কেন শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan) তার দিদিকে লুকিয়ে রাখেন জানেন? শাহরুখ খানের দিদি আসলে কে? কী হয়েছে তার? কেন তাকে মান্নাতের বাইরে কখনও দেখা যায় না? আজ আপনাদের শোনাব কিং খানের ব্যক্তিগত জীবনের এক অন্ধকার দিকের কথা। যা কখনও প্রকাশ করতে চান না শাহরুখ।
শাহরুখ খানের পরিবার বলতে সকলেই তার স্ত্রী গৌরী খান, দুই ছেলে আরিয়ান এবং আব্রাম এবং সুহানা খানকে চেনেন। কিন্তু শাহরুখের যে একজন দিদিও আছেন, তিনি যে ওই মান্নাত নামের রাজপ্রাসাদের আড়ালে থাকেন, সেই খবর অনেকেই জানেন না। শাহরুখ খানের একমাত্র দিদির নাম শেহনাজ লালারুখ খান (Shehnaz Lalarukh Khan)। ভাইয়ের খ্যাতি ভুবনজোড়া। অথচ দিদির নাম-পরিচয় এমনকি মুখটা পর্যন্ত চেনেন না কেউ। শাহরুখ খানের পরিবারের এই সদস্যকে আপনি কখনও ক্যামেরা সামনে দেখবেন না।
শাহরুখ খানের সঙ্গে মান্নাতেই থাকেন তার দিদি লালারুখ। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভীষণ মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। বাবা-মা চেয়েছিলেন মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করবেন। মাস্টার্স এবং তারপর এলএলবিও করেন লালারুখ। কিন্তু একটি ঘটনা তার জীবনকে তছনছ করে দেয়। আসলে খুব কম বয়সেই শাহরুখ এবং লালারুখ তাদের বাবাকে হারিয়েছিলেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। এই ঘটনায় গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু লালারুখের চোখ থেকে এক ফোঁটা জলও গড়ায়নি। শোকে পাথরের মূর্তির মত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তারপর হঠাৎ তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। মাথাটা মেঝেতে জোরে ধাক্কা খায়। এরপর আর কখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি লালারুখ।
এরপর লালারুখ শুধু শূন্যের দিকে চেয়ে থাকতেন। কোনও কথা বলতেন না, কাঁদতেন না। তার কোনও কিছুতেই কোনও প্রতিক্রিয়া ছিল না। বাবা মারা যাওয়ার ১০ বছর পর তাদের মাও মারা যান। দিদি এরপর আরও ভেঙে পড়েন। তখন দিদির সম্পূর্ণ দায়িত্ব শাহরুখের কাঁধে এসে পড়ে। ধীরে ধীরে লালারুখের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। শাহরুখ যখন ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ এর শুটিং করছিলেন সুইজারল্যান্ডে, তখন বাড়ি থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় দিদিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাকে আর বাঁচানো যাবে না। তবে সে যাত্রা রক্ষা পেয়েছিলেন লালারুখ। তারপর থেকে দিদিকে খুবই যত্নে রাখেন শাহরুখ এবং তার পরিবার। দিদিকে ভালো চিকিৎসাও করিয়েছেন শাহরুখ।
এখন অবশ্য শাহরুখের দিদি আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন। তবে তার মধ্যে কিছু সমস্যা এখনও থেকে গিয়েছে। দিদির প্রশংসায় সব সময় পঞ্চমুখ থাকেন শাহরুখ। লালারুখ খুবই ভালো মনের মানুষ। সকলের সঙ্গে তিনি খুবই মিষ্টি ব্যবহার করেন। শাহরুখের সন্তানরা পিসিকে খুবই ভালোবাসেন। সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকেন লালরুখ। কিন্তু তিনি কখনও ক্যামেরার সামনে আসতে চান না।
আরও পড়ুন : কেন ভেঙেছিল শাহরুখ-কাজল জুটি? কেন একসঙ্গে ছবি করা বন্ধ করে দেন তারা?
আরও পড়ুন : শাহরুখ খানের ছায়াসঙ্গী! কত বেতন পান শাহরুখের ম্যানেজার জানলে চোখ কপালে উঠবে
শাহরুখের জীবন দূর থেকে দেখতে যতটাই ঝাঁ চকচকে মনে হোক না কেন, তার জীবনেও অনেক দুঃখ আছে। কম বয়সে বাবা আর মাকে হারিয়ে তার দিদি শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। আর শাহরুখকে মনে সাহস এনে জীবনের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। একবার একটি সাক্ষাৎকারে কিং খান বলেন, “দিদি মা আর বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিল। আর আমি অর্জন করেছিলাম সাহস এবং রসবোধ। এই সাহস কিন্তু ঝুটা। মেকি। আমি কাজের মধ্যে থাকি কারণ আমি অসুস্থ হয়ে পড়তে চাই না। শুধু টাকার জন্য বিয়েবাড়িতে নাচি না। বিজ্ঞাপন করি না। আমি ফ্রি হতেই চাই না। তাহলেই শূন্যতা টের পাব। আমারও পটাশিয়াম বাড়বে। ডিপ্রেশন আসবে।”