১টা ইনজেকশনের দাম ১৬ কোটি টাকা! ইনজেকশন নয়, সেটা আসলে ছোট্ট অস্মিকার জীবনের দাম। কারণ একমাত্র এই ইনজেকশনই পারে সদ্যোজাত এই শিশুটির প্রাণ বাঁচাতে। বিরল মারণ রোগে আক্রান্ত অস্মিকাকে বাঁচাতে এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন গায়ক রূপম ইসলামও (Rupam Islam)। উজাড় করে দিলেন তার কনসার্টের সব টাকা।
নদীয়ার রানাঘাট স্টেশনের কাছে স্বামী বিবেকানন্দ সরণীর দাসপাড়ায় থাকেন শুভঙ্কর দাস এবং লক্ষ্মী দাস। ২০২২ সালে তাদের বিয়ে হয়। অস্মিকা দাস তাদের একমাত্র সন্তান। ২০২৪ সালের ৯ই জানুয়ারি তার জন্ম। সদ্য এক বছর পেরিয়েছে সে। তবে এই পৃথিবীতে তার আয়ু আর মাত্র ৬ মাস। ডাক্তাররা জানিয়েছেন অস্মিকার ছোট্ট শরীরে বাসা বেঁধেছে খুবই বিরল এক মারণ রোগ। যার নাম, স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রফি টাইপ ওয়ান। গোটা পৃথিবীর হাতে গোনা কিছু শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়। অস্মিকার বয়স যখন ছিল ৬ মাস, তখনই তার শরীরে এই রোগ ধরা পড়ে। পশ্চিমবঙ্গ তো দূর, ভারতের কোথাও এই রোগের চিকিৎসা নেই।
অনেক খোঁজ করার পর অস্মিকার বাবা-মা জানতে পারেন আমেরিকার একটি কোম্পানি তাদের মেয়ের জীবন বাঁচানোর জন্য ইনজেকশন বানায়। ফুটফুটে মেয়েটিকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় ওই জীবনদায়ী ইনজেকশন। সেই ইনজেকশনের দাম ১৬ কোটি টাকা। আর সেটা দিতে হবে অস্মিকার বয়স দেড় বছর হওয়ার আগেই। হাতে সময় আর মাত্র ৬ মাস। ৬ মাসের মধ্যে যদি জোগাড় করা যায় ওই ইনজেকশন তবেই তাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। নয়তো…. ডাক্তাররাও ছেড়ে দিয়েছেন হাল।
অস্মিকাকে বাঁচানোর জন্য ওই বহুমূল্য ইনজেকশন জোগাড় করার ক্ষমতা তার বাবা-মার নেই। তাই তারা শুরু করেন ক্রাউড ফান্ডিং। সকলের দরজায় দরজায় ঘুরে তারা মেয়ের জন্য টাকা তুলতে শুরু করেন। কিন্তু ১৬ কোটি টাকা মুখের কথা নয়। তবে কথাতেই আছে রাখি হরি তো মারে কে। অস্মিকার কথা জানাজানি হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সমাজের বহুস্তরের মানুষ বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের সাহায্যের হাত। এগিয়ে এসেছেন তারকারাও। সম্প্রতি যেমন রুপম ইসলাম সাহায্যের হাত বাড়ালেন অস্মিকার জন্য।
আরও পড়ুন : ফুটপাতের দোকানে রুটি-তড়কা খাচ্ছেন অঙ্কুশ, দেখুন সেই ভাইরাল ভিডিও
সম্প্রতি রানাঘাটে কনসার্ট করতে গিয়েছিলেন রুপম ইসলাম এবং তার টিম। অস্মিকার খবর পেয়ে টিমসহ তার বাড়িতে উপস্থিত হন রুপম। নেট নাগরিকদের উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও শেয়ার করে তারা জানান অনুষ্ঠান থেকে তারা যা আয় করবেন সব টাকা অস্মিকার চিকিৎসার জন্য দেবেন। একইসঙ্গে সকলের কাছে সাহায্যও চেয়ে নেন। বিখ্যাত গায়ক কৈলাস খেরও পৌঁছে গিয়েছিলেন অস্মিকার কাছে। তিনিও রানাঘাটে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে অস্মিকার সঙ্গে দেখা করে ভিডিও মারফত সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাহায্য চেয়েছেন সাধ্যমত দান করার জন্য।
আরও পড়ুন : গৃহবধূ থেকে ইউটিউবার! মাসে কত আয় করেন ‘প্রবাসে ঘরকন্না’র মহুয়া?
সাধারণ মধ্যবিত্ত তো দূরের কথা অনেক অবস্থাপন্ন মানুষের পক্ষেও এক ধাক্কায় ১৬ কোটি টাকা জোগাড় করা এক কথায় অসম্ভব। তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন নেট নাগরিকরা। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক অস্মিকা, তার ভুবন ভোলানো হাসি অটুট থাকুক, এই কামনাই করছেন সকলে।