কলকাতার আরজি কর (RG Kar Case) মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের উপর যেভাবে নৃশংস অত্যাচার চালিয়ে খুন করা হয়েছে তাতে স্তব্ধ গোটা বিশ্ব। সাধারণ থেকে তারকা, প্রতিবাদ আন্দোলনে শামিল হয়েছেন এক বাক্যে। এই আন্দোলন ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সমর্থকদেরও মিলিয়ে দিয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সেই আন্দোলনে প্রতিবাদী মুখ হিসেবে ভাইরাল হন মোক্ষা (Mokksha)। জানেন কে এই মেয়ে?
১৮ই আগস্ট কলকাতা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে ক্যামেরার সামনে ধরা পড়ে মোক্ষার প্রতিবাদ। পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের চূড়ান্ত প্রতিবাদ করেছেন তিনি। এখানেই থেমে থাকেননি, নাচ, গান, অভিনয়ের মাধ্যমে বারবার তিনি প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাকে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের চ্যানেলেও। এই মোক্ষা আসলে একজন অভিনেত্রী। তার আসল নাম পৃথা সেনগুপ্ত।
পৃথা ব্যারাকপুরের মেয়ে। অভিনয় তার পেশা। কিন্তু টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি সুযোগ পাননি। টলিউড তাকে সুযোগ না দেওয়াতে অবশ্য তিনি থেমেও থাকেননি। মোক্ষা চলে যান দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। সেখানেই বিগত কয়েক বছর ধরে কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু আরজি করের ঘটনা তার কানে যেতে তিনি আর দূরে থাকতে পারেননি। প্রতিবাদ জানানোর জন্য তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন।
এরপর বারবার প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হন মোক্ষা। কিন্তু আবার তাকে ফিরে যেতে হল দক্ষিণেই। তার কারণ প্রতিবাদ করার জন্য ক্রমাগত তাকে বিরক্ত করা হচ্ছে। ভুয়ো ফোন কলের মাধ্যমে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। এমনকি সিবিআইয়ের ভুয়ো পরিচয় দিয়েও ফোন আসছে তার কাছে। তার ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে, এমনই মনে করছেন তার পরিচিতরা।
আনন্দবাজার অনলাইনে কাছে মোক্ষা বলেছেন, “প্রতিবাদের ফল এত ভয়াবহ হবে ভাবতে পারিনি। স্বাভাবিকভাবে ফোনে কথা বলতে পারছি না। সকলের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলছি।” অভিনেত্রী জানিয়েছেন তার কাছে একটি ফোন কল আসে। সেখানে হিন্দিতে তাকে জানানো হয় একজন সিবিআই অফিসার তাকে ফোন করছেন। এরপর তার ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
শুধু মোক্ষা একা নন, দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন প্রযোজকের কাছেও মোক্ষাকে নিয়ে ফোন করা হয়। সেই প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করছেন মোক্ষা। অবশ্য তিনিও বুঝতে পেরেছেন যে ফোনটি আসলে ভুয়ো ছিল। তবে তিনি মোক্ষাকে কাজের দুনিয়াতে ফিরে আসার অনুরোধ করেন। বিমানের টিকিটটাও পাঠিয়ে দেন। তাই ইচ্ছে না থাকলেও প্রতিবাদ কর্মসূচি ফেলে রেখে ফিরে যেতে হলো অভিনেত্রীকে।
আরও পড়ুন : চাপের মুখে চরম পদক্ষেপ, অরিজিৎ সিংয়ের সিধান্তে ভক্তদের মাথায় হাত
আরও পড়ুন : “সঞ্জয় বলির পাঁঠা, আর একটা ধনঞ্জয়…!’’, জয়জিতের মন্তব্যে তোলপাড়
এই ঘটনায় খুবই অবাক হয়েছেন মোক্ষা। তিনি আনন্দবাজারকে বলেছেন, “মোক্ষলাভ হল কি না জানি না, তবে নিজের শহরকে নতুন ভাবে চিনলাম। আমি ব্যারাকপুরের মেয়ে। খোদ শাসকদলের এলাকা। মা-বাবাকে রেখে যেতে খুব ভয় করছে। প্রয়োজন বুঝলে ওঁদেরও এর পর নিয়ে যাব আমার সঙ্গে।”