চা ওয়ালা থেকে রাবড়ি বাবা! কুম্ভমেলার এই সাধুবাবাদের সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন

চা ওয়ালা বাবা থেকে রাবড়ি বাবা, অ্যাম্বাসেডর বাবা থেকে ছোটু বাবা, এই বছর মহাকুম্ভ মেলায় সাধু-সন্ন্যাসীদের নাম শুনেই অবাক নেট পাড়া। অনেক অদ্ভুত নামের সাধু ও সন্ন্যাসীর দেখা মিলল ২০২৫ সালের মহাকুম্ভে (Mahakumbh 2025)। যেমন অদ্ভুত তাদের নাম, তেমনই অদ্ভুত তাদের মাহাত্ম্য। বাবাদের আগমনে এই বছরও সরগরম মহাকুম্ভ মেলা। সোশ্যাল মিডিয়াতে রীতিমত শোরগোল ফেলে দিয়েছেন এই বাবারা। কার নামের কী মাহাত্ম্য? কীই বা বিশেষত্ব। জানলে অবাক হবেন আপনিও।

১. অ্যাম্বাসেডর বাবা : শুরুতেই রয়েছেন অ্যাম্বাসেডর বাবা। বয়স আন্দাজ ৫০ পেরিয়েছেন এই বাবা। আসছেন মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে। রবিবার মহাকুম্বে এসে পৌঁছেছেন তিনি। এই নিয়ে এটা তার চতুর্থ মহাকুম্ভ মেলায় অংশগ্রহণ। তার এমন নামের পেছনে রহস্যটাও বেশ আকর্ষণীয়। ১৯৭২ সাল থেকে তিনি একটিই অ্যাম্বাসেডর গাড়িতে করে ভ্রমণ করছেন। ৩০-৩৫ বছর ধরে একই গাড়িতে ক্রমাগত চড়ার ফলে তার নামই হয়ে গিয়েছে অ্যাম্বাসেডর বাবা।

Mahakumbh 2025

২. পরিবেশ বাবা : তার অপর নাম মহামন্ডলেশ্বর অবধূত বাবা। মহাকুম্ভে যোগ দিতে তিনিও পৌঁছে গিয়েছেন প্রয়াগরাজে। তিনি এবং বিশ্বের ৩০ টি দেশে ছড়িয়ে থাকা তার ভক্তরা ভারতে ১ কোটিরও বেশি গাছ লাগানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। তার কথায় সনাতন ধর্ম দুটি করে গাছ লাগানোর কথা বলে। একটি শেষকৃত্যের জন্য এবং অপরটি অক্সিজেনের জন্য। অক্সিজেন যে কতটা প্রয়োজন তা করোনার সময় মানুষ টের পেয়েছে। এপর্যন্ত ৮২ টি আচার পালন করেছেন পরিবেশ বাবা। ২০১০ সাল থেকে তিনি পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন। ২০১৬ সালে বৈষ্ণদেবী থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত পথযাত্রা সময় তিনি ২৭টি রাজ্যে গাছ লাগিয়েছিলেন। সেই থেকে তার নাম হয়ে গিয়েছে পরিবেশ বাবা।

৩. রুদ্রাক্ষ বাবা : ইনি নিরঞ্জনী পঞ্চায়েতী আখড়ার সাধু দিগম্বর অজয়গিরি। তাকে আর ভক্তরা রুদ্রাক্ষ বাবা বলে ডাকেন। তার গোটা শরীরে ১১ হাজার রুদ্রাক্ষ ধারণ করছেন। তিনি বলেন ভগবান শিবের অংশ রুদ্রাক্ষ। তার চোখ থেকে রুদ্রাক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। তার শরীরে ১ থেকে ২১ মুখী রুদ্রাক্ষ রয়েছে। শিব পুরাণ অনুসারে ১১ হাজার রুদ্রাক্ষ যিনি ধারণ করেন, তাকে রুদ্র বলা হয়।

Mahakumbh 2025

৪. রাবড়ি বাবা : ইনি পঞ্চায়েতি আখড়ার মহানির্বাণী সাধু বাবা। তার আসল নাম শ্রীমহন্ত দেবগিরি। ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে তিনি রাবড়ি খেতে দেন। তাই তার নাম হয়ে গিয়েছে রাবড়ি বাবা। ভক্তদের জন্য প্রসাদের রাবড়ি তিনি নিজেই প্রস্তুত করেন। ভোর চারটা থেকে রাত পর্যন্ত ভক্তদের মধ্যে সেই প্রসাদ বিতরণ হয়। ২০১৯ সালে রাবড়ি খাইয়ে তিনি বহু মানুষের মন জয় করেছিলেন। সেই থেকে এই পরম্পরা চালিয়ে আসছেন রাবড়ি বাবা।

Mahakumbh 2025

৫. চা ওয়ালা বাবা : উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ের দীনেশ স্বরূপ ব্রহ্মচারী প্রথম জীবনে চা বিক্রি করতেন। পরে তিনি আধ্যাত্মিকতার পথ বেছে নিয়ে হয়ে ওঠেন সাধু বাবা। তবে তার নামটি হয়ে যায় চা ওয়ালা বাবা। তিনি নাকি দিনের পর দিন খাবার না খেয়েই বেঁচে আছেন। তিনি কথাও বলেন না। সারাদিনে কেবল ১০ কাপ চা খেয়ে কাটে তার দিন। সরকারি চাকরি প্রার্থীদের বিনামূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেন তিনি।

আরও পড়ুন : নামমাত্র পোশাকে ঝড় তুলতেন সোশ্যাল মিডিয়ায়! মহকুম্ভের এই ভাইরাল সন্ন্যাসিনী আসলে কে?

Mahakumbh 2025

আরও পড়ুন : ফুটপাতের দোকানে রুটি-তড়কা খাচ্ছেন অঙ্কুশ, দেখুন সেই ভাইরাল ভিডিও

৬. ছোটু বাবা : ৩ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এই বাবা তার এই উচ্চতার জন্যই বিখ্যাত। তিনি এই মহাকুম্ভের অন্যতম এক বড় আকর্ষণ। তিনি নাকি গত ৩২ বছর ধরে স্নান করেননি। মহাকুম্ভে গঙ্গাস্নানও করবেন না। তিনি শুধু মহাকুম্ভে এসেছেন তার ভক্তদের আশীর্বাদ করতে। ছোট থেকে বড়, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই তার পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিচ্ছেন।