বাড়িতে বসেই হবে করোনা পরীক্ষা, অনুমতি দিল সরকার, জানুন কিটের দাম

কোনও  ব্যাক্তি নোবেল কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা জানতে হলে হাসপাতালে ছুটতে হবে – এতদিন এই নিয়ম মানা হতো সর্বত্র। কিন্তু কারোর শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ না ঘটলেও হাসপাতালে যাওয়ায় পর সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যেত। কিন্তু এবার এই ভুল আর না। বাড়ি বসেই কিছু ফোঁটা লালারস বা শ্লেষ্মার দ্বারাই বোঝা যাবে ব্যাক্তির শরীরে কোরোনা সংক্রমন ঘটেছে নাকি ব্যাক্তি সামান্য সর্দি জ্বরে আক্রান্ত।

রাজ্যের বাজারে আইসিএমআরের অনুমোদনপ্রাপ্ত এমনই এক টেস্ট কিট আসতে চলেছে যার নাম ‘কোভিড-১৯ অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট’। ইতিমধ্যেই আটটির বেশী দেশীয় সংস্থা তার উৎপাদন ও বিক্রির ছাড়পত্র পেয়েছে। সরকারের নির্ধারিত গুণগত মানের পরীক্ষাও শুরু হয়েছে যাতে পাশ করলেই রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি নিয়ে বাজারে বিক্রি হবে এই কিট।এই কিটের মাধ্যমে উপসর্গ বিহীন বা কম উপসর্গ থাকা রোগীদেরও সনাক্ত করা যাবে।

এই কিটের দায়ভার স্বাস্থ্য দফতরের ওপরেই আছে এবং সেই সূত্রেই জানা যাচ্ছে সবকিছু আশানুরূপ হলে মাস খানেকের মধ্যেই খোলা বাজারে বিক্রি হবে এই টেস্ট কিট।জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই দশ হাজার টেস্ট কিট কিনেছে স্বাস্থ্য দফতর যার গুণগত মান যাচাই করার পর মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ব্যবহারের আগে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। আইসিএমআর এর গাইডলাইন অনুসারে ঠিক হবে কোথায় কত পরিমাণে এই কিট বিক্রি হবে এবং এই কিটের হিসেব ও যাবতীয় তথ্য রাখার জন্য তৈরি হবে মোবাইল অ্যাপলিকেশন।

রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা.অজয় চক্রবর্তী বলেন যে যদি খোলা বাজারে বিক্রির অনুমতি কিছু সংস্থাকে একসাথে দেওয়া হয় তবে বাড়বে প্রতিযোগিতা ফলে একদিকে যেমন দাম কমবে তেমনই অন্যদিকে ঠিক থাকবে গুণগত মান।আরেক আধিকারিকের কথায় এই কিটের গুণগত মানের বিষয় যাতে কোনরকম কম্প্রোমাইজ না করা হয় তাই জন্য এইসবের পাশাপাশি কড়া নজরদারি রাখবে স্বাস্থ্য দফতর।

সাধারণত কোরোনা ভাইরাস পরীক্ষার সঠিক মান ধরা হয় আরটিপিসিআর (RTPCR) পদ্ধতিকে কিন্তু সাধারণ ভাবে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে এই কিটের সাহায্যে পরীক্ষা শুরু হবে রাজ্যে। স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায় এখন বাজারে এলে এই কিটের দাম হবে সাড়ে চারশো টাকা তবে তিনি আশাবাদী যে এই দাম ভবিষ্যতে অনেক কমবে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষার সময় যাতে কোনোভাবে সংক্রমন বা ছড়ায় তবে এই অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের মাধ্যমে সংক্রমন ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম। তার প্রথম কারন যে এর জন্য রোগীকে কোনো হাসপাতালে বা ল্যাবে যেতে হবেনা।তাছাড়া পরীক্ষা করার পর এই কিট নষ্ট করার প্রক্রিয়াটিও যথেষ্ট সহজ।

গুরগাঁওয়ের মানেসরে একটি দক্ষিণ কোরিয়ান ওষুধ তৈরি সংস্থা এই কিট তৈরি করা শুরু করেছে। কিট তৈরি করেছে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সও এমন কিট বানিয়েছে ।এছাড়াও দেশের অনেকগুলি সংস্থা এই কিট বানানোর এবং বিক্রির অনুমতি পেয়েছে।দিল্লির এক সংস্থা যা এই কিট তৈরি করছে সেখানে সদস্য তরফে শিবম কৃষণ জানান আইসিএমআরের গাইডলাইন অনুসারে এই কিট তৈরি করে রাজ্যের কিছু সরকারি হাসপাতাল ও রাজ্যে পাঠানো হবে।

রাজ্যের অনুমতি নিয়ে বিপুল হারে কিট উৎপাদনের কাজ শুরু করা হবে। সেক্ষেত্রে আড়াইশো টাকার মধ্যেই হবে কিটের দাম। এই কিটগুলো আইসিএমআরের গাইডলাইন অনুসারে শুরুতে সব মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হবে বলেই জানা গেছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। তারপর অতি সংক্রমিত এলাকা বা কনটেনমেন্ট জোনে এই কিট ব্যাবহার করা হবে। মনে করা হচ্ছে ব্যাপক ভাবে ব্যাবহার শুরু হলেই তার গুণগত মানের ওপর বিশ্বাস করা যাবে।