৯০ দশকের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী ছিলেন রতি অগ্নিহোত্রী (Rati Agnihotri), যিনি খুব কম সময়ের মধ্যে বলিউডে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীন আচমকাই তিনি হারিয়ে যান বলিউড থেকে। আজ আমরা জানব বলিউডের এই অভিনেত্রীর জীবনের সেই অজানা কথা, যা হয়তো এতদিন আপনি জানতেন না।
বলিউডের প্রায় প্রত্যেক জনপ্রিয় অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন রতি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন। কমল হাসানের বিপরীতে ‘এক দুজে কে লিয়ে’, সিনেমায় অভিনয় করার পর রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এরপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৮৩ সালে ‘কুলি’ সিনেমায় অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করার পর রতি অগ্নিহোত্রী তার ক্যারিয়ারের শীর্ষে পৌঁছে যান। কিন্তু এরপরেই তার নেওয়া একটি সিদ্ধান্তের ফলে ছারখার হয়ে যায় জীবন।
‘কুলি’ সিনেমাটি মুক্তির ঠিক দু’বছর পর তিনি ব্যবসায়ী অনিল ভিরুওয়ানিকে বিয়ে করেন। অনিল পেশায় একজন স্থাপতি ছিলেন। বেশ সচ্ছল পরিবারেই বিয়ে হয়েছিল অভিনেত্রীর। বিয়ের পর বলিউড থেকে দীর্ঘ বিরতি নিয়ে নেন অভিনেত্রী। ভেবেছিলেন স্বামী এবং সন্তানকে নিয়ে সুখে সংসার করবেন কিন্তু তা হয়নি। বিয়ের কিছু বছরের মধ্যেই সেই সুখের সংসার দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে যায়।
২০১৫ সালে রতি অগ্নিহত্রী নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের কথা সকলের সামনে নিয়ে আসেন। বিয়ের পর থেকেই নাকি নিত্যদিন অভিনেত্রীর উপর অত্যাচার করতেন অনিল। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ দিন তিনি স্বামীর অত্যাচারীর সহ্য করেছিলেন কিন্তু অবশেষে আর সহ্য না করতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে সকলের সামনে নিয়ে আসেন প্রকৃত সত্য।
জানলে অবাক হয়ে যাবেন, দাম্পত্য জীবনে প্রায় ৩০ বছর স্বামীর অত্যাচার সহ্য করেছিলেন অভিনেত্রী। ছেলের জন্মের পর হয়তো সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে এমনটাই ভেবেছিলেন অভিনেত্রী কিন্তু তা হয়নি। একটা সময় যখন সমস্ত অত্যাচারের সীমা লঙ্ঘন হয়ে যায় এবং অনিল স্ত্রীকে খুন করার চেষ্টা করেন, তখন অবশেষে পুলিশকে সবকিছু জানাতে বাধ্য হন রতি।
বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন রতি অগ্নিহোত্রীর একমাত্র ছেলে তনুজ বিরওয়ানি মায়ের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছোটবেলা থেকে তিনি দেখেছিলেন কিভাবে তার মা অত্যাচারিত হয়ে আসছেন তাই মায়ের স্বপক্ষেই কথা বলেছিলেন তনুজ। দীর্ঘদিন ক্যামেরা থেকে দূরে থাকার পর অবশেষে ২০০১ সালে যদি রতি অগ্নিহোত্রী ফের চেষ্টা করেন সিনেমা জগতে ফিরে আসার কিন্তু তেমনভাবে সাফল্য আর তিনি পান না। ২০১৫ সালের স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর আপাতত ছেলেকে নিয়ে বেশ ভালই রয়েছেন তিনি।