শৈশবে বাবা ছেড়ে চলে যান, ‘মা’ সিরিয়ালের ঝিলিকের কাহিনী জানলে চোখে আসবে জল

স্টার জলসার (Star Jalsha) ‘মা’ (Maa) সিরিয়ালটি ছিল চ্যানেলের একটি আইকনিক ধারাবাহিক। জনপ্রিয়তার উপর ভর দিয়ে প্রায় দশ বছর ধরে চলেছিল এই সিরিয়াল‌। ছোট্ট মেয়ে ঝিলিক ছোটবেলায় তার মায়ের কাছ থেকে হারিয়ে যাই এবং এরপর মাকে হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে কাটে তার শৈশব। জানেন কি সিরিয়ালের মত ঝিলিকের বাস্তব জীবনেও এমনই একটা কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল?

ঝিলিক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিথি বসু (Tithi Basu)। তখন সে ছিল ছোট্ট মেয়ে। সেই মেয়েটাই এখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠেছে। ‘মা’ সিরিয়ালে দর্শকরা ছোট্ট ঝিলিককে যতটা কষ্ট করতে দেখেছেন, বাস্তব জীবনেও ঠিক ততটাই কষ্টের মধ্যে মানুষ হয়েছেন তিনি। আর সেই কারণেই হয়ত তিনি ঝিলিকের চরিত্রটাকে এত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলেন।

TITHI BASU1

সম্প্রতি জোশ টকস নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে এসে নিজের জীবনের কঠিন অধ্যায় নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। তিথি জানান তিনি যখন ক্লাস টেনে পড়েন তখন হঠাৎ করেই তার বাবা তাদের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। বাবা চলে যাওয়ার যন্ত্রনার পাশাপাশি লোকের টিটকিরি অবিরাম সহ্য করেছিলেন কিশোরী তিথি।

সেই সময় আবার তার সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা, পড়াশোনার সবথেকে বড় পরীক্ষা। ওই সময় জীবনের বড় পরীক্ষাটাও দিতে হয়েছে তাকে। ছোট্ট মেয়েটিকে ওই বয়সেই বড় হতে হয়েছে। সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল তাকে। বাড়ির ইলেকট্রিক বিল মেটানো থেকে শুরু করে কী রান্না হবে, কী বাজার হবে, সবটাই একা হাতে সামলাতেন তিনি।

TITHI BASU

তিথির পাশে অবশ্য তার মা ছিলেন। কিন্তু স্বামী চলে যাওয়াতে তিনি একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন। সবকিছু তিথিকেই একা মাথায় রাখতে হত। নিজের হাতে মাকে সামলেছেন, নুন-ভাত খেয়ে স্কুলে গিয়েছেন, এরকম দিন গিয়েছে তাদের। তবে বাবা ছিল না বলে তিনি কিন্তু ভেঙে পড়েননি। দ্বাদশ শ্রেণীতে তিনি ৯০ শতাংশ নম্বর নিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন।

TITHI BASU

জীবনে নিজের লড়াইটা একাই লড়েছেন তিথি। তিনি বলেছেন অনেকে হয়ত মনে করেন তার অনেক টাকা, অনেক সুযোগ আছে তার হাতে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ছিল না। বাংলা সিরিয়ালের এমন একজন দাপুটে অভিনেত্রী হলেও অভাব এবং কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। এমনকি বাবা চলে যাওয়াতে তিনি হাসির খোরাক হতেন সকলের কাছে। অনেকেই বলেছে এই মেয়েটার আর কিছু হবে না। কিন্তু সকলের মুখ বন্ধ করে দিয়ে তিথি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।