বীরভূমের দুবরাজপুরের কুড়ালজুরি গ্রামের ভুবন বাদ্যকরকে ভুবন বাদ্যকর (Bhuban Badyakar) এখন ‘বাদাম কাকু’ (Badam Kaku) নামে চেনেন সকলে। ‘কাঁচা বাদাম’ (Kacha Badam) গান গেয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিলেন তিনি। অবশ্য তিনি কোনও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গায়ক নন, তিনি ছিলেন সাধারণ এক বাদাম বিক্রেতা। বাদামের ফেরি করার সময় নিজের মত করে কাঁচা বাদাম নিয়ে গান বেঁধেছিলেন তিনি। তার সেই গান সোশ্যাল মিডিয়ার বাসিন্দাদের খুবই পছন্দ হয়।
সেই এক কাঁচা বাদাম গানের সুবাদে গত দুই বছর ধরে অনেক খ্যাতি, নাম-যশ এবং অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। এই গান তাকে রাতারাতি বিখ্যাত করে তোলে। অথচ সেই গানই এখন তার চরম দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গানের উপর কপিরাইট চালু হওয়াতে নিজের গান গেয়ে আর উপার্জন করতে পারছেন না তিনি। এদিকে যা কিছু পেয়েছিলেন এই গানের সুবাদে, সেইসব টাকাও প্রায় শেষের মুখে।
ভাইরাল হওয়ার পর হাতে কিছু টাকা জমতেই বাদাম কাকু একে একে বাড়ি থেকে গাড়ি পেয়ে যান। এমনকি গান গেয়ে আইফোন উপহার পান তিনি। বেশ রূপকথার মতই এগোচ্ছিল তার দিনগুলো। দেশে বিদেশে প্রচুর শো করে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গোল বাঁধলো ‘কাঁচা বাদাম’ গানটিকে গোধূলিবেলা মিউজিকের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার পর থেকেই।
ভুবন বাদ্যকর জানিয়েছেন ওই সংস্থার কর্ণধার গোপাল ঘোষ তার কাছ থেকে ‘কাঁচা বাদাম’ গানটি কেনার সময় বলেছিলেন তিনি প্রত্যেক মাসে ৪০ হাজার টাকা করে দেবেন। কোনও মাসে হয়ত একটু কম হতে পারে। এই বলে প্রথম মাসে তিনি ৩৯ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই একবারই তাকে টাকা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাদাম কাকু।
বাদাম কাকুর অভিযোগ গানটি বিক্রি করার পর তিনি একবার শুধু ৩৯ হাজার টাকা ছাড়া আর কোনও টাকা পাননি। প্রথমবার পাওয়া সেই ৩৯ হাজার টাকা এখন শেষের মুখে। বাদাম কাকুর হাতে এখন কোনও টাকা নেই। কপিরাইটের জন্য তিনি নিজের গানটা গাইতে পারছেন না কোথাও। কাজেই তার হাতে এখন শো আসাও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
এমতাবস্থায় সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন বাদাম কাকু। তার কাতর আর্তি, “আমায় বাঁচান, যে কটা টাকা আছে সেটা দিয়ে সংসার চলবে না।” সোশ্যাল মিডিয়াতেও এখন তাকে নিয়ে মাতামাতি কমে গিয়েছে। তিনি এখন কী করবেন, কীভাবে রোজগার করে পরিবারের মুখে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দেবেন সেই চিন্তায় পড়েছেন। তার অভিযোগ শুনে পুলিশ এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।