বর্তমানে বাংলা সিরিয়ালের টপার জি বাংলার পরিণীতা। সিরিয়ালের নায়িকা বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় আনকোরা নতুন মুখ। উদয় প্রতাপ সিংয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন নবাগতা ঈশানী চট্টোপাধ্যায়। তাদের জুটিটাও দর্শকরা খুব পছন্দ করছেন। পারুল তথা ঈশানীর অভিনয় দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে এক লহমায়। সিরিয়ালে পারুল যেমন পুরুলিয়ার খুবই সাধারণ পরিবারের মেয়ে, বাস্তবেও ঈশানী খুবই সাধারণ পরিবার থেকে এসেছেন। তার জীবনের গল্পটা সিরিয়ালের গল্পকেও হার মানাবে।
সম্প্রতি দিদি নাম্বার ওয়ানের মঞ্চে মাকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ইশানী। সেখানেই নিজের জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন নায়িকা। জানান ছোটবেলা থেকে তার মা কীভাবে কষ্ট করে তাকে মানুষ করেছেন। অভিনেত্রীর মা বলেন, “সেলাইয়ের কাজ করে মেয়েকে বড় করেছি। আমার স্বামী কন্ট্রাক্টার হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে প্রতিমাসে কাজ হতো না। কখনো বন্ধ থাকতো। তাই আমি সেলাইয়ের কাজ করে আমার স্বামী আর মেয়েকে দেখতাম।”
ঈশানীও বলেন, “আমার ছোট বেলাটা একটু কঠিনই কেটেছে। ছোটবেলায় যখন থেকে জ্ঞান হয়েছে তখন থেকেই দেখেছি বাবার সব সময় কাজ থাকত না। যখন যখন কাজ পেতেন তখন সেরকম আয়ও হত না। মাকে দেখেছি, মা সেলাইয়ের কাজ করে যা উপার্জন করতেন, তা দিয়েই সংসারের হাল ধরেছিলেন। কিন্তু মা সকাল থেকে উঠে অনেক পরিশ্রম করতেন। সকালে উঠে রান্না করা, আমাকে স্কুল নিয়ে যাওয়া। তাছাড়াও সব কিছু করে যে ভাবে আগলে রেখেছিলেন আমাদের সেটা খুবই মুগ্ধ করত আমাকে।”
আরও পড়ুন : ছেলে-বৌমার হানিমুনে সঙ্গী শাশুড়ি! ফের বিতর্কের মুখে ‘চিরসখা’
আরও পড়ুন : রাতারাতি ‘জগদ্ধাত্রী’ থেকে বাদ! সরে গেলেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য
ঈশানীদের বাড়িটার অবস্থাও ভালো ছিল না। একটা দোকানের পেছনে ছিল তাদের ছোট্ট ঘর। মাথার উপর ফাটা আসবেস্টরের ছাদ। বৃষ্টির সময় জল পড়তো ঘরে। খুব বৃষ্টি হলে বাবা আর মা ফাঁকা জায়গা গুলোর নিচের বালতি রেখে দিতেন। এত কষ্টের মধ্যেও মেয়েকে পড়াশোনা করতে উৎসাহ যুগিয়ে গিয়েছিলেন তার মা ও বাবা। অনেকেই তার মায়ের সেলাইয়ের দোকানে এসে প্রশ্ন করতেন, “তোর মেয়েকে কবে কাঁচি ধরাবি?” মা উত্তর দিতেন, “কাঁচি কেন ধরবে না, কিন্তু সার্জারির রুমে ধরবে।” ঈশানীর মা আসলে চেয়েছিলেন মেয়েকে ডাক্তার হিসেবে গড়ে তুলতে। পড়াশোনাতে খুবই মেধাবী ছিলেন তিনি। স্কুলে ও কলেজে তিনি বরাবর টপার হতেন। সেই মেয়ে এখন অভিনেত্রী। বেঙ্গল টপার সিরিয়ালের নায়িকা।