Laughtersane aka Niranjan Mandal : সমকামীতা, কথাটি আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই জানা। তবে আমরা যতই নিজেদের আপডেটেড করে ফেলি না কেন, আমাদের বাড়িতে যদি কেউ সমকামীতার কথা বলে তাহলে মানতে পারি না আমরা। ঠিক এমনই কাহিনী, সকলের সঙ্গে শেয়ার করলেন নিরঞ্জন মন্ডল (Niranjan Mandal) ওরফে Laughtersane। নিরঞ্জনের হাসির পেছনে যে লুকিয়ে রয়েছে কত যন্ত্রণা সেই গল্পই করবো আজ আমরা।
আজ নিরঞ্জন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো রাজত্ব করছে। এমন কোন ব্যক্তি নেই যে নিরঞ্জনের ভিডিও দেখতে পছন্দ করেন না। Babes কথাটিকে বাবেশ কথায় রূপান্তরিত করে সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। কি নিপুন ভাবে একটি নারী সত্ত্বাকে তিনি তুলে ধরেন সকলের কাছে, কি অসাধারণ তাঁর অভিনয়। এক ঝলক দেখে যেন মনে হবে আপনারই মা কাকিমা কথা বলছে ভিডিওতে।
তবে যে নিরঞ্জন আজ কয়েক হাজার মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে, সেই নিরঞ্জনের জীবন কিন্তু এতটাও সহজ ছিল না। স্কুলে পড়াকালীন নিরঞ্জন বুঝতে পারে মেয়ে নয় বরং ছেলেদের প্রতি তার আকর্ষণ রয়েছে। একটি ছেলের প্রতি তার আকর্ষণের কথা সে যখন অনুভব করতে পারে, তখন লজ্জায় কাউকে বলতে পারে না। একটাই কথা নিরঞ্জনের মাথায় ঘুরতো, কিভাবে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজনকে বোঝাবে সে? কিভাবে সবাইকে বলবে তার সমকামীতার কথা?
অনেক ভেবে নিরঞ্জন স্থির করল একটি ভিডিও তৈরি করবে সে। সেই ভিডিওতে এই সমকামীতার কথা তুলে ধরবে সকলের কাছে। কিন্তু এই ভিডিও করাই কাল হল তার। ভিডিও মারফত নিরঞ্জনের বাবা-মা জানতে পারে ছেলের সমকামীতার কথা। নিরঞ্জনের উদ্দেশ্য সফল হলো না। বাবা মা একমাত্র ছেলেকে বিতাড়িত করে দিলেন বাড়ি থেকে। ঘরছাড়া হয়ে গেল নিরঞ্জন।
কলকাতায় মাসির বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করে নিরঞ্জন। দেখা হয় এক মেকআপ আর্টিস্টের সঙ্গে। সে মেকআপ আর্টিস্টের সঙ্গে নিরঞ্জনের বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গভীর হয় এবং সেই বন্ধুই নিরঞ্জনকে আবার ভিডিও তৈরি করার জন্য উৎসাহিত করে। নিরঞ্জন আবার ভিডিও তৈরি করে এবং প্রতিদিনের ছোটখাটো ঘটনাগুলিকে তুলে ধরার চেষ্টা করে ভিডিওর মাধ্যমে। এইভাবে একদিন একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় আর বাকিটা ইতিহাস।
আরও পড়ুন : কোটিপতির বউ হতে বুড়োকে বিয়ে! জুহি চাওলার স্বামী আসলে কে? রইলো তার আসল পরিচয়
আরও পড়ুন : জন্মের পর সংসার ছাড়েন মা, বাবা মনে করতেন ‘অপয়া’! সিনেমা থেকে কম নয় গোবিন্দার জীবন
যে নিরঞ্জনকে এক সময় ঘরছাড়া করতে হয়েছিল সেই নিরঞ্জনই আজ প্রত্যেক ঘরে ঘরে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেছে। নিজের কষ্টের কথা অন্যভাবে তুলে ধরে আজ লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করছে সে। বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে নিজের যন্ত্রনাকেও যে হাসিতে রূপান্তরিত করে ফেলা যায় তা আমরা শিখেছি নিরঞ্জনের কাছ থেকেই।