বলিউডে (Bollywood) এমন অনেক প্রতিভাবান অভিনেতার উত্থান হয়েছিল যারা একটি কিংবা দুটি সিনেমাতে অভিনয় করার পর হঠাৎ করেই ইন্ডাস্ট্রি থেকে কোথায় যেন গায়েব হয়ে যায়। তেমনই একজন অভিনেতা ছিলেন বাঙালি অভিনেতা প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায় (Priyanshu Chatterjee)। হ্যান্ডসাম চেহারা এবং অভিনয় ক্ষমতার জেরে খুব সহজেই তিনি নজর কেড়েছিলেন দর্শকদের। তারপরেও তিনি হারিয়ে গেলেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
১৯৭৩ সালে একটি বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন প্রিয়াংশু। তবে বাংলা থেকে দূরে দূরেই থেকেছেন তিনি। তিনি বেড়ে ওঠেন দিল্লিতে। সুদর্শন চেহারা থাকার কারণে তিনি মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেন। অসংখ্য নামিদামি বিজ্ঞাপনী ব্রান্ডের প্রচারের মুখ হয়েছিলেন তিনি। তারপর তার হাতে আসে বলিউডের সুযোগ। ২০০১ সালে অনুভব সিনহার ‘তুম বিন’ ছবির হাত ধরে তিনি বলিউডে পা রাখেন।
প্রথম ছবিতেই কার্যত কিস্তিমাত করে ফেলেছিলেন অভিনেতা। তার ছবিটি বক্স অফিসে দারুণ সফল হয়। এই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন প্রিয়াংশুর জন্য বলিউডের রাস্তাটা প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে। অভিনেতা সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে বলে ধরেই নিয়েছিলেন তার ভক্তরা। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। প্রথম ছবি হিট হলেও বলিউডে জায়গা পেলেন না প্রিয়াংশু।
প্রথম ছবির পর অনুভব সিনহার পরবর্তী ছবি ‘আপকো পেহেলে কাহি দেখা হে’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এই ছবিটিও দুর্দান্ত সফল হয়। কিন্তু পরপর দুটি ছবি হিট হলেও তখনকার দিনের কোনও নামী প্রযোজক প্রিয়াংশুর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন না। ইন্ডাস্ট্রিতে একসময় নেপোটিজমের শিকার হতে হয়েছিল তাকে।
ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের সঙ্গে প্রিয়াংশু ‘দিল কা রিস্তা’ নামের একটি ছবিতে কাজ করেন। সেই সঙ্গে পিঞ্জর, বো, জুলি, কই মেরে দিল মে হে নামের বেশ কিছু ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু তার কোনও ছবি এরপর আর চলেনি। এরপর নায়ক থেকে সোজা পার্শ্ব চরিত্র, অতিথি শিল্পী হিসেবে একাধিক ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি।
এদিকে নায়কের চরিত্র ছেড়ে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার জন্য ধীরে ধীরে তার হাতে অভিনয়ের সুযোগ কম আসতে থাকে। কিন্তু তিনি ভেঙে না পড়ে ২০০৭ সালে জিতের বিধাতার লেখা ছবিতে খলনায়ক হয়ে টলিউডে পা রাখেন। এরপর মনের মানুষ, ভোরের আলো, ইতি মৃণালিনী, অচেনা উত্তম ছবিতে কাজ করেন। সেই সঙ্গে রাজধানী এক্সপ্রেস, বাদশাহ, হেট স্টোরি ৩ ছবিতেও কাজ করেন। তবে একসময়ের সুপারহিট নায়ককে এখন পার্শ্বচরিত্রেই কাজ করে খুশি থাকতে হচ্ছে।