মেয়ে হওয়ায় অপমান! অপরাজিতার মা-দিদিমার সংগ্রামের কাহিনী শুনলে চোখে আসবে জল

টলিউড (Tollywood) অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)। একনজরে তাকে দেখলে সর্বদা হাসিখুশি একটি মেয়ে বলেই মনে হয়। অথচ অভিনেত্রী সেই ছোটবেলা থেকে তার মনের অন্দরমহলে জমিয়ে রেখেছেন কতই না মন খারাপের গল্প। তার মন খারাপের গল্পটা শুনলে সকলের চোখে জল আসে। বলতে বলতে অভিনেত্রীর গলাও কেঁপে ওঠে।

সদ্য অপরাজিতা উপস্থিত হয়েছিলেন একটি সংবাদমাধ্যমের মঞ্চে। সেখানে তাকে তার জীবনের কিছু ঘটনা শেয়ার করতে শোনা যায়। ঘটনাচক্র তার মা এবং দিদিমার জীবন কাহিনী ঘিরে আবর্তিত। যার প্রভাব অপরাজিতার জীবনেও এসে পড়ে। অভিনেত্রীর জানালেন তার দিদিমা তৎকালীন সময়ে মাস্টারদা সূর্য সেনের ছাত্রী ছিলেন। খুব অল্প বয়সে তার বিয়ে হয়। এরপর তারা চলে আসেন কলকাতায়।

 

দিদিমার স্বামী অর্থাৎ অপরাজিতার দাদু ছিলেন ভীষণ অত্যাচারী একজন পুরুষ। তিনি একসময় দ্বিতীয় বিবাহ করেছিলেন। তখন দুই মেয়েকে নিয়ে দিদিমা ফিরে এসেছিলেন বাপের বাড়িতে। মামার বাড়িতে আট জন ভাইবোনের মধ্যে মানুষ হয়েছিলেন অপরাজিতার মা এবং মাসি। দিদিমা স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করতে করতে দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিতা করেন। তবে মামার বাড়িতেও অত্যাচারের মধ্যেই মানুষ হতে হয়েছিল তার মা এবং মাসিকে। বাড়িতে বাসন মাজা থেকে শুরু করে কাপড় কাচা, সব কাজই করতেন তারা। এভাবে অপরাজিতার মা পলিটিক্যাল সায়েন্সে এমএ এবং তার মাসি ইংরেজিতে ডাবল এমএ করেছেন।

এরপর তার মায়ের বিয়ে হলো। তার মা একটি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরিও পেলেন। সে সময়টা নকশাল আন্দোলন চলছিল। কথা বলতে বলতে চোখের সামনে এক ব্যক্তিকে খুন হতেও দেখেছিলেন তার মা। তবে তিনি ছিলেন অসম্ভব সাহসী মানুষ। এদিকে ঘটনা দেখে অপরাজিতার বাবা সারা জীবনের জন্য নার্ভের রুগী হয়ে পড়েন। তিনি বাইরে চাকরি করতে যেতে পারতেন না।

তবে অপরাজিতার বাবা-মা যৌথভাবে সংসারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তার মা বাইরে স্কুলের চাকরি করতেন। বাড়িতে থেকে বাবার কাছে মানুষ হয়েছিলেন অপরাজিতা। বাবার ভালোবাসা আর মায়ের কড়া শাসন পেয়ে বড় হয়েছেন অভিনেত্রী। অপরাজিতা মনে করেন সমাজে মেয়েদের অবস্থান নির্ভর করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর। তার জীবনের এই অজানা গল্পের ভিডিওটি সমাজ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওটিও রইলো এই প্রতিবেদনে।