অবাঙালি হয়েও বাংলা সিনেমার সুপারস্টার, কীভাবে টলিউডের বস হয়ে উঠলেন জিত?

বর্তমানে টলিউডের (Tollywood) প্রথম সারির সুপারস্টার বললে প্রথমেই দেব প্রসেনজিতের পাশাপাশি জিতের (Jeet) নাম উঠে আসবে। দীর্ঘ প্রায় ২ দশক ধরে তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন। অথচ জন্মসূত্রে তিনি হলেন অবাঙালি। সিন্ধি পরিবারের ছেলে জিতেন্দ্র মাদনানি থেকে জিৎ হয়ে ওঠার এই যে স্ট্রাগল সেই সম্পর্কে সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন অভিনেতা।

২০০২ সালে ‘সাথী’ সিনেমা মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টলিউডে জিতের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ইন্ডাস্ট্রিতে দেখতে দেখতে ২১ বছর পার করে ফেললেন জিৎ। তবে তার এই কেরিয়ারের সফরটা ততটা মসৃণ ছিল না প্রথম দিকে। আসলে তিনি বাংলা বুঝতে পারলেও বাংলা ভাষাতে প্রথম দিকে কথা বলতে পারতেন না।

JEET

জিতের বাংলা বলার মধ্যে একটা অবাঙালি টান ছিল। তাই শুটিং করার সময় প্রযোজক এবং পরিচালকরা তাকে বলে দেন তিনি এই ছবির ডাবিং করতে পারবেন না। কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না জিৎ। টলিউডে নিজের প্রথম ছবি ডাবিং তিনি অন্য কাউকে দিয়ে করাতে দিতে চাননি। তাই তাকে বাংলাটা ভালভাবে শিখতে হয়েছিল।

এই সম্পর্কে ঋতুপর্ণা ঘোষের একটি টক শোয়ে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন ‘সাথী’র পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী এবং প্রযোজক মহেন্দ্র সোনি ও শ্রীকান্ত মেহতারা তাকে বলেছিলেন অন্য কাউকে দিয়ে তারা এই ছবির ডাবিং করাতে চান। কিন্তু জিৎ তখন তাদের কাছ থেকে একটা সুযোগ চেয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “একদিন আমাকে চান্স দিও, না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে করিও।”

JEET

এরপর জিৎ ডাবিং স্টুডিওতে গিয়ে অন্যদের ফলো করতে থাকেন। শুটিং শেষ করার পর আর ডাবিং এর মাঝে তিনি বাংলা খবরের কাগজ পড়তেন এবং সেটা রেকর্ড করতেন। শুরুতে তিনি যখন তার রেকর্ডিং শুনতেন তখন তার মনে হত এটা বাঙালির গলা নয়। কিন্তু তিনি হাল ছেড়ে না দিয়ে চেষ্টা করে যেতে থাকেন এবং একসময় তিনি সফল হন।

JEET

একদিন বাড়িতে তিনি যখন রেকর্ডিং শুনছিলেন তখন তার জেঠু এসে তাকে প্রশ্ন করেন বাড়িতে বাংলা খবর কে শুনছে? জিৎ সেদিন বুঝতে পারেন এতদিনে তিনি সফল হয়েছেন। এখনও সময় পেলেই বাড়িতে জোরে জোরে উচ্চারণ করে বাংলা বই এবং খবরের কাগজ পড়তেন জিত। ভবিষ্যতেও তিনি এই অভ্যাস চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

CHENGIZ

উল্লেখ্য শীঘ্রই মুক্তি পাবে জিতের ছবি ‘চেঙ্গিজ’। এই কমার্শিয়াল ছবিটি বাংলা ছাড়া ও হিন্দি ডাবিং ভাষাতে মুক্তি পাবে। এই প্রথম কোনও হিন্দি ছবি ডাব করে সারা দেশে মুক্তি পেতে চলেছে। জিতের এই ছবি সফল হলে কেজিএফ, পুষ্পার মত বাংলা আঞ্চলিক ভাষার সিনেমাও প্যান ইন্ডিয়া বক্স অফিসে রাজত্ব করবে বলে আশাবাদী নির্মাতারা।