প্রায় দু বছর হয়ে গিয়েছে, প্রয়াত হয়েছেন টলিউডের (Tollywood) জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল (Tapas Paul)। মানুষ চলে যায় ঠিকই কিন্তু তাদের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার স্মৃতি আজীবন বেঁচে থাকে কাছের মানুষদের মনে। তাপস পালের মৃত্যুটা এখনও ঠিক মেনে নিতে পারেন না তার ভক্তরা। একইভাবে তার পরিবার এবং সহকর্মী বন্ধুদের কাছেও তার মৃত্যুটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। তার মৃত্যুতে আক্ষেপ এখনও মেটেনি তার সতীর্থ চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর (Chiranjit Chakraborty)।
খুব কম বয়সে, বলতে গেলে অকালেই প্রয়াত হয়েছেন বাংলার এই জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি শুধু অভিনেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন বর্তমান রাজ্য শাসক দলের একজন দাপুটে নেতা। অভিনয় করে দর্শকদের থেকে তিনি প্রচুর ভালবাসা পেয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক আঙিনায় কিছু বেফাঁস মন্তব্যের জেরে শেষের দিনগুলোতে তাকে অত্যন্ত দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
তৎকালীন সময়ের দর্শকদের অতি পছন্দের অভিনেতা ছিলেন তাপস পাল। চিরঞ্জিত, তাপস পাল, অভিষেক প্রসেনজিতদের নিয়েই তখন ছিল টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। প্রসেনজিতের সঙ্গে তাপস পালের বন্ধুত্বটা ছিল খুবই গভীর। প্রসেনজিৎ, তাপস পাল এবং চিরঞ্জিত একসঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তাপস পালকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিবিহ্বল হয়ে পড়েন চিরঞ্জিত।
চিরঞ্জিতের কথায় তৎকালীন সময়ে তাদের তিনজনের মধ্যে তাপস পাল ছিলেন সব থেকে বেশি সফল এবং সুপারস্টার। ‘দাদার কীর্তি’, ‘গুরুদক্ষিণা’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ইত্যাদি বহু ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন টলিউডকে। এমনকি নব্বইয়ের দশকের পরেও দেব, জিত, অঙ্কুশদের সময়েও তিনি চুটিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন পর্দায়।
ভক্তরা মনে করেন তাপস পাল যদি অভিনয় নিয়ে থাকতেন তাহলে হয়ত তার এত তাড়াতাড়ি এত করুণ পরিণতি হত না। রাজনীতিতে পা রাখায় তার কেরিয়ার, ভাবমূর্তি, জনপ্রিয়তা সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তীও। তাপস পালের কিছু সিদ্ধান্তকে ভুল বলে মনে করেন চিরঞ্জিত। তিনি মনে করেন নিজের দোষেই তাপস পাল নিজের জায়গা হারিয়ে ফেলেন।
তাছাড়া চিরঞ্জিত মনে করেন তাপস পালের এই পরিণতির পেছনে নিয়তিও কিছুটা দায়ী। তাপস পাল নিজেও বুঝতে পেরেছিলেন তিনি যে মন্তব্যটি করেছিলেন সেটা ছিল অনেক বড় ভুল। তবে তিনি বারবার ক্ষমা চেয়েও নিজের কলঙ্ক মেটাতে পারলেন না। তিনি ছিলেন সুপারস্টারহ তবে তৃণমূলের তারকা রাজনীতিকের ভুলটা কেউ ক্ষমা করল না। চিরঞ্জিতের কথায় তাপস পাল ছিলেন সহজ-সরল মানুষ। বন্ধুর এমন দুর্ভাগ্যের জন্য আফসোস হয় তারও।