মহুয়া রায়চৌধুরী, গত ২২ শে জুলাই ছিল তার মৃত্যু দিন। আজ থেকে প্রায় ৩৯ বছর আগে একটি দুর্ঘটনায় মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যু হয়। তবে আজ এত বছর পরেও তাকে ভোলেনি টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। আশির দশকের সেরা অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। কিন্তু তার বেপরোয়া জীবনযাপনই অকালে শেষ করে দেয় তার জীবন। মহুয়াকে নিয়ে তার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী রত্না ঘোষাল যে মন্তব্য করেছেন তাতে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া।
রত্না ঘোষাল ছিলেন মহুয়ার সব থেকে কাছের বান্ধবী। আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হয়ে মহুয়া যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তখন তিনি তার একমাত্র ছেলে গোলা ওরফে তমালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন রত্নাকে। সেই রত্না ঘোষাল সম্প্রতি ইটিভি ভারত নামের একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মহুয়ার মাদকাসক্তির কথা তুলে ধরেছেন। তুলে ধরেছেন এমন কিছু কথা যা শুনে ক্ষুন্ন হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ।
রত্নার কথায়, “মউ (মহুয়া) মদ খেতে খুব ভালোবাসতো। গোলাকেও খাওয়াতো। আমি বলতাম তোর বাচ্চাটাকে তুই খাওয়াচ্ছিস কেন? ও বলতো ওর বাবা-মা খায়, ও খাবে না? তখন কত বয়স হবে গোলার দুই থেকে আড়াই বছর।” এর আগেও একটি সাক্ষাৎকারে রত্না ঘোষাল মহুয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেছিলেন, “মউ মদ খাবেই। আর মদ খেলেই ও কেমন পাল্টে যেত। পুরুষ চাই তখন। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় কী যে করত, কী বলতো কোথায় পৌঁছতো তার কণা মাত্র মনে থাকত না।”
মহুয়া রায় চৌধুরীর মৃত্যুর এত বছর পর তার সম্পর্কে এমন কথা শুনতে হবে কার্যত আশা করেননি তার ভক্তরা। অন্যদিকে মহুয়াকে নিয়ে তার বায়োগ্রাফি বানানোর কাজ করছেন টলিউড প্রয়োজন রানা সরকার। তিনিও রত্নার মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। রানা সরকারের দাবি মহুয়ার সম্পর্কে এমন কথায় কার্যত তার অপমান করা হচ্ছে।
রানা সরকার জানিয়েছেন তার আসন্ন ছবি ‘গুনগুন করে মহুয়া’র জন্য সাহায্য নিতে তিনি রত্না ঘোষালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু রত্না বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় মৃত অভিনেত্রী সম্পর্কে যে ‘সেনসিটিভ’ মন্তব্য করছেন তাতে তার মনে হয়েছে রত্নার কথা তার সিনেমার উদ্দেশ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক। তাই তিনি রত্নার সাহায্য ছাড়াই সিনেমাটি বানাবেন। সিনেমাতে রত্নার কোনও চরিত্র থাকবে না এটাও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : আগুনে ঝলসে গিয়েছিলেন মা! মহুয়া রায়চৌধুরী মৃত্যুর পর কেমন আছে তার একমাত্র ছেলে?
আরও পড়ুন : চোখের বালির বিনোদিনী এখন কোথায়? অভিনয় ছেড়ে এখন কি করছেন অভিনেত্রী?
রানার দাবি, রত্নার মুখে শোনা গল্পের সত্যতা যাচাইয়ের সুযোগ আর নেই এখন। কারণ মহুয়া রায়চৌধুরীই আর পৃথিবীতে নেই। তাই রত্নার মুখে শোনা গল্প বলে তিনি প্রয়াত মহুয়া রায়চৌধুরী, তার পরিবার এবং অভিনেত্রীর অসংখ্য গুণমুগ্ধকে হতাশ করতে পারবেন না। অন্যদিকে রত্না ঘোষাল এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমি রানা সরকারের কাছে যাইনি। আমার কাছে নিজেই এসেছিল। আমার কথা যেভাবে ভুল মানে করা হয়েছে তাতে বলতে পারি রানা একজন গন্ডমূর্খ। আমি কাউকে ভয় পাই না।”