বাস্তবে কোনদিনও মদ ছুঁয়েও দেখেননি, অথচ মাতাল হয়ে পর্দা মাতিয়েছেন এই অভিনেতা

বলিউড (Bollywood) হোক বা টলিউড (Tollywood), নায়ক-নায়িকা এবং ভিলেন ছাড়াও সিনেমা হিট হওয়ার উপাদান হিসেবে লাগে কমেডিয়ানদের। বলতে গেলে বাণিজ্যিক ছবিতে তারাই চটপটে মশলা এনে দেন! ৭০-৮০ এর দশকে পর্দার এমনই এক নামি কমেডিয়ান ছিলেন কেষ্ট মুখার্জী (Kesto Mukherjee)। যাকে দর্শক ‘পর্দার মাতাল’ হিসেবেই মনে রেখেছেন। তার এমন নাম হওয়ার পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। এই বাঙালি অভিনেতা বলিউডজুড়ে বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন।

প্রায় সব ছবিতেই তার চরিত্রটি ছিল মাতালের। কাজেই পর্দায় যখনই কোনও মাতালের দরকার পড়েছে তখন পরিচালকেরা সরাসরি কেষ্ট মুখার্জির দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু এহেন মানুষটি বাস্তব জীবনে কোনদিনও মদ স্পর্শ করেননি। জন্ম কলকাতায়। একসময় কাজ করতেন রাস্তার নাটকে। বাংলার বিশিষ্ট পরিচালক ঋত্বিক ঘটক তার মধ্যে অভিনয়ের চাহিদা তৈরি করেন। ঋত্বিক ঘটকের ‘নাগরিক’ ছবির হাত ধরে অভিনয় জীবনে পা রাখেন তিনি। কিন্তু সেই ছবি তার জীবদ্দশায় মুক্তি পায়নি। পরিচালক এবং অভিনেতার মৃত্যুর পর ছবিটি বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছিল।

তাই টলিউডে তিনি নিজের খ্যাতি দেখে যেতে পারেননি। ঋত্বিক ঘটক ছাড়াও হৃষিকেশ মুখার্জীও তাকে নিজের বহু ছবিতে কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তবে তার ভাগ্য বদলে গেল মুম্বাইতে এসে। রাজ কাপুরের সঙ্গে ‘তিসরী কাসম’, ‘জিতা দিল’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি বলিউডের মান্যগণ্য কমেডিয়ান অভিনেতা হয়ে উঠেছিলেন। ছবিতে তার কাজের মেয়াদ ছিল স্বল্প, কিন্তু ছোট চরিত্রে অভিনয় করেই বাজিমাত করে যেতেন তিনি। ‘জঞ্জির’, ‘আপ কি কসম’, ‘শোলে’র মতো ছবিতেও তিনি অভিনয় করেছিলেন। তবে ১৯৭৯ সালে ‘গোলমাল’ ছবিতে উৎপল দত্তের সঙ্গে থানায় তার একটি মজার দৃশ্যকে আজও বলিউডের সেরা কমেডি দৃশ্যের মধ্যে অন্যতম ধরা হয়।

শুধু দর্শক নয়, কেষ্ট মুখার্জির ফ্যান ছিলেন বলিউডের তারকারাও। ধর্মেন্দ্র তাকে নিয়ে একটি গান উৎসর্গ করেছিলেন। গানের নাম ‘কেষ্ট চলা’। বলিউডে তার শেষ ছবি ছিল সন্ত্রাস। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিনোদ মেহরা, হেমা মালিনী, ধর্মেন্দ্র এবং আমজাদ খান। আজীবন পর্দায় মাতাল হয়ে অভিনয় করে দর্শকের মনোরঞ্জন করেছেন তিনি। ১৯৮৫ সালে কেষ্ট মুখার্জির মৃত্যু হয়। তবে তার মৃত্যুর পরেও বলিউড তাকে মনে রেখেছে।