে শাড়ি পরেছিলেন। এই তালিকাতে ভারতের বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানীর নামও রয়েছে।
ডলির কাছে বিয়ের কনেদের ভিড় সব থেকে বেশি থাকে। তবে বিয়ের অন্তত দুই থেকে তিন মাস আগে বুকিং না করলে ডলিকে পাওয়া মুশকিল হবে। ডলির কাছে শাড়ি পরেছেন শ্রীদেবী, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, সোনম কাপুর, দীপিকা পাড়ুকোনরা। শ্রীদেবী তার প্রশংসা করে বলেছিলেন তার আঙুলে নাকি জাদু আছে। শাড়ি পরানোর জন্য ৩৫ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পান তিনি এমনটাই শোনা যায়।
ডলি মনে করেন শাড়িই একমাত্র পোশাক যার মাধ্যমে দেহের সব খুঁত ঢেকে ফেলা যায়। নতুন প্রজন্ম যারা শাড়ি পড়তে চান না তাদের জন্য ডলির বার্তা, ক্যানভাস শু বা গুচ্চির বেল্ট, সবের সঙ্গেই শাড়ি পরা যাবে। শুধু শাড়ি পরার কায়দাটা বদলে ফেলতে হবে। বিয়ের কনেদের পছন্দ অনুসারে তিনি শাড়ি পরান। এমন ভাবে শাড়ি পরানোর স্টাইল বের করেন যাতে কনের আসল ব্যক্তিত্ব না চাপা পড়ে যায়। রাধিকা-অনন্তর বিয়েতেও তিনি রাধিকা ও নীতা আম্বানিকে সাজিয়েছেন।
আরও পড়ুন : শাহজাহানের গয়না, কোহিনূরের মত দামি হীরে! কী কী গয়না রয়েছে নীতা আম্বানির কাছে?
আরও পড়ুন : কত টাকার মালিক মুকেশ আম্বানির ছোট বউমা Radhika Merchant
ডলির হাতের ট্যাটুতে লেখা, “আমি আমার সময় থেকে ৬ গজ এগিয়ে আছি।” বাস্তবেও তার প্রমাণ দিয়েছেন ডলি। শাড়ি পরানোর পুরনো কায়দা ঝেড়ে ফেলে নিত্য নতুন কায়দা উদ্ভাবন করেছেন এবং এখনও করছেন তিনি। ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জন্য ভারতের বাইরেও তিনি গিয়েছেন কাজের সুবাদে। ড্রেপার হিসেবে ভারতের পাশাপাশি বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে তার নাম ডাক।