মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরোতেই নায়িকা, ‘খেলনা বাড়ি’র মিতুলের জীবন সিনেমার থেকে কম নয়

Riya Chatterjee

Published on:

এখন জি বাংলাতে (Zee Bangla) অন্যতম জনপ্রিয় একটি ধারাবাহিক হল ‘খেলনা বাড়ি’ (Khelna Bari)। ধারাবাহিকের নায়িকা আরাত্রিকা মাইতি (Aratrika Maity), ইন্ডাস্ট্রির পরিভাষায় তিনি তথাকথিত সুন্দরী নন। তবে তার অভিনয় দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে প্রতিবার। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন তথাকথিত সুন্দরী না হয়েও অভিনেত্রী হওয়া যায়। তার এই অভিনয় যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল জানেন?

ঝারগ্রামের মেয়ে আরাত্রিকা অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতাতে এসেছিলেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েটি খুব ছোট বয়সেই তার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিল। মায়ের গয়না বিক্রি করে লকডাউনে কষ্ট করে গাড়ি ভাড়া করে তিনি প্রথমবার অডিশন দিতে এসেছিলেন। সে সময় অডিশনে তার আগে এবং পেছনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরী মেয়েদের দেখে তার বিশ্বাস টলে গিয়েছিল।

KHELNA BARI

কিন্তু অভিনেত্রী হেরে যাননি। সেদিন অডিশন দিয়ে বাড়ি ফিরতেই রাতে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয় সিরিয়ালের জন্য তাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে তার চোখের সামনে সব কিছু বদলাতে শুরু করে। তবে ‘খেলনা বাড়ি’ আরাত্রিকার প্রথম অভিনয় নয়। মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরোতেই তিনি ‘করুণাময়ী রানী রাসমণি’ সিরিয়ালের ছোট্ট একটি চরিত্রে মাত্র তিন দিনের জন্য অভিনয়ের সুযোগ পান।

যেদিন মাকে দেওয়া বাবার প্রথম উপহার সোনার সেই আংটি বিক্রি করে টাকা জোগাড় করতে হয়েছিল কলকাতায় পৌঁছানোর জন্য, সেই দিনটার কথা ভুলতে পারেন না আরাত্রিকা। আজ জি বাংলার নায়িকা হওয়ার সুবাদ তার কাছে নাম, যশ, প্রতিপত্তি, অর্থ সবই রয়েছে। কিন্তু ফেলে আসা দিনের কথা স্মরণ করলে কান্নায় তার চোখ ভিজে আসে।

KHELNA BARI

সম্প্রতি জি বাংলার তরফ থেকে ’ঘরে ঘরে জি বাংলা’র টিম পৌঁছে গিয়েছিল আরাত্রিকার কলকাতার ভাড়া বাড়িতে। সেখানেই তিনি তার জীবনের এই সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। আরাত্রিকা এখন তার মা এবং বাবাকে নিয়ে কলকাতাতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন। ধীরে ধীরে তিনি তার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করছেন। এরই মধ্যে একটি গাড়িও কিনেছেন তিনি। ভবিষ্যতে কলকাতার মাটিতে একটা বাড়িও কিনতে চান তিনি।

KHELNA BARI

‘খেলনা বাড়ি’র মিতুল পালের চরিত্রে আরাত্রিকাকে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হয়েছে। কিছুদিন আগেই গল্পের ট্র্যাক অনুযায়ী মিতুল ওরফে আরাত্রিকাকে মাটির তলায় চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। সেই অবস্থায় তাকে দেড় ঘন্টা থাকতে হয়েছিল। ওই সময় পরিচালক নিজে এসে তাকে জল খাইয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। শুটিং সামলেও মাধ্যমিকে ৯৩% নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। আর এখন ডিসট্যান্সে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছেন। সামনেই তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে।