Maa Kali and Her Tongue : মা দুর্গার আরেক রূপ মা কালী। মা কালীর যে চিরাচরিত রূপটি চির পূজিত হয়ে আসছে সেটি হলো মহাদেবের বুকের উপরে দেবী মা কালী পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এই রূপে দেবীর জিহ্বা বার করা থাকে। কিন্তু এই রূপ এর ব্যাখ্যা কী? কেন মা এইভাবে জিভ বের করে থাকেন (Why Maa Kāli has her Tongue Out)?
Why Maa Kāli has her Tongue Out
অনেকে বলেন যে দেবী মহাদেবের বুকের ওপরে পা রেখেছেন বলে জিহ্বা বার করে রেখেছেন। কিন্তু এই কথা ও সত্য নয়। কারণ স্বয়ং মহাদেব বলেছেন, “”দেবী কালী তার শক্তি। দেবীকে ছাড়া তিনি শিব নন,তিনি শব।”
আবার অর্ধনারীশ্বর মূর্তিতে প্রকাশিত হয়েছে যে শিব আর দুর্গা দুই এ মিলে এক। তারা দুজনেই অভিন্ন। কেউ ছোট নয় কেউ বড় নয় দুজনেই সমান। তাই লজ্জা থেকে দেবী জিহ্বা বের করেছেন এই যুক্তি ঠিক নয়। আসলে দেবীর জিহ্বা বের করা এই রূপ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দেবীর এইরূপ সমগ্র জগৎকে এক বিশেষ শিক্ষা দেয়। কী সেই শিক্ষা?
মা কালীর জিভ বেরিয়ে থাকে কেন?
দেবীর কালীরূপ সমগ্র জগৎকে শিক্ষা দেয় “”শঙ্কাকে ত্যাগ করে শঙ্করী হয়ে ওঠার।” প্রতিটি নারীর অভ্যন্তরেই যে কালি রূপ রয়েছে, যে কোনও নারীই অভ্যন্তরীণ ভয়কে জয় করে কালীর রূপ ধারণ করতে পারে। এই শিক্ষা দেবী দিয়েছেন তার শ্যামাঙ্গী রূপে।
দেবীর কালী রূপকে একটু নজর করলেই দেখবেন যে দেবী লাল জিহ্বাকে সাদা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে থাকেন। লাল জিহ্বা রজঃগুণ এর প্রতীক। আর সাদা দাঁত হল সত্ত্বগুণের প্রতীক। লাল জিভকে সাদা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে রাখার অর্থ হল, “”সত্ত্বগুণ (জীবের মহৎ গুণাবলী) দ্বারা রজগুণকে (অহংকার,হিংসা ইত্যাদি) গুলিকে দমন করা। অর্থাৎ দেবী এইরূপের দ্বারা সমগ্র জগৎকে আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দিয়েছেন। দাঁতের দ্বারা জিহ্বাকে চেপে ধরে দেবী তাঁর ভক্তদের বোঝাতে চাইছেন ত্যাগের দ্বারা ভোগকে দমন করা উচিত।
আরও পড়ুন : মা কালীর জিভ কেন বেরিয়ে থাকে, কালীর পায়ের নীচে শিব কেন থাকে
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় আদ্যা শক্তি নিরাকার। তিনি মানুষের কল্পনাতীত। ভক্তের সুবিধার্থেই তাকে ইন্দ্রিয় বন্ধু রূপে কল্পনা করা হয়। দেবী কালীর মূর্তি টি ও এমনই একটি কল্পিত মূর্তি। দেবীর মূর্তি প্রতিটি অংশই শাস্ত্রীয় তাৎপর্য বহন করে।
আরও পড়ুন : পশ্চিমবঙ্গের ৭টি জাগ্রত কালী মন্দির; যেখানে গেলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবেই