কম খরচে দূরপাল্লার আরামদায়ক যাত্রা শুধু নয়। ভারতীয় রেল যাত্রীদের খাওয়া-দাওয়া থেকে স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ইত্যাদি আরও নানা পরিষেবা দেয়। তবে কোনও কিছুই বিনামূল্যে নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এইসব পরিষেবা নিতে যাত্রীদের আলাদা করে টাকা খরচ করতে হয় টিকিট মূল্যের বাইরে। তবে জানেন কি এই ভারতে এমন একটি দূরপাল্লার ট্রেন রয়েছে যেখানে যাত্রীরা ৩ বেলার খাবার বিনামূল্যে পান। কোন সেই ট্রেন? কবে থেকে এবং কেন এই ব্যবস্থা? জেনে নিন এই প্রতিবেদন থেকে।
ভারতের একমাত্র ট্রেন যেখানে বিনামূল্যে খাবার পান যাত্রীরা
ভারতীয় রেলের কেবল একটিমাত্র ট্রেন যেখানে যাত্রীদের বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয়, তার নাম সচখন্ড এক্সপ্রেস। এই ট্রেনের নম্বর ১২৭১৫। দূরপাল্লার এই ট্রেনটি মহারাষ্ট্রের নান্দেদ থেকে পাঞ্জাবের অমৃতসর পর্যন্ত চলাচল করে। এই দুটি শহরে মূলত শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা বসবাস করেন। নান্দেদ শহরে রয়েছে শ্রী হাজুর সাহেব গুরুদুয়ারা। দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিংজি ১৭০৮ সালে এখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। অন্যদিকে অমৃতসরে রয়েছে পবিত্র শ্রী হরমন্দির সাহেব গুরুদুয়ারা যেটি স্বর্ণমন্দির নামে প্রসিদ্ধ।
২৯ বছর ধরে চলছে এই ব্যবস্থা
বর্তমানে ভারতের বেশিরভাগ ট্রেনে যাত্রীদের খাবার কিনে নিতে হয়। তবে সচখণ্ড এক্সপ্রেস ব্যতিক্রম। এখানে যাত্রীদের স্বাস্থ্যকর এবং ঘরোয়া খাবার বিনামূল্যে পরিবেশন করা হয় গুরুদুয়ারা থেকেই। প্রায় ২০০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ ৩৩ ঘন্টার যাত্রাপথে যাত্রীদের বিনামূল্যে জলখাবার, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার দেওয়া হয়। এই দীর্ঘ রেলপথে ৩৯ টি স্টেশনে স্টপেজ রয়েছে। যার মধ্যে ৬টি প্রধান স্টেশনে লঙ্গরখানা খোলা হয়েছে যাত্রীদের খাবার পরিবেশন করার জন্য।
মেনুতে কী কী থাকে?
খাবারের মধ্যে থাকে বিভিন্ন পাঞ্জাবি খাবার যেমন কড়ি-চাওয়াল, ছোলে, ডাল-খিচুড়ি, আলু-বাঁধাকপির সবজি। যাত্রীদের শুধু তাদের নিজস্ব প্লেট বা পাত্র বহন করতে হয় খাবার নেওয়ার জন্য। গুরুদুয়ারা থেকে যে পরিমাণ অনুদান পাওয়া যায় সেখান থেকেই এই লঙ্গরখানা পরিচালিত হয়। এই ট্রেনের স্লিপার ক্লাস থেকে এসি, সব কোচের যাত্রীরাই বিনামূল্যে এই লঙ্গর খানার খাবার নিতে পারেন।