এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সেলিব্রিটিদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হলেন উরফি জাভেদ (Urfi Javed)। যদিও তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে সালমান খানের বিগ বস ওটিটিতে অংশ নেওয়ার পরেই। তিনি স্বঘোষিত ফ্যাশন ডিজাইনার। অদ্ভুত অদ্ভুত পোশাক পরে প্রকাশ্যে এসে বারবার চমকে দেন উরফি। সোশ্যাল মিডিয়াতে উদ্ভট সাজপোশাকের জন্য বহুবার ট্রোল্ড হতে হয়েছে তাকে। অনেকের কাছে তিনি হাসির খোরাকও হয়েছেন।
নিন্দুকরা বলেন, উদ্ভট পোশাক পরে শরীর দেখানোই উরফির কাজ। তাই তো কাটাছেঁড়া পোশাক পরে বারবার সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম দখল করেন তিনি। কেউ কেউ আবার তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তবে উরফির ছোটবেলা কেমন ছিল, তিনি কোনও পরিবেশের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছেন, কোন কোন কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন তাকে হতে হয়েছে তা জানলে তার প্রতি আলাদাই সহানুভূতি জন্মাবে।
উরফির ছোটবেলাটা মোটেও সুখের ছিল না। নিজের পরিবারেই নিরাপদ ছিলেন না তিনি। তাই তাকে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। তিনি একবার একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বাড়িতে নিজের বাবার হাতেই অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। তার লড়াইয়ে পরিবারকে কখনও তিনি পাশে পাননি। এমনকি মাত্র ১১ বছর বয়সেই তার ছবি নাকি অ্যাডাল্ট সাইটে পোস্ট করে দেওয়া হয়।
উরফি বলেন, তার বাবা টানা ২ বছর ধরে তার উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন। মানুষ তাকে এত খারাপ নামে ডাকত যে তিনি নিজের নামটাই ভুলে যেতে বসেছিলেন। তার কথায়, “আমার উপর যখন আমার বাবা অত্যাচার করত তখন আমার কোনও কথা বলার অধিকারটুকুও ছিল না। আমায় চিরকাল বলা হত, এই ধরনের মেয়েদের কথা বলার কোনও অধিকার নেই। সব সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র পুরুষরাই নিতে পারে।”
তবে একদিন আর সহ্য করতে না পেরে উরফি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। তখন অবশ্য তার সঙ্গেই ঘর ছেড়েছিলেন তার দুই বোন। উরফির বাড়িতে বাবা-মা এবং আরও দুই ভাই-বোন ছিল। বাড়ি থেকে পালিয়ে উত্তর প্রদেশ থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে প্রায় এক সপ্তাহ একটা পার্কে দিন কেটেছিল তাদের। এরপরই উরফির জীবনের এক নতুন মোড় শুরু হয়।
অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটি কল সেন্টারে কাজ পেয়েছিলেন তিনি। তারপর দিল্লি থেকে তিনি মুম্বাইতে চলে আসেন। সেখানে একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের সহকারী হিসেবে তার কাজ শুরু হয়। ধীরে ধীরে তার জীবনটাও বদলাতে শুরু করে। এরপর ‘তেরি মেরি ফ্যামেলি’ ধারাবাহিকে অভিনয় করার সুযোগও এসে যায় তার হাতে। এখন তিনি অবশ্য অভিনয় ছেড়ে পুরোপুরি ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের উপর মন দিয়েছেন।