চীন ভারত যুদ্ধ লাগলে কোন কোন দেশ কার কার পক্ষ নেবে

ভারত এবং চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ থাকলেও শুধুমাত্র ১৯৬২ সালেই বড় ধরনের লড়াই হয়,তারপর হয়নি।আবার চলতি বছরে গড়ে উঠেছে যুদ্ধের সম্ভাবনা। সোমবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে। লাদাখের গালওয়ান ভ্যালিতে যে সংঘর্ষ ও সেনা হতাহতের খবর পাওয়া যায় তারপরই উত্তপ্ত হতে থাকে পরিস্থিতি।

বর্তমানে বিশেষ করে কোরোনা ভাইরাস সংকট তৈরির পর থেকে চীনের সাথে আমেরিকার দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় আমেরিকার সাথে ভারতের মিত্রতা বা সামরিক সহযোগিতা একদমই পছন্দ নয় চীনের। এর ফলে ভারত ও চীনের মধ্যে একটি শত্রুতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। ভারত ও চীনের মধ্যে যুদ্ধের আশংকা কতটা? বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এবং পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেধে গেলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে? চীন ভারত যুদ্ধ লাগলে কোন কোন দেশ কার কার পক্ষ নেবেভারত বা চীন- কেউই কি আসলে এরকম একটা যুদ্ধ চায়? জেনে নিন বিস্তারিত..

ভারত, চীন যুদ্ধ কি হতে পারে?

চীন এবং ভারত, দুটি দেশই গত বছর দশেক ধরে তাদের সীমান্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে। চীন তিব্বতে আর ভারত অরুণাচল প্রদেশে এবং লাদাখ অঞ্চলে রাস্তাঘাট করেছে, বিমান ঘাঁটি বানিয়েছে, রেডার স্টেশন বসিয়েছে, সৈন্য সমাবেশ বৃদ্ধি করেছে। দু’পক্ষই বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে। সেখানে সামরিক মহড়াও দিয়েছে দুই দেশ। কাজেই একটা যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখা যাচ্ছে, এবং পরিস্থিতি বিচার করে অনেকেই অনুমান করছেন ভারত চীন যুদ্ধ লাগতে চলেছে।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো নইলে ব্যপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে দুই দেশই। চীন এবং ভারত উভয়েরই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। দুই দেশই পরস্পরকে ধ্বংস করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। কোন দেশই সেরকম ব্যাপকতর কোন সংঘাতে জড়াতে চায় না। কারণ শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধের ফল কী দাঁড়াবে সেটা কেউই এখন পর্যন্ত বলতে পারে না।

আরও পড়ুন :- ভারত চিন যুদ্ধ বাধলে কতটা তৈরি ভারত, এক নজরে অস্ত্র সম্ভার

তাছাড়া ভারত এবং চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এখন ব্যাপক আকার নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী একটা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে কোন দেশই এরকম একটা সম্পর্ক ক্ষুন্ন করতে চাইবে না। ভারত এবং চীনে যুদ্ধ ব্যাপক আকারে ছড়ালে শুরু হতে পারে তৃতীয়ত বিশ্বযুদ্ধ।

ভারত চীন যুদ্ধে এগিয়ে কে?

দুটি দেশেরই বিপুল অস্ত্রসম্ভার রয়েছে এবং এসব অস্ত্রশস্ত্র বেশ আধুনিক। গত ২০ বছর ধরে দুটি দেশ শুধু নিজেরাই সমরাস্ত্র তৈরি করেনি, একই সঙ্গে অস্ত্র আমদানিও করেছে। এক কথায় উন্নত অস্ত্র দুই দেশের কাছেই আছে। কিন্তু পার্বত্য এলাকায় ট্যাংক বা সাঁজোয়া কতটা ব্যবহার করা যাবে সেই বিষয় সন্দেহ আছে। কোনও দেশের কাছে কত সৈন্য আছে সেটা এক্ষেত্রে বড় কথা নয়, আসল কথা হলো যেখানে ভূপ্রকৃতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় কত সৈন্য মোতায়েন করা যাবে এবং কোন দেশ সেই বিশেষ অঞ্চলের জন্য কতটা বল ও অর্থনীতি প্রয়োগ করতে রাজি থাকবে।

চীন ভারত যুদ্ধ লাগলে কোন দেশ কার পক্ষ নেবে

বর্তমানে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট, জাপান,ইসরায়েল, অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক এবং সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। অন্যদিকে রাশিয়ার সাথে চীনের বন্ধুত্ব থাকলেও অতীতে রাশিয়া এবং ভারতের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল।১৯৬২ সালেও রাশিয়া ভারতকে সমর্থন করেছিল এবং বর্তমানে ভারত চীন যুদ্ধ লাগলে রাশিয়া সামরিকভাবে ভারতকে সমর্থন দেবে।

আরও পড়ুন :- মৃত্যুর ৫২ বছর পরও এই ভারতীয় সৈনিকের আত্মা সীমান্তকে রক্ষা করছে

অন্যদিকে চীনের সেরকম আন্তর্জাতিক মিত্র নেই। রাশিয়া চীনের বন্ধুরাষ্ট্র, কিন্তু মনে রাখতে হবে অতীতে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতেরও ঘনিষ্ঠ মৈত্রী ছিল। ১৯৬২ সালে রাশিয়া কিন্তু চীনের বদলে ভারতকেই সমর্থন করেছিল।বর্তমানে চীনের বন্ধু হিসেবে পাকিস্তানই থাকতে পারে।