সুপারস্টার বলে ভীষণ দেমাক! ‘অহংকারী’ ঋতুপর্ণাকে উচিত শিক্ষা দেন দুলাল লাহিড়ী

ঋতুপর্ণাকে ‘নাকের জলে চোখের জলে’ করে ছেরেছিলেন দুলাল লাহিড়ী, দিয়েছিলেন উচিত শিক্ষা

Rituparna Sengupta : ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, ৯০ এর দশকে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির সেরা সুন্দরী নায়িকাদের মধ্যে একজন। সেই সঙ্গে একজন দাপুটে অভিনেত্রী। বাংলা সিনেমার সুপারস্টার তিনি। স্টার ইমেজ ধরে রাখার জন্য তিনি সবসময় সব জায়গাতে পৌঁছন দেরি করে। এমনকি শুটিংয়েও এমনটা করেছেন বারবার। কেউ তার মুখের উপর কিছু বলতে না পারলেও একবার তাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা দুলাল লাহিড়ী (Dulal Lahiri)।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের বদ অভ্যাস

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের মধ্যে সময় জ্ঞানের বড় অভাব বরাবরই। একথা বারবার প্রকাশ্যে এসেছে নানাভাবে। তার সহ-অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীও তাকে ঠিক এই কারণেই ‘ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র সুপারস্টার’ বলে খোঁটা দিয়েছিলেন। কারণ তিনি কোনওদিনই সঠিক সময়ে শুটিংয়ে আসতেন না। তার জন্য গোটা টিমকে অপেক্ষা করতে হত ঘন্টার পর ঘন্টা।

Rituparna Sengupta

বিমানবন্দরেও দেরি করে পৌঁছেছিলেন ঋতুপর্ণা

শুধু শুটিংয়ে দেরি করে পৌঁছতেন তাই নয়, একবার বিমানবন্দরেও এভাবেই দেরি করে পৌঁছেছিলেন ঋতুপর্ণা। বিমান কর্তৃপক্ষ তাকে বিমানে উঠতে না দেওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। যদিও তার পাল্টা ফল হয়েছিল উল্টো। উল্টে ঋতুপর্ণাকেই তার সময় জ্ঞানের অভাবের জন্য ট্রোল করতে শুরু করেন নেটিজেনরা। বিমান সংস্থার থেকে যেরকম শিক্ষা পেয়েছিলেন ঋতুপর্ণা, ঠিক তেমনই তাকে তার ভুল ধরিয়ে দেন দুলাল লাহিড়ী।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং দুলাল লাহিড়ী মিলে একবার ‘বৃষ্টির ছায়াছবি’ নামের একটি ছবি তৈরি করছিলেন। এই ছবির প্রযোজক ও অভিনেত্রী ছিলেন ঋতুপর্ণা। দুলাল লাহিড়ী সিনেমার পরিচালনা করছিলেন। এমনিতে অবশ্য দুলাল লাহিড়ীর সঙ্গে আগেও একাধিক ছবিতে কাজ করেছেন ঋতুপর্ণা। তাই অভিনেতা তাকে বিশেষ স্নেহ করতেন। কিন্তু ঋতুপর্ণার সময়ের মূল্য না দেওয়ার দোষ তিনি মানতে পারেননি।

Rituparna Sengupta And Dulal Lahiri

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে উচিত শিক্ষা দেন দুলাল লাহিড়ী

শুটিংয়ের জন্য ঋতুপর্ণাকে সকাল ৯.০০ টায় কল টাইম দিয়েছিলেন দুলাল লাহিড়ী। এদিকে অভিনেত্রী তার স্বভাব মত দেড় ঘন্টা পর আসেন শুটিংয়ে। তিনি আসামাত্রই সেদিনের মত শুটিংয়ে ‘প্যাক আপ’ ঘোষণা করে দেন পরিচালক। অবাক হয়ে ঋতুপর্ণা প্রশ্ন করেন, “এ কি আপনি প্যাক আপ করছেন কেন?” উত্তরে দুলাল লাহিড়ী বলেন, “তোকে কেউ কিছু বলে না বলে তুই ভীষণ বেড়েছিস। এই দেরি হওয়ার জন্য যে ক্ষতিটা হবে সেটা তুই বুঝতে পারবি। তুই এই সিনেমার প্রযোজক এটা আরও বেশি করে তোর বোঝা উচিত।”

আরও পড়ুন : ‘‘ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র সুপারস্টার!’’ ঋতুপর্ণাকে ঠেস মেরে কথা শোনালেন চিরঞ্জিত

Rituparna Sengupta And Dulal Lahiri

আরও পড়ুন : বিবাহিত হয়েও কেন স্বামীর পদবী ব্যবহার করেন না ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত?

দুলাল লাহিড়ীর থেকে ধমক খেয়ে কাঁদতে শুরু করেন ঋতুপর্ণা। তিনি বলেন, “আর কোনওদিন এমন হবে না। তোমার শুটিংয়ে আমি আর কোনদিনও দেরি করে আসব না।” দুলাল লাহিড়ীরও মায়া হয় ঋতুপর্ণাকে কাঁদতে দেখে। তবুও তিনি বলেন, “শুধু আমার জন্য না। এইরকম আর কারও সঙ্গে করবি না।” ঋতুপর্ণাকে আসলে বরাবরই খুব ভালবাসেন দুলাল লাহিড়ী। তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে একবার তিনি বলেছিলেন, “ও ভীষণ ভালো অভিনেত্রী। জীবনে খুব পরিশ্রম করেছে। সেই জন্যই আজ ও এই জায়গাতে পৌঁছতে পেরেছে।”