উত্তম কুমার (Uttam Kumar) টলিউড (Tollywood) -র বাংলা সিনেমার একজন কিংবদন্তী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলার প্রথম সুপারস্টার হলেন উত্তম কুমার। শুরুতে অরুণ কুমার নামে কিছু বানিজ্যিক ভাবে অসফল সিনেমা দিয়ে নিজের কেরিয়ার শুরু করলেও কিছু সময় পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি হয়ে ওঠেন বাংলার সব থেকে জনপ্রিয় নায়ক। চলুন আজকে জেনে নেব আমরা মহানায়কের জীবনের অজানা ছয়টি তথ্য।
প্রথম তথ্য : ১৯৫৪ সালে মুক্তিপ্রাক্ত উত্তম-সুচিত্রা জুটির অগ্নিপরীক্ষা সেসময় সুপার হিট। তবে সেসময় প্রকাশ্যে আসা ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ছবির পোস্টারের ক্যাপশনে বিতর্ক তৈরি করেছিল। ক্যাপশনে লেখা ছিল, ”অগ্নিপরীক্ষা: চিরন্তন ভালোবাসার সাক্ষী”। শোনা যায়, এই পোস্টারের ক্যাপশনটি উত্তম কুমারের স্ত্রী গৌরীদেবী এবং সুচিত্রা সেনের স্বামী দিবানাথ সেন মোটেও ভালো চোখে নেননি। এমনকি এই পোস্টারটি উত্তম-সুচিত্রার প্রেম নিয়ে ছড়িয়ে থাকা নানান গুজবে আরও অগ্নিসংযোগ করেছিল।
দ্বিতীয় তথ্য : মদন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ধারাবাহিক উপন্যাস ‘কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ অবলম্বনে ১৯৬৭ সালে উত্তম-তনুজা অভিনীত ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ছবিটি বানিয়েছিলেন সুনীল বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জানেন কী অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি ছবিটি সত্যিকারের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। হেন্সম্যান অ্যান্থনি নামক এক পর্তুগিজের জীবনীর উপর ভিত্তি করে লেখা হয় অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির চিত্রনাট্য।
তৃতীয় তথ্য : ১৯৮০ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ‘দেয়া নেয়া’ ছবিটি উত্তম কুমারের কেরিয়ারে অন্যতম হিট ছবি। এই ছবিতে উত্তম-তনুজা জুটি সকলের মন কেড়েছিল। তবে অনেকেই হয়ত জানেন না এই ছবির প্রযোজনা করেছিলেন খ্যাতনামা গায়ক তথা সুরকার শ্যামল মিত্র। প্রযোজক হিসাবে এটাই ছিল তার প্রথম ছবি।
চতুর্থ তথ্য : শোনা যায়, সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘নায়ক’, ‘চিড়িয়াখানা’-র মতো ছবিতে অভিনয় করার পর তার ‘ঘরে বাইরে’ ছবিতেও উত্তম কুমারকে সন্দীপের চরিত্র অভিনয়ের প্রস্তাব দেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তবে তার চরিত্রটি খলনায়কের চরিত্র হওয়ায় উত্তম কুমার এই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। পরে এই চরিত্রে দেখা গিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে।
পঞ্চম তথ্য : ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ‘সপ্তপদী’ ছবিটি এখনও বহু সিনেমাপ্রেমীর মনে গাঁথা হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে এই ছবিতে উত্তম সুচিত্রা বাইকে করে গান গাইতে গাইতে যাওয়ার দৃশ্যটা চিরন্তন একটি রোম্যান্টিক দৃশ্য বললেও ভুল হয় না। তবে অনেকেই হয়ত জানেননা যে, গানটার শুটিংকে একটা সময় বানচাল করে দিতে চাওয়া হয়েছিল। যদিও কারো কোনো কথা না শুনে এগিয়ে যান সুচিত্রা সেন।
আরও পড়ুন : স্ত্রী নাকি ‘রক্ষিতা’? সুপ্রিয়া দেবীকে কি সত্যিই বিয়ে করেছিলেন উত্তম কুমার?
ষষ্ঠ তথ্য : বলিউডের অন্যতম কোরিওগ্রাফার সরোজ খান ১৯৬১ সালে উত্তম কুমারের অন্যতম হিট ছবি ‘সাথী হারা’র একটি গানের কোরিওগ্রাফির জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। তবে সেসময় উত্তম কুমার অসুস্থ ছিলেন। তার জ্বর হওয়ার জন্য তিনি শ্যুটিং সেটে আসতে পারেননি। তাই মহানায়কের সঙ্গে সরোজ খানের কাজ করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
আরও পড়ুন : ছবি পিছু কত টাকা পারিশ্রমিক পেতেন উত্তম কুমার? জানলে চোখ উঠবে কপালে