ভারত স্বাধীন হওয়ার ৯বছর পর ১৯৫৬ ভারত সরকার নেতাজীর মৃত্যুর চার্জ গঠনের জন্য শাহনেওয়াজ কমিটি গঠন করে ১৯৭০ এও আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল কিন্ত বিভিন্ন প্রশ্নের বেড়াজালে থেমে যায় এই দুই কমিটি। ১৯৯৯ সালে মুখার্জী কমিশন নেতাজীর মৃত্যুর চার্জ নতুন করে শুরু করে তখনই আসল পর্দা ফাস হয়, তাইওয়ান সরকার থেকে জানানো হয় ১৯৪৫ সালে তাইওয়ানে কোনো প্লেন ক্রাশ হয়নি।
৫ বছর পর এক গুমনামী বাবার আবির্ভাব ঘটে। দেখতে হুবহু নেতাজীর মতন, মুখের অবয়ব, বলার ধরণ, চালচলন সবকিছুই ছিলো নেতাজীর মত। সেখানকার সাধারন মানুষের ভাষ্যমতে যখন লোকজন উনাকে নেতাজী বলে সম্বোধন করতেন তখন তিনি উক্ত স্থান ত্যাগ করে নতুন জায়গায় চলে যেতেন।
ফৈজাবাদের রাম ভবনে ১৯৮২ থেকে ৮৫ অবধি জীবনের শেষ কটি বছর কাটিয়েছিলেন গুমনামি বাবা। ১৯৮৫ এর দিকে এই গুমনামী বাবার মৃত্যুর পর নেতাজীর ভাতৃকন্যা পর্যবেক্ষণ করে দেখেন গুমনামী বাবার ঘরে পাওয়া ২৩ টি পেট্রায় নেতাজীর প্রিয় বই, উনার ব্যবহৃত তিনটি ঘড়ি, পারিবারিক ছবি আরো ও অনেক কিছু যা নেতাজী ব্যবহার করতেন।
গুমনামী বাবা ওরফে ভগবানজিকে নিয়ে রহস্য এখনও রয়ে গিয়েছে। তবে যারা মনে করেন গুমনামী বাবা আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুই তাদের ধারণা এবার হয়তো আরও মজবুত হবে। কারণ জেলা কোষাগারে রাখা গুমনামি বাবার জিনিসপত্র থেকে বসু পরিবারের পুরনো ফটোগ্রাফ পাওয়া গিয়েছে।
ভবনের মালিক শক্তি সিং-এর জানিয়েছেন ১৯৮৬ তে রাম ভবনে এসেছিলেন নেতাজির ভাই সুরেশ চন্দ্র বসুর মেয়ে ললিতা বসু। ললিতা দেবী নিজে নাকি চিহ্নিত করেছিলেন ছবির মানুষদের। দুটির ছবির একটিতে আছেন সুভাষ চন্দ্র বসুর বাবা জানকীনাথ বসু এবং মা প্রভাবতী দেবী। অন্য ছবিতে তিন ধাপে সারিবদ্ধ ভাবে আছেন সবাই। একদম উপরের সারিতে বাঁদিক থেকে দাঁড়িয়ে আছেন জানকীনাথ-প্রভাবতীর ছেলেরা‚ সুবীর চন্দ্র বসু‚ সতীশ চন্দ্র বসু‚ শরৎ চন্দ্র বসু‚ সুরেশ চন্দ্র বসু‚ সুনীল চন্দ্র বসু এবং সুভাষ চন্দ্র বসু। মাঝের সারিতে তিন মেয়েকে নিয়ে বসে আছেন সস্ত্রীক জানকীনাথ। শেষের সারিতে তাঁর নাতি নাতনিরা।


আরও পড়ুন ঃ পিঠে গুলি খেয়ে নেতাজিকে বাঁচিয়েছিলেন কর্নেল নিজ়ামুদ্দিন
ছবির পাশাপাশি পাওয়া গেছে বেশ কয়েকটি টেলিগ্রাম। যেগুলো গুমনামি বাবাকে পাঠিয়েছিলেন আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রবীণ নেতারা। দুর্গা পুজো এবং ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে।
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু যার মৃত্যু নিয়ে পর পর তিনটি কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ নেতাজীর মৃত্যুর সত্যিকার প্রমাণ খুঁজে পায়নি। ব্রিটিশ থেকে ভারতবর্ষের মুক্তির জন্য যিনি আমৃত্যু চেষ্টা করেছিলেন তার মৃত্যু রহস্য উৎঘাটনে কেন ভারতবাসী নীরব?