ঢালিউড (Dhallywood) তথা টলিউডের (Tollywood) একজন নামকরা অভিনেত্রী হলেন আজমেরি হক বাঁধন (Azmeri Haque Badhon)। তবে এই নামের বদলে যদি বলা হয় হইচইয়ের ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’ (Robindronath Ekhane Kawkhono Khete Aashenni) ওয়েব সিরিজের মুসকান জুবেরির নাম তাহলে এক ডাকে সবাই চিনবেন অভিনেত্রীকে। সুন্দরী অথচ ভয়ংকর চরিত্রের সেই নায়িকা বলুন বা খলনায়িকা, যে কিনা মানুষের মাংস খেত সেই মুসকান জুবেরির চরিত্রে অভিনয় করে দুই বাংলাতেই শোরগোল ফেলে দেন বাংলাদেশের এই অভিনেত্রী।
তবে কেরিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনের নিরিখেও বারবার লাইম লাইটে চলে এসেছেন বাংলাদেশের এই অভিনেত্রী। পেশায় একজন অভিনেত্রী হলেও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলেন বাঁধন। তবে পারিবারিক সমস্যার কারণে অত্যন্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হচ্ছিল। ২০১০ সালে তিনি প্রথমবার ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। এরপর বেশ কিছু টেলিভিশন সিরিজে কাজ করেন বাঁধন। প্রবল কাজের চাপের মাঝে বিয়েও করেন, তবে তার দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না।
বিবাহিত জীবনে স্বামীর কাছে চূড়ান্ত অত্যাচারিত হতে হয়েছিল বাঁধনকে। একবার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ করেন। বাঁধনের একমাত্র মেয়ের নাম সায়রা। তাকে নিয়েও কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি অভিনেত্রীকে। ২০১০ সালে বিয়ের পর ২০১৪ সালে আচমকাই বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় বাঁধনের। বাঁধনের স্বামী তার বিরুদ্ধে চরিত্রহীনতা এবং প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন।
অন্যদিকে নায়িকার দাবি ছিল তার স্বামীই তাকে মারধর করতেন এবং অত্যাচার করতেন। নিজের মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বিচ্ছেদ হওয়ার পরেও মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছিলেন। এমনকি তিনজনে একসঙ্গে বিদেশে ঘুরতেও গিয়েছিলেন। শুধু মেয়ের কথা ভেবেই আবার প্রাক্তন স্বামীকেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন বাঁধন।
তবে আবার বিয়ের আগেই স্বামীর সম্পর্কে একটা ভয়ংকর সত্য কথা জানতে পারেন বাঁধন। তার স্বামী তাকে কিছু না জানিয়েই আরেকবার বিয়ে করেছিলেন। এরপরেই প্রাক্তনকে বিয়ে করার বাসনা চলে যায় বাঁধনের। এরপর ফের একবার প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে তার সংঘাত বেঁধে যায় মেয়েকে নিয়ে। এতকিছুর পরেও কখনও মেয়েকে তার বাবার থেকে আলাদা করতে চাননি বাঁধন। তবে মেয়েকে বাঁধনের বিরুদ্ধে ভুল বোঝাচ্ছিলেন তার স্বামী। এমনকি মেয়েকে নিজের কাছে আটকে রেখে তাকে নিয়ে বিদেশে চলে যাওয়ার হুমকিও দিতে থাকেন তিনি।
এরপরই মেয়ের অভিভাবকত্ব চেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আবার আদালতের দ্বারস্থ হন অভিনেত্রী। ৬ বছরের মেয়ের অভিভাবকত্বের বিষয়ে আদালতের রায় বাঁধনের পক্ষেই ছিল। তবে এই লড়াইতে মানসিকভাবে তিনি ভেঙ্গে পড়েন। যে কারণে তাকে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হচ্ছিল। আজ ব্যক্তিগত জীবনের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে নিজের কাজের মাধ্যমে পরিচিতি পাচ্ছেন বাঁধন। এমনকি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নামের তার একটি ছবির জন্য কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকেও ঘুরে এসেছেন নায়িকা। দুই বাংলাতেই এখন দাপটের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন বাঁধন।