টালির ভাঙা ঘর থেকে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্নে গামছা বিক্রেতার ছেলে অমিয়

পাঁকেই যে পদ্মের জন্ম হয় তা আমরা এতদিন বই পড়ে জেনেছি কিন্তু সত্যিই যে দারিদ্র্যের পাঁকেই পদ্মের জন্ম হয় তা দেখিয়ে দিল অমিয় কর্মকার।আজকের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়ে সেটাই সকলের চোখের সামনে দেখিয়ে দিল কৃতী ও মেধাবী ছাত্র অমিয় ।তার প্রাপ্ত নাম্বার ৬৫০। এবছর  বার্নপুরের মানিকচাঁদ ঠাকুর ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সে।তার বাড়ির অবস্থা বা বাবার পেশার কথা জানতে পারলে আমাদের সকলের আঁতকে যাওয়ার মতো অবস্থা হবে।

বাবা  নিমাই কর্মকার একজন সামান্য হকার।স্পষ্ট বলতে গেলে সামান্য গামছা বিক্রি করেন ঘুরে ঘুরে।অর্থাৎ সারাদিনে গামছা বিক্রি করে আয় হয় ৫০টাকা বা ৭০ টাকার মতো।এক কথায় বলতে গেলে নুন ভাত খেয়ে বড়ো হয়ে ওঠা।একদম প্রান্তিক পরিবার । তবে আজকের সাফল্যে বাবার হতাশা ও পরিবারের আর্থিক অনটন সকলকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন : পেশায় কুলি, রেলের ফ্রী ওয়াইফাই ব্যবহার করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল

Representational image

বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল এলাকা বার্নপুরের  তেঁতুলতলা নামক জায়গায়। একটা ভাঙা টালির বাড়িতেই বড়ো হয়ে ওঠা। নিজের পড়ার  জন্য যে আলাদা কোন ঘর পেয়েছে তা নয় ।কোন মতন মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল ওই ভাঙা টালির বাড়ি। আর সেখান থেকেই বিরাট কিছু করার স্বপ্নে মশগুল সে।আর হবেই না কেন।বরাবরের কৃতী ছাত্র সে।আজ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের পর সে নিজেকে সবার সামনে প্রকাশিত করতে পেরেছে।

আরও পড়ুন : মাধ্যমিকে দশম টিকিট বিক্রেতার ছেলে শুভম রায়

তাকে তার সাফল্যের কথা জিজ্ঞেস করা হলে অমিয় জানাই যে,”সে বরাবরই তার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছেই তার সমস্যা তুলে ধরত, এবং তারা তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করত।তাদের অক্লান্ত সাহায্য ছাড়া তার এই সাফল্য আসত না বলেই অমিয় জানাই।এছাড়া সে বরাবর বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করত, কারণ তার আলাদা করে গৃহশিক্ষক ছিল না।তবে তার এই সাফল্যের জন্য তার পরিবারকে নিয়ে আনন্দ করতে চাই সে।”তার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্বন্ধে জানতে সে জানাই যে সে ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হতে চাই।কিন্তু বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য যে আর্থিক সচ্ছলতা চাই তা যে তার পরিবারের কাছে নেই তা এক কথায় স্বীকার করে নিল তার পরিবারের সদস্যরা।এখন যদি সরকার বা কোন সহৃদয় ব্যক্তি যদি তাকে ভবিষ্যৎ পড়াশোনায় সাহায্য করে তবেই সে তার স্বপ্নে সফল হবে।