শুধু পড়াশোনাতেই নিজেকে আটকে রাখার দিন শেষ। ছাত্রজীবন থেকে রোজগার শুরু করলে পরিবারকে যেমন সাহায্য করা যায় তেমনই নিজের প্রয়োজনে কিংবা পড়াশোনায় টাকার দরকার হলে সহজেই খরচ করা যায়। সবথেকে বড় কথা, অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না। ছাত্রাবস্থায় ঘরে বসেই কীভাবে আয় করা সম্ভব সেটাই আমরা দেখে নেব এখানে।
১) ফ্রিলান্সিং
ইদানীং উপার্জনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফ্রিলান্সিং। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করাকেই ফ্রিলান্সিং বলে। যারা ফ্রিলান্সিং করেন তাঁদের বলা হয় ‘ফ্রিলান্সার’। মুক্তমনা মানুষদের আয়ের সবচেয়ে সুবিধাজনক পন্থা। আধুনিক যুগে বেশীরভাগ ফ্রিলান্সিং কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে হয়। তাই বাড়িতে থেকেও পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিলান্সিং কাজ করে পড়ুয়ারা আয় করতে পারে সহজে। ইন্টারনেটভিত্তিক হওয়ায় দেশি-বিদেশি হাজারো ক্লায়েন্টের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ থাকে।
কাজের ধরণ
ফ্রিলান্সিংয়ে কাজের প্রিধি অনেক বেশী। চাহিদাও বাড়ছে। কয়েকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হল –
লেখালেখি ও অনুবাদঃ নিবন্ধ, ওয়েবসাইট কন্টেন্ট, সংবাদ এবং ভাষান্তরকরনের কাজ।
সাংবাদিকতাঃ দেশ-বিদেশের খবর সম্পর্কে আগ্রহ থাকলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখা যাতে পারে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ লোগো, ওয়েবসাইট ব্যানার, ছবি সম্পাদনা, অ্যানিমেশন তৈরি।
ওয়েব ডেভলপমেন্টঃ ওয়েবসাইট তৈরি, ওয়েবভিত্তিক সফ্টওয়্যার তৈরি, হোস্টিং ইত্যাদি কাজ।
কম্পিউটার প্রোগ্রামিং: ডেস্কটপ প্রোগ্রামিং থেকে ওয়েব প্রোগ্রামিং সবই এর আওতায়।
ইন্টারনেট মার্কেটিং: ইন্টারনেটভিত্তিক বাজারজাতকরণ কার্যক্রম, যেমন ব্লগ, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে বিপণন।
গ্রাহক সেবাঃ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির গ্রাহককে টেলিফোন, ইমেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে তথ্য প্রদান।
প্রশাসনিক সহায়তাঃ বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন কাজের ডাটা এন্ট্রি করা, ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করা।
তবে ফ্রিলান্সিং পেশায় উন্নতির জন্য কাজের দক্ষতা এবং নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন।
২) টিউশনি
ছাত্র অবস্থায় টাকা আয় করার সবচেয়ে ভাল উপায় টিউশন করানো। অন্যান্য কাজগুলোর চেয়ে ছাত্রদের জন্য এই কাজটি পাওয়া সহজ। এতে সময় নষ্ট হবে কম আর পড়াশুনার চর্চাও থাকবে। টিউশন পাওয়ার জন্য এলাকার পরিচিত মানুষের কিংবা কলেজ বা ইউনিভার্সিটির ভাই-বোন বা বন্ধুদের সাহায্য নেওয়া যায়।
বিভিন্ন অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টার অথবা অ্যাকাডেমিক কোচিংগুলোতে ক্লাস নিয়েও ভালো রোজগার সম্ভব।
৩) বাইক ম্যাসেঞ্জারিং
অনেকেই শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কোনও জিনিস পাঠানোর থাকে। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠালে সেটি সময়সাপেক্ষ এবং ব্যায়বহুলও। তাই যেসব ছাত্রদের বাইক আছে তারা কুরিয়ারের কাজ করে পয়সা উপার্জন করতে পারেন। প্রতি ডেলিভারিতে সর্বনিম্ন ৬০টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আয়ের সুযোগ আছে।
৪) রাইড শেয়ারিং
এটাও যাদের বাইক আছে সেই ছাত্রদের জন্য। নিজের ব্যাক্তিগত মোটরসাইকেলে একজন যাত্রীকে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দিনে ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা আয় সম্ভব।
৫) রেস্টুরেন্টে পার্ট-টাইম
শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন শোরুম এবং রেস্টুরেন্টগুলোতে পার্টটাইম চাকরি খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি একবেলা রেস্টুরেন্টে বা শোরুমে কাজ করে উপার্জন করা যায়।
৬) কলসেন্টার
ভয়েস কলের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত পরিষেবা দেওয়ায় এই কাজের লক্ষ্য। ছাত্ররা তাদের সুবিধা মতো শিফটে এই কাজ করা যায়। সবচেয়ে সুবিধা হল এই কাজের কোনও ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। নিজের ইচ্ছামতন অবসর সময়েও এই কাজ করা যায়।
আমাদের প্রতিটি পোস্ট WhatsApp– এ সুনিশ্চিত করতে ⇒ এখানে ক্লিক করুন