আর কয়েকদিন পরই বাঙালির সবথেকে বড় উত্সব দুর্গোৎসব (Durga Puja)। বাংলায় যেমন দুর্গাপুজো ঠিক তেমনই বাংলার বাইরে বিশেষত পশ্চিম ভারতে হয় নবরাত্রি (Navaratri)। এবছর নবরাত্রি (Navaratri 2020) শুরু হচ্ছে ১৭ অক্টোবর শনিবার থেকে, চলবে ২৬ অক্টোবর দশমী পর্যন্ত। শরৎ কালে এই উত্সব হয় বলে একে শারদ নবরাত্রিও বলা হয়ে থাকে।
শুক্লপক্ষের প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত ৯ রাত্রি দুর্গার ৯ টি রূপের (Maa Durga 9 Roop) পুজো করা হয়। অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত ৯ রাত্রি ধরে দুর্গার ৯ টি শক্তির পুজো হয় তাকেই নবরাত্রি বলে। শাস্ত্র তে দূর্গার বিভিন্ন রূপের পুজোয় ফিরতে পারে সৌভাগ্য। দূর্গার কোন রূপের পুজোয় কোন ফল মিলতে পারে, তা জেনে নিন।
নবদুর্গার মধ্যে দেবীর প্রথম রূপটি হলো শৈলপুত্রী (Shailputri)। এই রূপের আরাধনা করলে মনোবল বৃদ্ধি পায়। দেবী গিরিরাজের কন্যা বলে এইরূপ নামকরণ। ত্রিশূলধারী মায়ের এই রূপের মায়ের হাতের পদ্ম থাকে।

নবদুর্গার দ্বিতীয় রূপ হল ব্রহ্মচারিণী (Brahmacharini)। দেবী শিবকে বর রূপে পাওয়ার জন্য তপস্যারত অবস্থায় ছিলেন। সেই থেকে এই নামকরণ। এইরূপে মা তপস্বিনী। এই রূপের পুজো করলে মনঃসংযোগের বৃদ্ধি ঘটে।

নবদুর্গার তৃতীয় রূপ চন্দ্রঘণ্টা (Chandraghanta)। দেবীর এই রূপে পুজো করলে সাংসারিক দুঃখ-কষ্ট দূরে চলে যায়। দেবী দেবরাজ ইন্দ্রের প্রদত্ত ঐরাবতের পবিত্র ঘন্টার শব্দে অসুরদের বিনাশ করায় দেবীর এই নাম হয়।

নবদুর্গার চতুর্থ রূপ কুষ্মাণ্ড (Kushmanda)।দেবীর অষ্টভূজা এই রূপের আরাধনা করলে সংসারে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।

নবদুর্গার পঞ্চম রূপ স্কন্দমাতা (Skandamata)। কার্তিক অথবা স্কন্দের জননীরূপেই দেবীর এই নাম। দেবীর এই রূপের পুজো করলে পরিবারে অশান্তি দূরে চলে যায়।

দেবীর কাত্যায়নী (Katyayani) রূপের পুজো করলে শত্রু নাশ হয়। এইরূপে তিনি মহিষাসুর বধ করেছিলেন। মহর্ষি কাতার থেকেই সৃষ্ট হয়েছেন কাত্যায়নি মাতা। মায়ের এই রূপে মাকে গেরুয়া বসনে দেখা যায়। গেরুয়া রং হল সাহসের প্রতীক।

এই অবতারে মা দূর্গা ভয়ঙ্করী। রং তাঁর অন্ধকারের মতো কালো, এলোকাশি চুলে মা এই রূপে নির্ভয়া। ত্রিনয়নী কালরাত্রি মা ভক্তদের শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করেন। দেবীর কালরাত্রী (Kalaratri) রূপের পুজো করলে বিপদ কেটে যায়।

এই রূপে মা দূর্গা ধীর-স্থির, শান্ত। মায়ের এই রূপের পূজা করলে দূর হয়ে যায় ভক্তের মনের সব পাপ। দেবীর মহাগৌরী (Mahagauri) রূপের পুজো করলে বিবাহ সম্পর্কিত সকল বাধা কেটে যায়। দেবীর এইরূপ প্রেম-প্রীতি ইত্যাদি দান করেন।

দেবীর নবম রূপ সিদ্ধিদাত্রী (Siddhidatri)। এই রূপের পুজো করলে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জগতের সকল কামনা বাসনা পূর্ণ হয়। মায়ের এই রূপ হল শান্ত রূপ। চার হাতের সিদ্ধিদাত্রী মাকে পূজো করলে মায়ের আশীর্বাদে ভক্তদের পুণ্য লাভ হয়।শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শে মহাভারতের অর্জুন এই রূপের বন্দনা করেন। দেবীর কৃপায় তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন।
