কেন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিল পল্লবী, উঠে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য

রবিবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিট, গড়ফার ফ্ল্যাটে টেলিভিশন (Bengali Telivision) অভিনেত্রী পল্লবী দের (Pallavi Dey) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হু হু করে খবর ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুহূর্তের মধ্যেই থমথমে স্টুডিও পাড়া। ‘রেশম ঝাঁপি’, ‘কুঞ্জ ছায়া’, ‘আমি সিরাজের বেগম’ থেকে ‘মন মানে না’, একের পর এক ধারাবাহিকে অভিনয় করে তার কেরিয়ার গ্রাফ ছিল ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। এহেন অভিনেত্রী হঠাৎ কেন আত্মহত্যার চরম সিদ্ধান্ত নিলেন? এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পল্লবীর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী এবং ভক্তদের।

টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে বলতে গেলে কেরিয়ারের শীর্ষে ছিলেন তিনি। খুব কম সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছিলেন। ইন্ডাস্ট্রিতে তার নামডাক বাড়ছিল। হাসিখুশি স্বভাবের মেয়েটিকে বেশ পছন্দ করতেন সেটের সহকর্মীরা। প্রাণবন্ত স্বভাবের মেয়েটি যে হঠাৎ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমনটা কারও মাথাতেই আসেনি। আচমকা এই ঘটনায় স্বভাবতই অবাক হয়েছেন সকলে।

যতদূর জানা যাচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে থাকতেন তিনি। তাদের সম্পর্কে কথা কাটাকাটি, মনোমালিন্য দেখা দিচ্ছিল। মৃত্যুর আগের দিন রাতে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। পল্লবীর প্রেমিক জানিয়েছেন যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে সেই সময় তিনি সিগারেট খেতে বাইরে গিয়েছিলেন। ঘরে ফিরে দেখেন বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়ে ঝুলছেন পল্লবী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি ঘটনাস্থল থেকে।

মৃত্যুর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে একাধিক পোস্ট করেছিলেন তিনি। ১৭ ঘন্টা আগেও ইন্সটাগ্রামে রিল ভিডিও শেয়ার করেছেন। মৃত্যুর আগের দিন অর্থাৎ শনিবার শুটিং ফ্লোরে গিয়ে শট দিয়েছেন, শুটিং শেষে সকলের সঙ্গে মজা করে মোমো খেয়েছেন, সকলেই তাকে হাসিখুশিই দেখেছেন ওইদিন। রবিবার সকালেও তার শুটিংয়ে যাওয়ার কথা ছিল। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কি এমন ঘটলো যে আত্মহত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন পল্লবী?

pallabi dey

অভিনেত্রী পল্লবী দে-র উপর আর্থিক দিক দিয়ে অনেকটাই নির্ভর করতেন তাঁর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তী। একাধিক বার নিজের প্রয়োজনে পল্লবীর থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি। এমনকি, ইদানীং পল্লবীর সঙ্গে আর্থিক বিষয় নিয়ে মাঝে মধ্যেই অশান্তিও হত তাঁর। পল্লবীর পরিবারের অভিযোগ, অভিনেত্রীর থেকে টাকা নিয়ে নিউটাউনের ৮০ লক্ষ টাকা দামের ফ্ল্যাট কিনেছিলেন সাগ্নিক। পল্লবীর থেকে অর্থসাহায্য নিয়ে সাগ্নিক একটি দামি গাড়িও কিনেছিলেন বলে অভিযোগ পরিবারের।

একাধিক ব্যাঙ্কে পল্লবীর সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ছিল সাগ্নিকের। সেই সব অ্যাকাউন্টে এখন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। যদিও পুলিশের জেরায় এ ব্যাপারে সাগ্নিক কোনও কথা জানাননি। সাগ্নিকের পরিবারও কোনও পাল্টা দাবি করেনি। গত কয়েক মাস ধরে পল্লবী আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ফ্ল্যাটের পরিচারিকা জানিয়েছেন, ‘‘টাকা নিয়ে প্রায়ই অশান্তি করেন দাদা-দিদি। সেই অশান্তি মারাত্মক আকার নেয় মাঝে মধ্যে।’’