বিনোদন এবং রাজনীতির জগত যেন এখন ওতপ্রোতভাবে একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। টলিউড (Tollywood) এবং বাংলা সিরিয়ালের নামিদামি তারকাদের গায়ে লেগেছে রাজনীতির রং। শাসক কিংবা বিরোধী দলের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশও নিচ্ছেন তারা। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই বিনোদনের উপর রাজনীতির প্রভাব পড়ছে। দুই ভিন্ন মতাদর্শের তারকা একই সিনেমায় থাকলে প্রভাব পড়ছে ছবির সম্প্রচারের উপরেও।
সদ্য মুক্তি পেয়েছে দেব (Dev) এবং মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) অভিনীত ছবি ‘প্রজাপতি’ (Prajapati)। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই কলকাতার সমস্ত মাল্টিপ্লেক্সে রমরমিয়ে চলছে। দর্শকরাও প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন। তবে নন্দনে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে ‘প্রজাপতি’। দেবের প্রায় সমস্ত ছবি নন্দনে মুক্তি পেতে এতদিন বাঁধা ছিল না কোনও। কিন্তু এইবার আর ‘প্রজাপতি’ নন্দনে ঢুকতে পারল না।
এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেবের ভক্তদের মধ্যে তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। দেব নিজেও এই নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। খুব বেশি কিছু না বললেও নন্দনকে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়াতে স্বল্প কথায় তিনি লিখেছেন, “এইবার মিস করব নন্দন। কোনও সমস্যা নেই, পরের বার ফের দেখা হবে।” প্রজাপতি বিতর্কে টলিউডে রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এবার এই প্রসঙ্গে দুই সুপারস্টার সহ অভিনেতাকে নিয়ে মুখ খুললেন টলিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় শিশু শিল্পী অরিত্র দত্ত বনিক। একসময় দেব এবং মিঠুনের একাধিক ছবিতে শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন অরিত্র। বাংলার দর্শক তাকে ‘পাকা ছেলে’ নাম দিয়েছেন। অরিত্রই এবার দুই সুপারস্টার অভিনেতাকে দিলেন তার পরামর্শ।
শুধু দেব বা মিঠুন নয়, অরিত্র আসলে তার বক্তব্যের মাধ্যমে বিঁধেছেন তাবড় তাবড় টলিউড তারকাদের যারা রাজনীতিতে ভিড়েছেন। বুধবার নিজের ফেসবুক পোস্টে চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি লিখেছেন, “কুণাল ঘোষ বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন কোনও রাজনীতিবিদের বুকের পাটা হত না সিনেমা বা অভিনেতাদের নিয়ে ফালতু কথা বলার। যদি না বাংলার সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীরা নিজেদের অল্টারনেট জব সিকিউরিটি খুঁজতে বোকার মত রাজনীতির পেশায় এসে নিজের ফ্যানদের কাছে শ্রদ্ধার জায়গাটা নষ্ট না করতেন।”
অরিত্র সকলকে কটাক্ষ শানিয়ে লিখেছেন, “রাজনীতির চাকরি ছেড়ে সিনেমায় ফিরুন। আমরা শিল্পীরা নিজেদের দোষে এই অপমানের সুযোগ করে দিয়েছি। তাই রাজনৈতিক দলগুলি নিজের ভোটের আবেগ বিক্রি করতে গিয়ে সিনেমার ইমোশনকে বিক্রি করছে।” সকলের উদ্দেশ্যে অরিত্রর পরামর্শ, “এখনও সময় আছে যদি নিজের ক্রাফটের উপর আর অডিয়েন্সের উপর কনফিডেন্স থাকে এই মুহূর্তে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে নিজেদের মেরুদন্ডে বুঝিয়ে দিয়ে রাজনীতির চাকরি ছেড়ে আবার সিনেমার স্ক্রিনে ফিরুন।”