ফ্যাশানে দাড়ি রাখা বেশ জনপ্রিয়। অনেকেই দাড়ি রাখাটা পুরুষালি মনে করেন। যদিও মহিলা এবং শিশুদের সঙ্গে ব্যবহারেই কারও পরিচয় মেলে। দাড়ি তো অজুহাত মাত্র! দাড়ির বাড় নির্ভর করে ব্যক্তির ওপর। বয়ঃসন্ধির সময় মোটামুটি ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়সে কারও দাড়ি হয়।
অনেকেই দাড়ি রাখেন। আবার অনেকে কলিন শেভড থাকতে পছন্দ করেন। গুহাবাসী মানুষ দাড়ি কাঁটার জন্য ব্যবহার করতেন ধারালো পাথর। যাইহোক, এটা প্রস্তরযুগ নয়। একবিংশ শতাব্দীর মানুষ দাড়ি কাটার জন্য ব্যবহার করেন ব্লেড কিংবা ট্রিমার। কিন্তু ব্লেডের মাঝখানে অদ্ভুত ফাঁক থাকে কেন?
আরো পড়ুন : এটিএম কার্ডের পিন চার সংখ্যার হয় কেন ?
এটা বোঝার জন্য আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে ১৯০৪ সালে। জিলেট কোম্পানি প্রথম বাজারে নিয়ে আসেন ব্লেড। দুই দিক ধারালো পাতলা এবং লগবগে। আবার এই জিলেট কোম্পানিই সর্বপ্রথম রেজর বের করেন। জিলেটের রেজরে ব্যবহার করার জন্যই বিশেষ এক ধরণের ব্লেড তৈরি করেন জিলেট কোম্পানি। প্রথমদিকের সেই ব্লেডগুলো ছিল দুই পাশে ধারালো অংশ আর মাঝখানে ছিল প্রায় একই রকম দেখতে তিনটি ছিদ্র। কিন্তু পরবর্তীতে জিলেট কোম্পানি নতুন ডিজাইনের ব্লেড তৈরি করে।
আরো পড়ুন : হিন্দু ধর্মে দেহ পুড়িয়ে অন্তিম সংস্কার করা হয় কেন ?
কিন্তু এর মাঝেই জিলেটের সঙ্গে হেনরি জে গেইসম্যান নামক এক আবিস্কারকের পেটেন্ট নিয়ে শুরু হয়ে যায় ঠাণ্ডা যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত জিত হয় জিলেট কোম্পানির। এবং পরবর্তী ২৫ বছরের জন্য পেটেন্টের অধিকারী হয় তারা। জিলেট কোম্পানি বাজারে নতুন ডিজাইনের ব্লেড নিয়ে আসলে পুরনো ডিজাইনের তিন ছিদ্র বিশিষ্ট ব্লেড মার্কেট থেকে বিদায় নেয়। শুরু হয় নতুন প্রজন্মের ব্লেডের ব্যবহার।
আরো পড়ুন : কখনো ভেবেছেন ক্যাপসুল দু-রকম রঙের হয় কেন ?
১৯২১ সালের মে মাসে জিলেটের পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বিভিন্ন কোম্পানী ব্লেড উৎপাদন শুরু করে। এদিকে, হেনরি জে গেইসম্যান প্রতিষ্ঠা করেন আলাদা কোম্পানি। সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি ব্লেড উৎপাদন শুরু করেন। কিন্তু তিনি একটি চমৎকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি এমন ব্লেড তৈরি করেন যা জিলেটের রেজরে মাপসই হবে, আবার একই সঙ্গে এমন রেজরও তৈরি করেন যা জিলেটের ব্লেডের জন্য ব্যবহার করা যায় না। যদিও হেনরি জে গেইসম্যানের প্রোব্যাক কর্পরেশনের তৈরি রেজরের গঠনের সঙ্গে জিলেটের রেজরের মধ্যে পার্থক্য ছিল।
আরো পড়ুন : স্কুল বাসের রঙ হলুদ হয় কেন ?
গেইসম্যানের এই নতুন নকশার রেজরের ফলে জিলেট কোম্পানি পড়ে বিপদে। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে তারা বাজারে আনল নতুন ডিজাইনের ব্লেড। এই ব্লেড একইসঙ্গে নতুন আর পুরাতন রেজরে ব্যবহার করা যেত। কিন্তু পুরনো তিনটি ছিদ্র বিশিষ্ট্য ব্লেড জিলেটের নতুন রেজরে ব্যবহার না করা গেলেও পুরাতন রেজরে ব্যবহার করা যেত।
আরো পড়ুন : বিয়ের অনুষ্ঠানে পাত্রের মা থাকতে পারেন না কেন ?
এভাবে জিলেট আস্তে আস্তে তাদের ব্লেডের ডিজাইনে বদল আনল। ব্লেডের এই নকশাই অন্যান্য কোম্পানিগুলিও অনুসরণ করল। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। কিন্তু ব্লেডের নকশার আর পরিবর্তন হয়নি কোনও। সেই থেকে চলছে আজও।
আমাদের প্রতিটি পোস্ট WhatsApp-এ পেতে ⇒ এখানে ক্লিক করুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হন : Facebook Instagram Twitter