প্রসেনজিৎ, তাপস পাল, চিরঞ্জিত চক্রবর্তীদের মধ্যে অভিষেক চ্যাটার্জীও টলিউডের একজন দাপুটে অভিনেতা ছিলেন তার আমলে। তার অভিনয় দক্ষতা এবং হ্যান্ডসাম চেহারা তাকে তারকা করে তুলেছিল আটের দশকে। বহু মহিলা তার প্রেমে পাগল ছিলেন সেই সময়। আর তিনি প্রেমে পড়েছিলেন তার থেকে বয়সে বড় এক অভিনেত্রীর। সেই অভিনেত্রীর নাম ছিল রাজেশ্বরী রায় চৌধুরী। বিয়ে না করেই রাজেশ্বরীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকতেন অভিষেক।
অভিষেক চ্যাটার্জী এবং রাজেশ্বরী রায়চৌধুরীর প্রেম
টলিউডে পা রাখতেই রাজেশ্বরীর প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন অভিষেক। আবার কেউ কেউ বলেন অভিষেক নাকি রাজেশ্বরীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। কারণ ওই সময় রাজেশ্বরী সফল অভিনেত্রী ছিলেন। তাই তার সাফল্যকে হাতিয়ার করে অভিষেক টলিউডে ওপরে উঠতে চেয়েছিলেন। তবে সে যাই হোক, দুজনের প্রেম জমে উঠেছিল। অভিষেক রাজেশ্বরীকে ডাকতেন রাজু নামে আর রাজেশ্বরী তাকে মিঠু নামে ডাকতেন। দুজনের প্রেম এতটাই গাঢ় ছিল যে তারা বিয়ে না করেই একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
আটের ওই দশকে লিভ ইন এতটা প্রচলিত ছিল না। তাই সেই সময় বয়সে বড় নায়িকার সঙ্গে অভিষেক চ্যাটার্জীর সম্পর্ক নিয়ে বেশ চর্চা হয়েছিল। রাজেশ্বরী ছিলেন বিখ্যাত কবি কবিতা সিংহর মেয়ে। তিনি বিয়েও করেছিলেন। প্রথম বিয়ে থেকে তার তিনটি সন্তান ছিল। বলা হয় অভিষেকের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই নাকি স্বামীর সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। পরে সংসার ছেড়ে দিয়ে অভিষেকের হাত ধরে দক্ষিণ কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে চলে আসেন রাজেশ্বরী।
আরও পড়ুন : প্রসেনজিৎকে নয়, এই তারকা ক্রিকেটারকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন দেবশ্রী রায়
আরও পড়ুন : সৌমিত্র ছেড়ে দেওয়া ছবি করেই অমিতাভ আজ এত বড় সুপারস্টার! কী ছিল সেই ছবি?
কেন ভেঙে যায় অভিষেক এবং রাজেশ্বরীর প্রেম?
তবে এত প্রেম সত্ত্বেও একটা সময় পর দুজনের সম্পর্কে ফাটল ধরে। রাজেশ্বরীকে ছেড়ে অভিষেক অন্য একটি ফ্ল্যাটে চলে যান। নতুন নতুন নায়িকাদের সঙ্গে জড়াতে লাগলো তার নাম। আর এই ধাক্কা নিতে পারেননি রাজেশ্বরী। তিনি একা থাকতে থাকতে মদের নেশা করতে শুরু করেন। প্রবল হয়ে গিয়েছিল যে লিভার সিরোসিস রোগ ধরা পড়ে রাজেশ্বরীর। সেই সঙ্গে হেপাটাইটিস বি রোগেও আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। শেষের দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে খুবই কম বয়সে রাজেশ্বরী রায় চৌধুরীর মৃত্যু হয়।