বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষের সংগীতপ্রেমীদের কাছে অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) অত্যন্ত পছন্দের একজন গায়ক। প্রেমে পড়ার মুহূর্ত হোক বা মন খারাপের মুহূর্ত, যেকোনও সময় যেকোনও বয়সের মানুষের কাছেই অরিজিৎ সিংয়ের গান বড়ই প্রিয়। সংগীতের জাদুগর বলা হয় অরিজিৎকে। ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে সুদূর বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে তার খ্যাতি। তবে এত সফল গায়কের মধ্যে এতটুকু অহংকারও নেই।
বলিউডের বিভিন্ন ছবিতে প্লেব্যাক গাওয়ার পাশাপাশি অ্যালবাম কিংবা লাইভ স্টেজ পারফরমেন্সের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন অরিজিৎ সিং। কলকাতা, মুম্বাই, পুনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাকে নিয়ে সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন হয়। একেকটি লাইভ পারফরমেন্সের জন্য অরিজিৎ সিং নাকি কোটি টাকার উপর পারিশ্রমিক নেন। তার অনুষ্ঠানের টিকিটের সর্বোচ্চ মূল্য লাখের উপরে থাকে।
তবে এত উপার্জন সত্ত্বেও অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করেন অরিজিৎ। বর্তমানে তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৫০ কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। তবুও স্টারডম যেন তাকে ছুঁতেও পারেনি। রাস্তাঘাটে চার চাকা গাড়ি নয়, নিজের দুই চাকার স্কুটি নিজেই চালিয়ে সর্বত্র যাতায়াত করেন অরিজিৎ। তবে তার কাছে কিন্তু রেঞ্জ রোভার, মার্সিডিজ বেঞ্জের মত দামী গাড়িও রয়েছে।
জিয়াগঞ্জের ছেলে অরিজিতের মুম্বাইতে একটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। তবে কাজের সূত্রেই কেবল মুম্বাইতে থাকেন তিনি। বাকি সময়টা তিনি জিয়াগঞ্জে তার নিজের ভিটেতে নিজের পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটান। ৮ কোটি টাকার বাড়ি রয়েছে তার। তবে এত কিছু থাকা সত্ত্বেও খুবই সাধারণ জীবনযাপন করেন তিনি। এত বড় মাপের তারকা হওয়া সত্বেও পায়ে চপ্পল পরে আর ৫ জন অভিভাবকের মত ছেলের স্কুলের সামনে লাইনে দাঁড়াতেও দেখা যায় তাকে।
অরিজিৎ সংগীত জগতে প্রথমে বিশাল-শেখর, প্রীতমের মত মিউজিক ডিরেক্টরদের মিউজিক প্রোগ্রামার এবং প্রডিউসার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর সাংহাই সিনেমাতে ‘দুয়া’, ‘ফির লে আয়া দিল’ গান দুটি গেয়ে তিনি প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে ‘মির্চি মিউজিক বেস্ট আপকামিং মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার’ হিসেবে সম্মানিত হন। ২০১৩ সালে ‘আশিকি ২’ এর ‘তুমহি হো’ গানটি গেয়ে রাতারাতি তার ভাগ্যের মোড় ঘুরে যায়। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
কেরিয়ারের শুরুতে গান গাওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে নিতেন তিনি। বর্তমানে একটি গান রেকর্ড করার জন্য ১৮-২০ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকেন অরিজিৎ। এত টাকা কিন্তু তিনি তার নিজের জন্য কিংবা নিজের পরিবারের জন্য ব্যয় করেন না। সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। সস্তার হোটেল থেকে শুরু করে স্পোকেন ইংলিশের ক্লাস শুরু করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে জিয়াগঞ্জে ১০০ কোটি টাকা দিয়ে তিনি একটি উন্নতমানের স্কুল চালু করতে চান।