JU Student Death : গত ৯ ই আগস্ট যাদবপুর ইউনিভার্সিটি (Jadavpur University) -র মেইন হোস্টেলের তিন তলা থেকে নিচে পড়ে যায় প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুন্ডু (Swapnadeep Kundu)। ১০ ই আগস্ট ভোরবেলা তার মৃত্যু (Jadavpur University Student Death) হয়। তবে এই মৃত্যু কি আটকানো যেত? এই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারী অফিসারদের। অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর আহত স্বপ্নদীপ যখন কাতড়াচ্ছিল তখন নাকি হোস্টেলের ঘরে প্রাক্তনীদের ‘জরুরী বৈঠক’ শুরু হয়ে যায়। পুলিশের কাছে কাকে কী বলতে হবে এসব পাখি পড়ানোর মত শিখিয়ে দেওয়া হয়।
আহত ছাত্রকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠানোর বদলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হোস্টেলের আবাসিকদের মধ্যে বেশিরভাগই তখন জরুরী বৈঠকে বসেন। মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীর সঙ্গে উঠে আসছে জয়দীপ ঘোষ নামের আরেক প্রাক্তনীর নাম। তিনি বিক্রমগড়ের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ঘটনার পর তাকে ফোন করা হয়। তড়িঘড়ি তিনি ছুটে আসেন হোস্টেলে। তার নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় হোস্টেলের গেট।
Jadavpur University Student Death
পুলিশের অনুমান, জয়দীপ বিক্রমগড় থেকে মেন হোস্টেল আসা পর্যন্ত আহত ছাত্র মাটিতেই পড়েছিল। তাকে যদি সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হত তাহলে হয়ত প্রাণে বেঁচে যেত স্বপ্নদীপ। হোস্টেলের আবাসিকদের দাবি, জয়দীপ এবং কয়েকজন ‘দাদা’র নির্দেশে হোস্টেলে দরজা বন্ধ হয়। এমনকি পুলিশকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জয়দীপ ছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি ‘দাদা’দের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
যাদবপুর ইউনিভার্সিটির ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এই পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়ে গিয়েছেন খাতায়-কলমে। তবে তারা হোস্টেলে থাকছিলেন বেআইনিভাবে। পাশ করে যাওয়ার পরেও কীভাবে প্রাক্তনীরা হোস্টেলে থাকতে পারেন সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুধু তাই নয় হোস্টেলে তোলাবাজি, র্যাগিং, জুনিয়রদের উপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগের আঙুল রয়েছে এদের দিকেই।
গ্রেফতার হওয়া এই ছাত্ররা হলেন, সৌরভ চৌধুরী (প্রাক্তনী, গণিত বিভাগ), মনোতোষ ঘোষ (সমাজবিদ্যা, দ্বিতীয় বর্ষ), দীপশেখর দত্ত (অর্থনীতি, দ্বিতীয় বর্ষ), মহম্মদ আরিফ (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), আসিফ আফজ়ল আনসারি (চতুর্থ বর্ষ, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), অঙ্কন সরকার (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), অসিত সর্দার (প্রাক্তনী), সুমন নস্কর (প্রাক্তনী), সপ্তক কামিল্যা (প্রাক্তনী), শেখ নাসিম আখতার (রয়াসন, প্রাক্তনী), হিমাংশু কর্মকার (গণিত, প্রাক্তনী) এবং সত্যব্রত রায় (কম্পিউটার সায়েন্স)।
আরও পড়ুন : প্রকাশ্যে নগ্ন করে চলে অত্যাচার! মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগে ঠিক কী কী ঘটেছিল স্বপ্নদ্বীপের সঙ্গে?
এদিকে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথমবারের মত সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরী। তার পাল্টা দাবি স্বপ্নদীপ বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল। তার সঙ্গে কোনও র্যাগিং হয়নি। তাকে মানসিক অত্যাচার করা হয়নি। সৌরভের দাবী তারা আসলে গরিব বলে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তারা কোনও অন্যায় করেননি। ওই রাতে জরুরী বৈঠক কেন হয়েছিল সেটা তার জানা নেই।
আরও পড়ুন : ঝাঁপ দিয়েছিল, নাকি ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় স্বপ্নদীপকে? অবশেষে মুখ খুলল যাদবপুর কাণ্ডের ‘মাথা’ সৌরভ