উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেন, টলিউড ইন্ডাস্ট্রির মহানায়ক এবং মহানায়িকা তারা। শুধু ষাট-সত্তরের দশকে নয়, উত্তম-সুচিত্রার জুটি আজও সমান জনপ্রিয়। তাদের মধ্যে দারুণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। উত্তম কুমারের অকাল প্রয়াণ সুচিত্রাকেও নাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুর আগে উত্তম কুমার তার প্রিয় বান্ধবীর কাছে একটি আবদার করেছিলেন। যা রাখতে পারেননি মহানায়িকা। এই নিয়ে আফসোস ছিল সুচিত্রার মনেও। কী ছিল সেই আবদার?
১৯৮০ সালে ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবি শুটিং করতে করতে আচমকা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন উত্তম কুমার। মৃত্যুর ঠিক এক সপ্তাহ আগে সুচিত্রার কাছে একটি অনুরোধ করেছিলেন তিনি। ‘আলো আমার আলো’ সিনেমাটি টেলিভিশনে দেখেছিলেন উত্তম কুমার। সেই সিনেমাতে সুচিত্রার অভিনয় দেখে তিনি আরো একবার মুগ্ধ হন। তখনই ফোন করে সুচিত্রাকে তার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
উত্তম কুমারের সঙ্গে কথা বলে সুচিত্রা ‘‘একদিন দেখা করবো’’ বলে ফোন রেখে দেন। কিন্তু তাদের দুজনের কেউই ভাবেননি আর দেখা হবে না। সুচিত্রা তখন দারুণ ব্যস্ত ছিলেন তার কর্মজীবনে। শুটিংয়ের ব্যস্ততার দরুণ তিনি তার কাছের বন্ধুকে সময় দিতে পারেননি। এই আফসোস সুচিত্রাকেও তাড়িয়ে নিয়ে বেরিয়েছে শেষ দিন পর্যন্ত।
উত্তম কুমারের সঙ্গে ফোনে শেষ কথা হওয়ার সাত দিনের মধ্যেই যখন তার মৃত্যুর খবর আসে তখন স্তম্ভিত হয়ে যান সুচিত্রা। ফোনে খবর পেয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ ফোনের পাশ থেকে উঠতে পারেননি মহানায়িকা। উত্তম কুমারের মৃত্যুর খবর তিনি সহ্য করতে পারেননি। এমনকি বন্ধুকে শেষ বেলায় দেখতে যাবেন না বলেও ঠিক করেছিলেন। পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত বদলিয়ে সানগ্লাস চোখে এঁটে উত্তম কুমারকে শেষ দেখা দেখতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়েও নোংরামি! সুপ্রিয়ার মেয়েকে স্বীকৃতি দেননি উত্তম কুমার
আরও পড়ুন : কেন অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন? কেন ৩৬ বছর গৃহবন্দী ছিলেন তিনি?
উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে ৪৪ টা বছর। গত ২৪ শে জুলাই ছিল তার প্রয়াণ দিবস। এদিন অন্যান্য বারের মত মহানায়ক সম্মান প্রাপকদের নাম ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সম্মান পেলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, নচিকেতা চক্রবর্তী, শুভাশিস মুখার্জী, রুক্মিণী মৈত্ররা।