মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani) ও রতন টাটা (Ratan Tata), দুজনেই ভারতের সেরা শিল্পপতি। আম্বানিদের রিলায়েন্স গ্রুপ এবং রতন টাটার টাটা গ্রুপ ছড়িয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বে। তবে টাটা গ্রুপের বিস্তার কিন্তু আম্বানিদের থেকে অনেক বেশি। তবুও রতন টাটার তুলনায় অনেক বিলাসবহুল আম্বানিদের জীবনযাপন। তা এই দুই শিল্পপতির বাড়ি দেখলেই বোঝা যায়। চলুন আজ আপনাদের ঘুরিয়ে আনি মুকেশ আম্বানি এবং রতন টাটার বাড়ি থেকে।
মুকেশ আম্বানি থাকেন বিশ্বের দ্বিতীয় সবথেকে দামী বাড়ি আন্টিলিয়াতে। যার দাম ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২৭ তলার এই বাড়ির অন্দরমহল যেন ছোটখাটো একটা শহর। কী নেই তাতে? ৪ লক্ষ বর্গফুটের এলাকার মধ্যে রয়েছে হেলিপ্যাড, ৫০ টা সিট যুক্ত সিনেমা হল, জিম, স্পা, রেস্টুরেন্ট, মন্দির, বাগান, ব্যাবিলনের মত ঝুলন্ত বাগান, আইসক্রিম পার্লার, স্নো রুম, গ্যারেজ আরও কত কী। অ্যান্টিলিয়ার ৬ তলায় রয়েছে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা যেখানে ১৬৮ টি গাড়ি পার্ক করা যাবে।
মুম্বাইয়ের আল্টামাউন্ট রোডের আম্বানি টাওয়ারে রয়েছে অ্যান্টিলিয়া। স্বপ্নের থেকেও সুন্দর এই বাড়ি। বাড়ির ডিজাইন, অন্দরসজ্জা, রং, আসবাবপত্র সবেতেই রয়েছে আভিজাত্য ও বিলাসিতার ছাপ। আম্বানি ভবনের ২৭ তলার প্রত্যেকটি তলা দোতলার সমান উঁচু। এই বাড়ি রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পারবে। ৬০০ জন কর্মী কাজ করেন অ্যান্টিলিয়াতে, রয়েছেন ২০০ জন রাঁধুনী। পরিবারের সদস্য, অতিথি এবং কর্মচারীদের জন্য আলাদা আলাদা লিফট রয়েছে যাতায়াতের সুবিধার্থে।
অ্যান্টিলিয়ার প্রত্যেকটি ঘর একে অপরের থেকে আলাদা। প্রত্যেকটা ঘরের নকশা একটা অন্যটার মত নয়। তবে বাড়ির নকশায় দুটো থিম প্রাধান্য পেয়েছে, সূর্য এবং পদ্ম। বেইজ, ক্রিম এবং কাঠের রংয়ের ব্যবহার হয়েছে অ্যান্টিলিয়ার আনাচে-কানাচে। অ্যান্টিলিয়ার বসার ঘরটাও বিলাসিতায় মোড়া। রয়েছে বিশাল ঝাড়বাতি, আকর্ষণীয় প্রদীপ, একটা বড় গাছ, ঘরের আনাচে-কানাচে সোনার কাজ রয়েছে। মন্দিরে রয়েছে একটা ছোট্ট পুকুর যার মাঝখানে বিশ্রাম করছেন গণেশ। মেঝেতে ফুলের মোটিফের টাইলস বসানো আছে।
আর রতন টাটার বাড়ি? আম্বানির মত জাঁকজমক নেই ঠিকই, তবে রতন টাটার বাড়ি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে। রতন টাটা খুবই সাধারণ জীবন যাপন পছন্দ করতেন। তার বাড়ি পুরনো মুম্বাইয়ের কোলাবায়। তিনি শান্তি এবং আরামদায়ক পরিবেশ পছন্দ করতেন। তাই সমুদ্রের ধারের এই সাদা রঙের বাড়িটি তার সবথেকে পছন্দ হয়েছিল। ১৩,৩৫০ বর্গফুটের এই বাংলোটি ৩ তলার। এখানে ১০ থেকে ১৫ টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আছে। টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর রতন টাটা এই বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন।
রতন টাটার পছন্দের এই বাড়ির ভেতরটা খুবই ছিমছাম এবং সাদামাটা। খুব নামিদামি আসবাবপত্র নেই। বাড়ির ভেতর কোথাও অতিরিক্ত কোনও চাকচিক্য নজরে পড়বে না। রতন টাটা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। বাড়ির ভেতরেই রয়েছে একটি ঠাকুর ঘর, যেখানে রাখা আছে কৃষ্ণমূর্তি। রতন টাটার বাড়ির সবথেকে আকর্ষণীয় যদি কোনও জায়গা থেকে থাকে তা হল সিঁড়ি। একেবারে সিনেমার সেটের মত বানানো সিঁড়িটি দেখলে মুগ্ধ হবেন।
আরও পড়ুন : কাকে ভালোবেসে আজীবন অবিবাহিত থেকে গেলেন রতন টাটা? কে ছিলেন তাঁর প্রেমিকা?
আরও পড়ুন : স্ত্রী-সন্তান কেউ নেই! রতন টাটার সব সম্পত্তি পাবে কে?
বাড়িটা এমন ভাবে বানানো হয়েছে যাতে প্রত্যেকটা ঘরে সূর্যের আলো ভালোভাবে খেলা করতে পারে। সমুদ্রমুখী বাড়ির বেডরুম লাগোয়া রয়েছে সম্পূর্ণ খোলা একটি জানলা। রতন টাটার এই বাড়ির দাম মাত্র ১৫০ কোটি টাকা। আম্বানিদের অ্যান্টিলিয়ার কাছে নেহাত তুচ্ছ বটে, তবে বাড়ির কোনায় কোনায় আভিজাত্য এবং রুচি উপচে পড়ছে।