সুচিত্রার স্বামীকে চরম অপমান করেছিলেন উত্তম কুমার! বদলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেন সুচিত্রা

উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেন, পর্দায় যাদের জমজমাট প্রেম ছিল বাস্তবে আবার তাদের মধ্যে ছিল গলায় গলায় বন্ধুত্ব। কিন্তু একবার একটি ঘটনা দুজনের সম্পর্ককে তিক্ত করে তুলেছিল। মহানায়ক এবং মহানায়িকার ঝামেলা এমন চরম আকার নেয় যে দুই মাসের জন্য পিছিয়ে যায় ছবির শুটিং। সেই ছবির নাম ছিল পথে হল দেরি। এই সিনেমার নেপথ্য কাহিনী এবং উত্তম ও সুচিত্রার এই ঝগড়ার কথা অনেকেই জানেন না।

কেন সুচিত্রার স্বামীকে অপমান করেছিলেন উত্তম কুমার?

এই ঘটনার সূত্রপাত হয় পথে হল দেরি সিনেমার শুটিংয়ের সময়। সুচিত্রার স্বামী দিবানা সেদিন শুটিং দেখতে সুচিত্রার সঙ্গে গিয়েছিলেন সেটে। অন্যদিকে উত্তম কুমারের বন্ধু শম্ভুনাথ মুখোপাধ্যায়ও উত্তম কুমারের সঙ্গে শুটিং দেখতে গিয়েছিলেন সেই দিন। শম্ভুনাথ সেদিন সুচিত্রা সেনের একটি ছবি তুলেছিলেন। ছবি তোলার আগে তিনি তার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। আর এতেই ভীষণ চটে যান মহানায়িকা। কেউ তার অনুমতি ছাড়া ছবি তুলুন এটা তিনি মোটেই পছন্দ করতেন না। আর সেই ভুলটাই শম্ভুনাথ করেছিলেন সেই দিন।

UTTAM KUMAR AND SUCHITRA SEN

যথারীতি শম্ভুনাথের এই কীর্তিতে খুবই রেগে যান সুচিত্রা। সবার সামনেই তিনি উত্তম কুমারের বন্ধুকে চরম অপমান করেন। উত্তম কুমারের সামনেই তিনি কড়া ভাষায় নিন্দে করেছিলেন শম্ভুনাথের। শম্ভুনাথ তখন তাড়াতাড়ি সুচিত্রার সেই ছবি নষ্ট করে ফেলেন। ব্যাপারটা উত্তম কুমারের ভালো লাগেনি। তিনি যখন সুযোগ খুঁজছিলেন কীভাবে এর প্রতিশোধ নেওয়া যায়। কীভাবে সুচিত্রাকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া যায়। সেই সুযোগ উত্তম কুমার পেয়েও গেলেন খুব তাড়াতাড়ি।

আরও পড়ুন : উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের পারিশ্রমিক কত ছিল? সিনেমা পিছু পেতেন কত টাকা?

UTTAM KUMAR AND SUCHITRA SEN

আরও পড়ুন : ৭০ পেরিয়েও উপচে পড়তো গ্ল্যামার! শেষ জীবনে কেমন দেখতে হয়েছিল সুচিত্রা সেনকে?

উত্তম কুমারকে বদলা নেওয়ার সুযোগ করে দিলেন সুচিত্রার স্বামী দিবানাথই। দিবানাথের স্বভাব ছিল একটা ছোট্ট ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে শুটিংয়ের সময় নানা ছবি রেকর্ড করা। তিনি সেটাই করতে গিয়েছিলেন আর সঙ্গে সঙ্গে উত্তম কুমারের নজরে পড়ে যান। উত্তম কুমার পরিচালক অগ্রদূতকে সাফ বলে দেন বাইরের লোক ফ্লোরে থাকলে তিনি শুটিং করবেন না। ব্যাপার দেখে তাড়াতাড়ি সেট ছেড়ে চম্পট দেন দিবানাথ। কিন্তু সুচিত্রা সবই বুঝেছিলেন। তিনি এতে খুবই রেগে যান এবং পরদিনই শুটিং ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন। তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন ছবিটি তিনি আর করবেন না। এই ঘটনার পর দুই মাস পথে হল দেরি সিনেমার শুটিং বন্ধ ছিল। পরে অবশ্য মত বদলেছিলেন সুচিত্রা। দেরিতে হলেও এই সিনেমার শুটিং নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছিল। উত্তম ও সুচিত্রার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিও মিটে যায়।