Mahalaya Mahisasur : জি বাংলা (Zee Bangla) বা স্টার জলসার (Star Jalsha) মহালয়া (Mahalaya) অনুষ্ঠানে অসুর বা মা দুর্গাকে নিয়ে বহুবার খিল্লি করতে শোনা যায় জনগণকে। কিন্তু আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে দূরদর্শনের পর্দায় যখন মহালয়া অনুষ্ঠিত হতো সেই অনুষ্ঠানে মহিষাসুরকে দেখে বেশ ভয় লাগলো বৈকি। মহিষাসুরের চরিত্রে যিনি অভিনয় করতেন, সেই অমল চৌধুরী (Amal Chaudhary) -র জীবন কাহিনী নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন।
একসময় একাধারে মহিষাসুর অন্যদিকে যমরাজ, এই দুই রূপে তিনি আসতেন দূরদর্শনের পর্দায়। অমল বাবুর বড় বড় চোখের চাহনি আর বড় বড় গোঁফ দেখে রীতিমতো ভয়ে কাঁপতো ছোটরা। নিজের এলাকায় অমল অসুর নামে পরিচিত ছিলেন অমলবাবু। এত নামি শিল্পী হওয়া সত্ত্বেও আজ অমল বাবুর জীবনের আজ যে দুরবস্থা,তা শুনলে চোখে জল চলে আসবে আপনার।
অমল চৌধুরী অশোকনগরের বাসিন্দা। নিঃসন্দেহে গর্ব করে বলা যায়, অমল বাবু ছিলেন দূরদর্শনের মহালয়ার প্রথম মহিষাসুর। মহিষাসুরের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন যে পরবর্তীকালে তিনি অমল অসুর নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন সকলের কাছে। গুরুগম্ভীর চেহারার জন্য এলাকাবাসীও বেশ ভয় পেয়ে চলত অমল বাবুকে।
মহিষাসুর ছাড়াও অমল চৌধুরী যমরাজের ভূমিকাতে অভিনয় করেছেন। করেছেন প্রথম সারির পরিচালক এবং অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ। কিন্তু কালের নিয়ম অনুসারে সব ক্ষেত্রেই নতুনরা জায়গা করে নেয় পুরনোদের সরিয়ে, এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। এক সময়ের বিখ্যাত এই মহিষাসুরের কোন স্থান নেই আজকের ইন্ডাস্ট্রিতে।
দুঃখের বিষয়, অবিবাহিত অমল চৌধুরীর সংসারে এখন সদস্য বলতে তিনি এবং তার ছোট বোন। অভাবের এই সংসারে পাশে থাকে না কোন আত্মীয়, ডাকে না ইন্ডাস্ট্রি। পর্দা থেকে সরে গিয়ে অমলবাবু এখন আঁকা শেখান। একদিন যে অভিনয়ের হাত ধরে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন সেই অভিনয় জগত আজ পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অমল বাবুর থেকে।
আরও পড়ুন : মহালয়ার দিন ভুলেও করবেন না এই ৪টি কাজ, জীবনে নেমে আসবে ঘোর বিপদ
আরও পড়ুন : মহালয়ায় তর্পণের সময় থাকবে কতক্ষণ? কতক্ষণ থাকবে অমাবস্যা? রইল মহালয়ার নির্ঘন্ট
প্রসঙ্গত, মহিষাসুর বা যমরাজের ভূমিকায় অভিনয় করার সুবাদে একসময় নিজের এলাকায় ভীষণ কদর ছিল অমল বাবুর। অশোকনগরের নাট্যচর্চাতেও সম্মান পেতেন তিনি। সায়নী ঘোষ উপহার পাঠিয়ে কর্তব্য করলেও ইন্ডাস্ট্রি হয়তো কখনো মহিষাসুরকে আর আপন করে নেবে না। এখন কাজের অভাবে এবং খিদের তাড়নায় কচুর শাক সিদ্ধ খেয়েও কাটাতে হয় দিন। এলাকাবাসীরা চেয়েছিলেন যাতে তার জন্য একটা ছোটদের আঁকার স্কুল তৈরি করে দেওয়া যায়। তবে সেটাও বিশ বাঁও জলে। দূরদর্শনের প্রথম মহিষাসুরের এখন খুবই কষ্টে কাটছে দিন।