ছোট বয়সে ছেলেমেয়েদের কাছে একমাত্র আশ্রয় তাদের বাবা-মাই হয়ে থাকেন। তবে সেই ছেলেমেয়েরাই বড় হওয়ার পর আপন আপন জীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তখন অনেকেই দিনে অন্তত একবার বাবা-মায়ের খোঁজখবর নেওয়ার সময় পান না। কাজের সূত্রে হোক বা পড়াশোনা সূত্রে সন্তানকে দূরে পাঠালে একাকিত্বে ভুগতে থাকেন বাবা-মা। খোদ বলিউড (Bollywood) তারকা শাহরুখ খানের (Shah Rukh Khan) জীবনও এর ব্যতিক্রম নন। সন্তানদের নিয়ে এই আক্ষেপ তার মনেও রয়েছে।
তিন সন্তানের বাবা শাহরুখ বিশেষত তার মেয়েকে নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। সম্প্রতি জেড্ডায় রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়ে তিনি তার মেয়ে সুহানা খানের (Suhana Khan) ব্যাপারে মুখ খোলেন। প্রাণের চেয়েও প্রিয় মেয়ের প্রতি বেশ অভিমানী বাবা শাহরুখ বলেছেন তার মেয়ে যখন বিদেশে যান তখন বাবা-মায়ের কথা ভুলেই যান। একটা ফোন করে খোঁজখবরও নেন না তিনি।
এমনটা ঘটেছিল সুহানা যখন প্রথমবার নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন তখন। মেয়ের জন্য সেই সময় কোনও ছবির কাজ হাতে নেননি শাহরুখ। তিনি ভেবেছিলেন নিউইয়র্কে গিয়ে হয়ত সুহানার একা লাগতে পারে। তাই মেয়ে একবার ফোন করলেই তিনি ছুটে যাবেন নিউইয়র্কে। তবে তিনি যা ভেবেছিলেন হয়েছিল ঠিক তার উল্টোটা। মেয়ে বিদেশে গিয়ে একবার ফোনও করেনি বাবাকে। শেষমেষ শাহরুখকেই ফোন করতে হয়েছিল।
শাহরুখ তার কন্যাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেছিলেন এবার কি তিনি কাজ শুরু করতে পারেন? শুনেই সুহানা আকাশ থেকে পড়েন। তিনি উলটে কাজ বন্ধ করে বাবার বাড়িতে বসে থাকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন। শাহরুখ বলেন তিনি ভেবেছিলেন সুহানা তাকে ফোন করবেন। মেয়ে বিদেশে রয়েছে, মেয়ের প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে যাতে তিনিও নিউইয়র্কে ছুটে যেতে পারেন তার জন্য কাজের প্রস্তাব ফিরিয়ে বাড়িতেই বেকার বসেছিলেন শাহরুখ।
এদিকে শাহরুখ কন্যা তখন বিদেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে ব্যস্ত। মেয়ের আচরণে মনে মনে বেশ আঘাত পেয়েছিলেন কিং খান। উল্লেখ্য, খুব তাড়াতাড়ি ‘দ্য আর্চিস’ ছবির হাত ধরে শাহরুখ কন্যা বলিউডে পা রাখবেন। এই ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগস্ত নন্দা আর্চির ভূমিকায় রয়েছেন। ভেরোনিকা নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুহানা। ছবিটি মুক্তি পাবে নেটফ্লিক্সে।
মেয়ে প্রথমবার বলিউডে পা রাখছে। বাবা হিসেবে শাহরুখ তাকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘সুহানা মনে রাখবে তুমি কোনোদিন নিখুঁত হতে পারবে না। কিন্তু নিখুঁতের কাছাকাছি হওয়ার চেষ্টা করো। অভিনেতা হিসাবে দয়ালু হবে। সমালোচনা বা প্রশংসা ধরে রাখার জিনিস নয়। পর্দায় তোমার যে অংশটা রয়ে যাবে সেটাই তোমার। তুমি অনেকটা রাস্তা এসেছো। কিন্তু মানুষের হৃদয় পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তাটা অন্তহীন। যতজনের মুখে পারো হাসি ফোটাও। লাইট ক্যামেরা আর অ্যাকশন থাকুক।’