মুম্বাইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে যেদিন বলিউড (Bollywood) অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ, সেদিন খবর পেতেই চমকে উঠেছিল গোটা দেশ। সুশান্তের মৃত্যুর পর প্রথমেই গোটা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে পুলিশ। তারপর অবশ্য আসল তদন্তে জল বহুদূর গড়িয়েছে। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৩০ টা মাস। সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তের ভার সিবিআইয়ের উপর দিয়েও লাভ হয়নি কিছুই।
আড়াই বছর কেটে গেলেও সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্য মামলা যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে আজও। বরং এতদিন বাদে সুশান্তের ময়না তদন্তের সঙ্গে জড়িত এক মর্গ কর্মীর বয়ানে ঘুরে গেল তদন্তের মোড়। একটা সময় পর্যন্ত সিবিআই মেনেই নিয়েছিল সুশান্ত আত্মহত্যা করেছেন। তবে ওই মর্গকর্মীর দাবি তিনি নাকি সুশান্তকে প্রথম দেখেই বুঝেছিলেন তাকে খুন করা হয়েছে।
কেন এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করছেন তিনি? রুপ কুমার শাহ নামের ওই ব্যক্তির দাবি তিনি নাকি সুশান্তের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখেছিলেন। তা সর্বাঙ্গে ছিল অজস্র সূঁচের ক্ষতচিহ্ন। এমনকি সুশান্তের চোখে নাকি সজোরে ঘুঁষি মারারও আঘাত ছিল। তার গলাতে ছিল কাটা দাগ যা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দেয়। আরও একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি। সুশান্তের একটি পা নাকি বাঁকা এবং ভাঙ্গা ছিল, সেটাও তার নজরে পড়ে।
তবে সুশান্তের সঙ্গে এত কিছু ঘটে থাকলে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কেন উঠে এল না সেই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে গোটা দেশকে। ওই মর্গকর্মীর বিস্ফোরক দাবি নাকি সঠিকভাবে ময়না তদন্তই হয়নি সুশান্তের। ময়না তদন্তের সময় ভিডিও করা আবশ্যক। তবে সুশান্তের ক্ষেত্রে তার উচ্চপদস্থ কর্তারা শুধু তার ছবি তুলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি ভিডিও করার কথা বললেও তা না করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই তার অনুরাগীরা এই মৃত্যুটিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি। প্রথম থেকেই তারা দাবি করে আসছেন সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে তাকে। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়ে তার প্রাক্তন প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীকেও গ্রেফতার করা হয়। যদিও মাদক মামলার দায়ে গ্রেফতার হয়ে রিয়া পরে জামিন পেয়ে যান।
এদিকে আড়াই বছর বাদে মর্গ কর্মীর চাঞ্চল্যকর বয়ান সুশান্ত মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিল। সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং সোশ্যাল মিডিয়াতে আক্ষেপ উজার করে দিয়ে লিখেছেন যদি এই বক্তব্যের মধ্যে এক কণাও সত্যি থাকে তাহলে তা খতিয়ে দেখা হোক। সিবিআই এখনও পর্যন্ত এই মামলার নিষ্পত্তি করতে পারল না। এটা ভাবলেই তাদের পরিবারের বুকে ব্যথা করে।