শুধু অভিনয়ে পেট ভরে না। দেহ ব্যবসা করে রোজগার করতেন বলিউডের (Bollywood) এই সুপারহিট নায়িকা। না তিনি কোনও সাধারণ অভিনেত্রী মোটেও নন। তিনি ছিলেন বলিউডের সুপারস্টার নায়িকা মালা সিনহা (Mala Sinha)। তৎকালীন আমলে মালার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। হাতে ছিল প্রচুর কাজ। কিন্তু তবুও কেন দেহব্যবসার মত পেশা নিয়েছিলেন তিনি?
৬ এর দশকে বলিউডে মালা সিনহার উত্থান হয়েছিল উল্কার গতিতে। যেমন রূপ, তেমন ছিল তার অভিনয় প্রতিভা। তখনকার যুগের বলিউডের সেরা নায়কেরা তার সঙ্গে অভিনয় করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। গুরু দত্ত থেকে শুরু করে অশোক কুমার, দিলীপ কুমার, রাজকুমার, মনোজ কুমার, রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চনদের মত শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। অনেক সুপারহিট সিনেমা ছিল তার ঝুলিতে। কিন্তু জীবনের একটা ভুল সিদ্ধান্ত তার কেরিয়ার নষ্ট করে দেয়।
মালা সিনহা নাকি অভিনয়ের পাশাপাশি লুকিয়ে দেহ ব্যবসা করতেন। আসলে টাকাকে তিনি খুবই ভালোবাসতেন। টাকার প্রতি তার প্রচন্ড লোভ ছিল। দেহ ব্যবসা করে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছিলেন। আর এই তথ্য প্রথম ধরা পড়ে যখন ইডি তার বাড়িতে হানা দেয়। তৎকালীন সময়ে কোনওভাবে ইডি খবর পেয়েছিল মালা সিনহার বেআইনি অর্থের ব্যাপারে। তারা তার বাড়িতে হানা দিয়ে বাথরুম থেকে পেয়েছিল ১২ লক্ষ টাকা।
এই টাকার উৎস কী? মালার কাছে জানতে যাওয়া হলে আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি নিজের মুখে স্বীকার করেন দেহ ব্যবসা করে তিনি এই অর্থ উপার্জন করেছিলেন। শুনে অবাক হয়েছিল গোটা বলিউড। মালা সিনহা ছিলেন তৎকালীন সময়ে ইন্ডাস্ট্রির টপ অভিনেত্রী। শুধু হিন্দি নয় বাংলা সিনেমাতেও তিনি অভিনয় করেন। অভিনয় দুনিয়াতে তার চাহিদা ছিল তুঙ্গে।
মালা ২০ বছর টপ অভিনেত্রী হিসেবে রাজত্ব করেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। সব মিলিয়ে মোট ৪০ বছর কাটিয়ে দেন ইন্ডাস্ট্রিতে। ১২০টির বেশি সিনেমা ছিল তার ঝুলিতে। সেই তিনিই কিনা টাকার জন্য দেহ ব্যবসা করবেন? সন্দেহ দানা বেঁধেছিল অনেকের মনে। তারপর উঠে আসে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মালার মামলাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর চারিদিকে ধিক্কার জানানো হতে থাকে অভিনেত্রীকে। প্রচুর গসিপ শুরু হয় তাকে নিয়ে। ভক্তরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন অভিনেত্রীর থেকে। বলিউডে এক নিমিষে শেষ হয়ে যায় মালার কেরিয়ার। একসময় যেখানে বছরে তার ৫-৬ টি করে সিনেমা রিলিজ হত, সেখানে হাতে সিনেমা আসাও অনেক কমে যায়। আসলে কলঙ্কিত নায়িকার সঙ্গে তখন আর কাজ করতে চাইছিলেন না কেউ। ঠিক সেই মুহূর্তেই এক নতুন তথ্য দেন মালা।
আরও পড়ুন : কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’র নায়িকা অঞ্জু ঘোষ?
আরও পড়ুন : আত্মহত্যা নাকি খুন, মহুয়া রায় চৌধুরীর মৃত্যুর রাতে ঠিক কী হয়েছিল?
মালা বলেন আসলে তিনি অত্যন্ত কৃপণ স্বভাবের মানুষ। টাকা কিছুতেই ব্যাঙ্কে রাখতে চাইতেন না। তিনি সিনেমা করে যা কিছু উপার্জন করতেন সবকিছু ঘরেই রাখতেন। আর এটা তিনি করতে যাতে আয়কর দিতে না হয়। যখন ধরা পড়েন তখন আয়কর মামলার আওতায় ফেঁসে যেতে পারতেন তিনি। তাই তার বাবা এবং আইনজীবী তাকে পরামর্শ দেন ওই কথা বলতে। বাবা এবং আইনজীবীর পরামর্শ মেনে আগুপিছু না ভেবেই মালা দেহ ব্যবসার কথা বলেন। আসলে মামলা থেকে বাঁচতে মিথ্যে কথা বলতে হয়েছিল তাকে। যদিও মালার এই সাফাইতে পরে আর কাজ হয়নি খুব একটা। ইন্ডাস্ট্রিতে তখন আর কেউই তার সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না। তাই সত্যি হোক বা মিথ্যে, এক কথাতেই কার্যত মালা সিনহার গোছানো কেরিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়।