এতদিন এশিয়া তথা ভারতের সবথেকে ধনী ব্যক্তি হিসেবে সমগ্র দুনিয়ার কাছে পরিচিত ছিলেন গৌতম আদানি (Goutam Adani)। কিন্তু সম্প্রতি আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই দারুণ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে গিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শেয়ার পড়তে পড়তে গৌতম আদানির সম্পত্তির পরিমাণ (Goutam Adani Net Worth) প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। যদিও তার কাছে এখনও এমন কিছু সম্পত্তি রয়েছে যার অর্থমূল্য সাধারণের কল্পনারও অতীত।
গৌতম আদানের কাছে বর্তমানে রয়েছে ৪০০ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি। ২০২০ সালে লুটিয়েন্স দিল্লিতে তিনি এই বাড়িটি কিনেছিলেন। ৩.৪ একর জমির উপর অবস্থিত প্রাসাদের মত এই বাড়িতে আদানিদের সবথেকে দামি বাসভবনের মধ্যে অন্যতম বলে ধরা হয়। এই বাড়িতে কিনতে আগাম হিসেবে ২৬৫ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খরচ হিসেবে ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয় করেন গৌতম আদানি।
দিল্লিতে এই বাড়িটি ছাড়াও গুরগাঁও, আহমেদাবাদেও আরও দুটি বাড়ি রয়েছে আদানিদের। তবে আদানিরা অবশ্য বছরের বেশিরভাগ সময় আহমেদাবাদের বাড়িতে থাকেন। স্ত্রী প্রীতি আদানি, দুই ছেলে কর্ণ এবং জিৎ আদানি ও পুত্রবধূর সঙ্গে এই বাড়িতেই থাকেন গৌতম আদানি। বাড়ি ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল প্রাইভেট জেট এবং হেলিকপ্টারও রয়েছে তাদের।
গৌতম আদানি তার ব্যক্তিগত জেট বিমানেই বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে থাকেন। গৌতমের বোম্বার্ডিয়ার প্রাইভেট জেট বিমানটি সর্বাধিক ৮ জন যাত্রীকে নিয়ে উড়তে পারে। বিচক্র্যাফ্ট বিমানের ৩৭ জন যাত্রীকে বহন করার ক্ষমতা আছে। হকার জেট বিমান ৫০ জন যাত্রীকে বহন করতে সক্ষম। ভারতে আদানিদের সব থেকে সস্তা প্রাইভেট জেটের দামই নাকি ১৫.২ কোটি টাকা।
এছাড়া তাদের কাছে তিনটি হেলিকপ্টার রয়েছে। গৌতম আদানি ‘অগাস্টা ওয়েটল্যান্ড এডব্লু ১৩৯’ বিমানে চেপে সর্বাধিক যাতায়াত করেন। এই হেলিকপ্টারটি ১৫ জন যাত্রীকে বহন করতে পারে। প্রতি ঘন্টায় ৩১০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। আদানি গোষ্ঠীর গাড়ির কালেকশন নজর কাড়বে। সাড়ে তিন কোটি টাকার লাল ফেরারি, বিএমডব্লিউ ৭, রোলস রয়েস ঘোস্ট গাড়ি রয়েছে তার কাছে।
এছাড়া ১৭ টি জাহাজের মালিক আদানি এন্টারপ্রাইজ। জ্বালানি এবং অন্যান্য উপকরণ পরিবহন করতে ব্যবসার কাজে লাগে এই জাহাজগুলো। গোটা দেশজুড়ে আদানিদের ১৩ টি জাহাজ বন্দর রয়েছে। এছাড়া আদানিরা হলেন অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম কয়লা খনি কারমাইকেলের মালিক। আগামী ৩ দশকের জন্য বছরে প্রায় ১০ মিলিয়ন টন কয়লার যোগান দিতে পারে এই খনিটি। তবে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর বিপুল এই সম্পত্তি থেকে প্রায় ৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪০১ কোটি টাকা হারিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।