সুরের ভুবনের নাইটিঙ্গেল তিনি। ভারতীয় সংগীত দুনিয়াতে তাকে বলা হত সুর সম্রাজ্ঞী কিংবা স্বয়ং মা সরস্বতী। গত বছরের ৬ই ফেব্রুয়ারি পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। কিন্তু কোটি কোটি ভক্তের জন্য রেখে গিয়েছেন হাজার হাজার গান। এই গানই তাকে বছরের পর বছর বাঁচিয়ে রাখবে। লতা মঙ্গেশকরের গলা ছিল ঈশ্বরের দান। জানেন কি এই গলার কারণেই তাকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল?
লতা মঙ্গেশকর বাংলা, হিন্দি এবং আরও অন্যান্য ভাষা মিলিয়ে অসংখ্য গান গেয়েছেন। তিনি সংগীত সাধকদের কাছে আইডল। লতাকন্ঠী হয়ে অনেকেই পরবর্তীকালে নাম-যশ পেয়েছেন। অনেক নতুন নতুন গায়িকারও আবির্ভাব হয়েছে। কিন্তু সংগীত প্রেমীদের কাছে লতা মঙ্গেশকর একজনই। এহেন লতাকে হিংসের বশে প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছিল। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩৩ বছর।
খুব কম বয়সেই সংগীতদুনিয়ায় পদার্পণ করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। তার অসাধারণ কন্ঠে সুবাদে তিনি খুব কম বয়সেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। যে সময় তার সঙ্গে এই দুর্ঘটনা ঘটে তখন তার কেরিয়ার ছিল তুঙ্গে। লতা মঙ্গেশকর তখন ছিলেন ভারতবর্ষের এক নম্বর গায়িকা। তবে তার এই সুনাম অনেকেরই সহ্য হয়নি। তার জনপ্রিয়তা যেমন বাড়ছিল, তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল শত্রুদের সংখ্যা।
তার উপর যে এরকম এরকম একটা জঘন্য অত্যাচার হয়েছিল সেই কথা প্রথম জানা যায় পদ্মা সচদেবের লেখা গ্রন্থ ‘লতা মঙ্গেশকর : অ্যায়সা কাঁহা সে লাউঁ’তে। এরপর এক প্রবাসী সাংবাদিক নাসির মুন্নি কবীরকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েও লতা মঙ্গেশকর নিজের মুখে এই খবর জানিয়েছিলেন। তিনি জানান তাকে খাবারে বিষ প্রয়োগ করে খুনের চেষ্টা করা হয়।
ঘটনাটা ঘটেছিল ১৯৬২ সালে। একদিন রাতে খাওয়ার পর হঠাৎ ভীষণ রকম পেটে যন্ত্রণা করতে শুরু করে লতার। সেই সঙ্গে সবুজ বমি করতে থাকেন তিনি। ধীরে ধীরে তার সারা শরীর অসাড় হয়ে যায়। হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতাটুকুও ছিল না তার। তার গোটা শরীরে তীব্র যন্ত্রণা হতে থাকে। তড়িঘড়ি তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা তিন দিন ধরে চলে জীবন-মৃত্যুর টানাটানি।
আরও পড়ুন : দাম শুনলে নীতা আম্বানিও লজ্জা পাবে! শাড়ি বেচতে গিয়ে চরম ট্রোল্ড রান্নাঘরের সুদীপা
আরও পড়ুন : ভারতের সবথেকে ধনী অভিনেত্রী! নয়নতারার সম্পত্তির পরিমাণ জানলে ঘুরে যাবে মাথা
লতা জানান তার পাকস্থলী থেকে বিষ পাওয়া গিয়েছিল। তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু দীর্ঘদিন পর্যন্ত গরম খাবার খেতে পারতেন না। বরফের টুকরো মেশানো তরল খাবার খেতে হত তাকে। কিন্তু কে এমনটা করার সাহস পেল? পরে জানা যায় লতার রাঁধুনী নাকি পারিশ্রমিক না নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে আচমকা এই ঘটনার পর কাজ ছেড়ে চলে যান। তিনি এর আগে বলিউডের অনেক বড় বড় তারকার বাড়িতে কাজ করেছিলেন। লতার সন্দেহ ছিল, সেই রাঁধুনীই কারও কথায় বা টাকার লোভে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছিল।