ভারত তথা এশিয়ার অন্যতম বড় শিল্পপতি পরিবার হল আম্বানি পরিবার। ধীরুভাই আম্বানির প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্য এখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তার বড় ছেলে মুকেশ আম্বানি। যদিও তার সম্পত্তির একটা অংশ পেয়েছিলেন ছোট ছেলে অনিল আম্বানি। কিন্তু ব্যবসায় ভরাডুবি হওয়াতে সর্বশান্ত হয়েছেন অনিল। তবে জানেন কি অনিল এবং মুকেশ ছাড়াও তৃতীয় এক সন্তান রয়েছে ধীরুভাইয়ের?
না, তার সঙ্গে সরাসরি আম্বানি পরিবারে রক্তের সম্পর্ক নেই কোনও। নাম তার আনন্দ জৈন। আম্বানিদের কেউ না হয়েও তিনি এই পরিবারের একজন অন্যতম বড় সদস্য। তাকে ধীরুভাই আম্বানি নাকি নিজের তৃতীয় সন্তান হিসেবে মানতেন। তিনি অনিল এবং মুকেশ আম্বানির ভাই! বর্তমানে জয় কর্প লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত আছেন তিনি।
কিভাবে আম্বানিদের এত কাছে চলে এলেন আনন্দ? যতদূর জানা যায় তিনি এবং মুকেশ মুম্বাইয়ের হিল গ্রেঞ্জ হাই স্কুলে একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। বলতে গেলে তিনি মুকেশের একজন বড় বন্ধু। তাদের গলায় গলায় ভাব ছিল। ১৯৮০ সালে পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দিয়ে মুকেশ স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে আসেন। ভারতে এসে তিনি বাবার ব্যবসার কাজে হাত লাগান।
অন্যদিকে বন্ধুর আসার খবর পেয়ে দিল্লিতে পৈত্রিক ব্যবসা গুটিয়ে আনন্দ রিলায়েন্সে যোগ দেওয়ার জন্য চলে আসেন। ক্রমে ধীরুভাইয়ের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। আনন্দকে ছেলের মতই ভালবাসতেন ধীরুভাই। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের ‘কিংপিন’ মনু মানেক রিলায়েন্সের ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। সেই বিপদ থেকে সে যাত্রায় আনন্দের জন্যই রক্ষা পান আম্বানিরা।
তাছাড়া অনেকেই বলেন আনন্দকে অনেকটা ধীরু ভাইয়ের মত দেখতে। আনন্দ এরপর নিজের ব্যবসার কাজে মন দেন এবং তিনি ক্রমে একজন বড় শিল্পপতি হয়ে ওঠেন। ২০০৭ সালে ভারতের সেরা ধনীদের তালিকায় ১১ নম্বরে নাম ছিল তার। তার ছেলে হর্ষ জৈন ভারতীয় একটি অনলাইন গেমিং সংস্থার সহ প্রতিষ্ঠাতা।
আনন্দ বর্তমানে রিলায়েন্স ক্যাপিটাল, রিলায়েন্স ইনফোকম এবং রিলায়েন্স গোষ্ঠীর মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান পেট্রো কেমিক্যালস লিমিটেডের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি মুকেশ আম্বানির প্রধান উপদেষ্টা। মুকেশের নির্মাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠার পেছনেও তার বুদ্ধি ছিল। মুকেশের ভাই অনিল দাবি করেন দাদার সঙ্গে তার দূরত্ব বৃদ্ধির পেছনেও নাকি আনন্দর হাত ছিল।